শিরোনাম :
ধামইরহাটে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি আন্তঃজেলা ফুটবল ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে কেয়ার এন্ড সাইন ফাউন্ডেশন জয়পুরহাটে আলুর বীজ সংকটে দিশেহারা কৃষক গাজীপুরের শীপুরে সুলভ মূল্যে ডিম বিক্র শাহজাদপুরে ছিনতাইকৃত অটো বাইক উদ্ধার; অটো বাইক ছিনতাই চক্রের মূল হোতাসহ ৬ আটক ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশন সাথে স্থলবন্দরের বিভিন্ন সংগঠনের মতবিনিময় জনগণের জীবনযাত্রাকে কিছুটা সহজ করতে চাই’ আমতলীতে বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলাচনা সভা রংপুর অঞ্চলে বইতে শুরু করেছে শীতের আমেজ শাহজাদপুরে মহাসড়কে সিএনজি স্ট্যান্ড, বাস গ্যারেজ ও দোকানপাট উচ্ছেদ ব্যবস্থা নিলেন প্রশাসন

কলেজ শিক্ষক জসিম সিন্ডিকেটের অবৈধ ঔষধ ও চোরাই মোবাইলের রমরমা বাণিজ্য !!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩৯ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। কিন্তু আইডিয়াল কমার্স কলেজের শিক্ষক জসীম উদ্দীন এই মহান পেশার সুবিধা কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন অবৈধ ঔষধ ও চোরাই মোবাইলের বাণিজ্য।

এজাতীয় মুখোশধারী কালোবাজারিদের কারণে রাষ্ট্র হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। তার এই অবৈধ ঔষধ ব্যবসা ও মোবাইল বাণিজ্যের বিষয়ে অনুসন্ধান করে হাতেনাতে প্রমাণ পেলে সাংবাদিকদের ম্যানেজ না করতে পেরে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়ার হুমকি দেয় শিক্ষক জসিম ও তাঁর সিন্ডিকেটের অন্যরা। পরবর্তীেতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদা নেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ দেন ডিএমপির দারুসসালাম থানায়।

বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসনের মতে, বাংলাদেশে ভারতের যেকোনো ঔষধ অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হয়।এর বাইরে কোন রকমের ঔষধ বা পন্যসামগ্রী আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়মে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্সের মাধ্যমে তা করা হয়। এক্ষেত্রে দেশসমুহ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে থাকে।

