সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়েই গড়ে উঠেছে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী। কিন্তু দেশের বেসরকারি শিক্ষকেরা দীর্ঘ দিন ধরে বৈষম্যের শিকার। অথচ তাদের মানসম্মত পাঠদানের পরিবেশ এবং সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে দেশের শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মনে করেন দেশের শিক্ষাবিদরা।
বেসরকারি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন যাবত বদলি ব্যবস্থা চালুর জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছেন যার ফলশ্রুতিতে সরকার ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সম্পূর্ণ অনলাইন সফট্ওয়ারে বদলি ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু জানুয়ারি পেরিয়ে গেলেও আজও বদলি ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় শিক্ষকরা হতাশ।১৯৯৫ থেকে এমপিও নীতিমালা ২০০৫, ২০১০ ও ২০১৮-এর বিভিন্ন অনুচ্ছেদ ও ধারায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলিব্যবস্থার নির্দেশনা থাকলেও আজ পর্যন্ত বদলিব্যবস্থা বাস্তবায়ন না হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষকসমাজ আরও বেশি হতাশায় ভুগছেন মহামারি করোনাভাইরাসএর এ সময়ে প্রত্যেক শিক্ষক মহামারী করোনাভাইরাস এর কারণে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে নিজ গ্রামে অবস্থান করার কারণে সেখান থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানে এসে উপস্থিত হওয়া খুবই কষ্টকর।
তাছাড়াও সপ্তাহে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে তাদের যাতায়াত খরচ যদি তাদেরকে নিজ নিজ এলাকায় বদলি করা হত তাহলে এ কষ্ট হতে তারা মুক্তি পেত। ফলে তারা সুন্দরভাবে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার সুযোগ পেত।এ ছাড়াও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলিব্যবস্থা চালু হলে তাদের প্রাইভেট, কোচিং, গাইড ও নোটবাণিজ্য অনেকাংশে কমে আসবে বলে আশা করা যায়।এবং এর ফলে তাদের যাতায়াত খরচ এবং বাসা ভাড়া বেঁচে যাবে যা তাদের অনেক বড় একটা সমস্যা দূর হবে কারণ
বেতনের অর্ধেক টাকা ঘর ভাড়ায় চলে যায়।এছাড়াও এম পিও ভুক্ত শিক্ষক যারা দূর-দূরান্তে চাকরি করেন, তাদেরকে প্রায়ই দুইটি পরিবার চালাতে হয়। তাদের বেতনের অর্ধেক টাকা ঘর ভাড়ায় চলে যায়। বাকি টাকা দিয়ে মা বাবা, স্ত্রী – সন্তান, ছোট ভাই বোন নিয়ে পরিবার চালাতে তাদেরকে হিমসিম খেতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সম্ভবত ওয়াকিবহাল নয় যে, এম পিও ভুক্ত শিক্ষকদের মাত্র ১০০০টাকা বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়। যা বর্তমান বিশ্বে বিরল ঘটনা।
যাই হোক, এম পিও ভুক্ত শিক্ষকদের বদলি না থাকায় তারা সব সময় মানসিক হীনমন্যতায় ভোগেন। একটা উদাহার দেওয়া যায় পরিবার থাকেন পটুয়াখালী, নিজে থাকেন চট্টগ্রামের বাশঁখালী। এই রকম হাযার শিক্ষক অসহায় অবস্থায়।
শিক্ষা ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনয়ন করতে এম পিও ভুক্ত শিক্ষকদের বদলি বাস্তবায়ন খুবই প্রয়োজন। বদলি বাস্তবায়ন করতে সরকারের কোন টাকা খরচ হবে না। প্রতি বছর প্রথমে শুন্য পদে বদলি বাস্তবায়ন করে পরে নতুন নিয়োগ দেওয়া হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হবে।
মাদ্রাসার জেনারেল টিচারদের অবস্থা আরও করুণ। তাদের প্রশাসনিক পদে আসার সুযোগ নেই। একই পদে চাকরি করে অবসর গ্রহণ করতে হয়, যা নিতান্তই দুখ জনক। জৈষ্ঠতার ভিত্তিতে মাদ্রাসার জেনারেল টিচারদের স্কুল কলেজ এ বদলির ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে, শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাজমান বৈষম্য দূর হবে।
শিক্ষকদের মাঝে আর্থিক, সামাজিক, মানসিক বৈষম্য বিদ্যমান থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনয়ন অসম্ভব।
বিষয়টি আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নিকট অধীর প্রত্যাশায় তাকিয়ে আছেন বদলি প্রত্যাশী অসহায় শিক্ষক সমাজ।!এবং এ বদলির ফলে তাদের সন্তান, বাবা-মায়ের সান্নিধ্য এবং বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মায়ের সন্তানের সান্নিধ্য পাওয়ার পথ সুগম হবে।
Leave a Reply