অথচ এই জসীমউদ্দীন সিন্ডিকেটের মত কিছু অসাধু লোক সিন্ডিকেট তৈরি করে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও চীন থেকে কোটি কোটি টাকার আমদানি নিষিদ্ধ ঔষধ অবৈধ উপায় অবলম্বন করে নিয়ে আসেন দেশে। এছাড়া ভারত ও বাংলাদেশে জসিমের রয়েছে আলাদা আলাদা মোবাইল চোরের সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ইসহাক। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ উন্নত থাকার কারণে চোরাইকৃত মোবাইল আইএমই ট্রাকিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই চোরেরা ধরা পড়ে যায়। প্রশাসনের হাত থেকে বাঁচার কৌশল হিসবে জসিম ও ইসহাকের ওইসব চোর সিন্ডিকেট বাংলাদেশি মোবাইল চোরেরা যত মোবাইল চুরি করে সেগুলো ভারতে পাচার করে এবং ভারতে চুরি হওয়া মোবাইলগুলো নিয়ে আসে বাংলাদেশে। জসিম- ইসহাকের এসব অপকর্মের বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বেশকিছুদিন আগে থেকেই তথ্য ছিলো। তবে হাতে-নাতে প্রমাণের অভাবে সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন কলেজ শিক্ষক জসিমউদ্দিন সিন্ডিকেট। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে, গত ৩০শে সেপ্টেম্বর আনুমানিক সময় বিকেল চার ঘটিকায় জসিম সিন্ডিকেটের মিরপুর ১ নম্বর তৌহিদ ফাউন্ডেশন সংলগ্ন একটি ভবনের তৃতীয় তলায় তার মিরপুরস্থ অফিসের ঠিকানায় গিয়ে দেখা যায়, একাডেমি টুয়েন্টি 6 নামে একটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। সেই কোচিং সেন্টারের ভিতরে গ্লাস দিয়ে ডেকোরেশন করা রুমে জসিম-ইসহাক সহ চারজন ব্যক্তির দেখা পাওয়া যায়। এছাড়া, পুরো কোচিং সেন্টারটি ফাঁকা ছিলো। সাংবাদিকরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে,প্রথমে অবৈধ ব্যবসার মূল হোতা জসিমউদ্দিনের কাছে জানতে চায়, এখানে কি কি করা হয়? জবাবে জসিমউদ্দিন বলেন, এটা একটি কোচিং সেন্টার, আমরা এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট কোচিং করাই। তাছাড়া আমি আইডিয়াল কমার্স কলেজের শিক্ষক। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চায় আমাদের কাছে একটি তথ্য আছে, আপনি কোচিং সেন্টার পরিচালনার আড়ালে এখানে ভারত থেকে অবৈধ ঔষধ ও চোরাইকৃত মোবাইল ফোন বিভিন্ন কৌশলে এনে এখান থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বেচাকেনা করেন এ বিষয়ে কি বলবেন? জবাবে জসিম বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা ক্যামেরা অন করে তার রুমে প্রবেশ করে,অন্যান্য তিনজন ব্যক্তির সাথে থাকা ব্যাগগুলো খুলতে বলেন এবং তার ওই রুমে রাখা বিভিন্ন কার্টুনগুলো খুলতে বললে তিনি বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। ক্যামেরা চালু থাকার কারণে ইসহাক তিনি এক পর্যায়ে ব্যাগগুলো এবং কার্টুনগুলো খুলে দেখান। ব্যাগ এবং কার্টুনগুলো খোলার পর থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ে। ভারত থেকে আনা অসংখ্য মোবাইল ফোন এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ ঔষধ দেখা যায়। ধাপে ধাপে সবইকিছুই সাংবাদিকদের খুলে দেখান জসীমউদ্দীন ও ইসহাক। চোখের সামনে সব কিছুই ছিল আয়নার মতো পরিষ্কার। তবে এত কিছুর পরেও জসিম ও ইসহাকের কথাবার্তায় ছিল অদৃশ্য ক্ষমতার দম্ভ। এক পর্যায়ে তারা দাবি করেন এগুলো সবই বৈধ। তার এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের লাইসেন্স আছে। সেটা আপনারা চাইলে দেখতে পারেন কিন্তু এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই। এই মুহূর্তে আমি দেখাতে পারব না। এছাড়াও এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য নানান কৌশলে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার অপচেষ্টা চালান জসিম সিন্ডিকেট। ঔষধ ও মোবাইল ফোন গুলোর বৈধতা যাচাইয়ের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে ৯৯৯ এ একাধিকবার ফোন করেও লাইন বিজি থাকার কারণে,পরের দিন এক্সপোর্ট ও ইমপোর্টের লাইসেন্স দেখানোর শর্তে সেখান থেকে বিদায় নেয় সাংবাদিকরা। পরের দিন অর্থাৎ পহেলা অক্টোবর জসিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে ৩৬০ ডিগ্রি মোড় নেয় জসিমউদ্দিনের কথাবার্তা, তিনি বলেন, কিসের লাইসেন্স দেখাবো আপনাকে? লাইসেন্স দেখার আপনি কে? এগুলো নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে অথবা নিউজ প্রকাশ করলে আপনাদের নামে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করেন জসিম। এছাড়াও আরো একজন সাংবাদিক পরিচয়ে জসিমের পক্ষ হয়ে সংবাদ পরিবেশন না করাসহ অর্থনৈতিক কিছু বিষয়ে অভিযোগ দিয়ে প্রতিবেদককে হুমকি প্রদান করে।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে আরো খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, জসিম এই ভবনে কয়েক বছর আগে থেকেই জসিম আইটি নামে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার চালাতেন। তবে সে ব্যবসায় খুব একটা ভালো করতে পারেনি জসিম। পরবর্তীতে তিনি কিছু অংশ সাব-ভাড়াটিয়া হিসাবে একাডেমি টুয়েন্টি 6 নামে একটি কোচিং সেন্টারকে ভাড়া দেন। কোচিং সেন্টারের মালিক এম মনিরের কাছে জসিমের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জসিম আইডিয়াল কমার্স কলেজের শিক্ষক। তিনি আগে থেকে এখানে জসিম আইটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার নামে ব্যবসা পরিচালনা করতেন। এখন আমরা একটা অংশ ভাড়া নিয়ে একাডেমি টুয়েন্টি 6 নামে কোচিং সেন্টার চালাই। অবৈধ ঔষধ ও চোরাইকৃত মোবাইল ফোনের ব্যবসার কথা জানতে চাইলে তিনি আরো জানায়, এসব বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। কারণ জসিম আলাদা ওই গ্লাস দিয়ে ডেকোরেশন করা রুমে বসেন। এটা তার ব্যক্তিগত অফিস রুম। এবং এই পুরো ফ্লোর জসিম সাহেবেরই ভাড়া নেয়া, তার নামেই চুক্তি। আমরা শুধু আলাদা এই পাশে ছাত্র চ-ছাত্রীদের কোচিং করাই। তবে যতটুকু জানি ঔষধ ব্যবসার সাথে তিনি জড়িত আছেন । তবে সেটা বৈধ কি অবৈধ এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। আর এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না।
পরবর্তীতে ওই ভবনের তৃতীয় তলার মালিক আঞ্জুমানারা বেগমের সাথে যোগাযোগ করে জসিমের এসব অবৈধ ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি জসিম সাহেবকে ভাড়া দিয়েছি, এখানে আগে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার চালাতো। এখন কোচিং সেন্টার চালায়,এতটুকুই জানি। তবে আপনাদের কাছ থেকে যা শুনলাম এটা আসলেই দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে অবগত নই। আমি আগামীকালকেই তাকে আমার এখান থেকে চলে যেতে বলব, প্রয়োজনে আমি তালা ঝুলিয়ে দিবো।

এ বিষয়ে আইডিয়াল কমার্স কলেজের প্রিন্সিপাল শাহনাজ ম্যাডামের কাছে জসিম সাহেবের শিক্ষকতা পেশার বাইরে অন্য কোন পেশার সাথে যুক্ত আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, জসীমউদ্দীন আমাদের শিক্ষক। তবে তিনি কিছু ব্যবসার সাথে জড়িত, সেগুলো কি তা আমার জানা নাই।
দেশব্যাপী এই সিন্ডিকেটের বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com