শিরোনাম :
মনপুরায় জেলেকে নৌকার দাদন টাকা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৩ মনপুরায় জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে গরু ঘরে অগ্নিসংযোগ, আতঙ্কে স্থানীয়রা বর্তমান সংকটের সমাধান নবীজির শিক্ষা সম্পাদকীয় আজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিনটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্র, অনন্য ও শিক্ষণীয়। এ দিনে জন্ম নেন বিশ্বমানবতার আলোকবর্তিকা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একই দিনে তিনি পৃথিবী ত্যাগ করেন। নবীজির আগমন ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের সূচনা। তাঁর জীবন ও শিক্ষা আজও যুগে যুগে প্রাসঙ্গিক বিশেষ করে আমাদের বর্তমান সময়ে।বাংলাদেশ আজ গভীর অন্ধকারে নিঃশ্বাস ফেলছে। চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভাজন, হানাহানি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর নৈতিক অবক্ষয়। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের মৌলিক নিরাপত্তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। দোকানের তাক থেকে চাল, ডাল, তেল—প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষক ফসল বিক্রি করতে পারছেন না, শ্রমিক ঘাম ঝরিয়েও ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। তরুণ প্রজন্ম কাজের অভাবে হতাশ, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসাত্মক সংকটের মুখোমুখি। এর সঙ্গে জুড়ে গেছে মাদক, অপরাধ ও সহিংসতার প্রলয়।এই সংকটে আমরা ভুলে যাই সেই আলোর পথে, যিনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে মুক্ত করেছিলেন—রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি এসেছিলেন এমন এক সমাজে, যেখানে গোত্রবিভাজন, মিথ্যা, নারীর অবমাননা, দারিদ্র্য, নিপীড়ন ও সহিংসতা ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। তিনি আমাদের দেখিয়েছিলেন সত্য, ন্যায়, দয়া ও মানবতার পথ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মানুষের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে অন্যের জন্য সবচেয়ে বেশি কল্যাণ বয়ে আনে।” আজকের বাংলাদেশে যদি আমরা তাঁর এই শিক্ষার অনুসরণ করি, তবে সমাজে স্বার্থপরতা, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব।সাংবাদিকরা যখন সত্য প্রকাশের জন্য নির্যাতনের মুখোমুখি হন, তখন নবীজির শিক্ষা আমাদের শেখায়—সত্যের পথে থাকা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী হওয়া। তিনি বলেছেন, “সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হলো অন্যায় শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।” সাংবাদিকরা দেশের ন্যায়বিচার রক্ষায় যে ভূমিকা রাখেন, তা নবীজির দৃষ্টিকোণ থেকে সত্যিই মহৎ।রাজনীতিতেও আমাদের শিক্ষা প্রয়োজন। ক্ষমতার জন্য লড়াই, প্রতিশোধ, হিংসা—এগুলো জাতিকে ক্ষয় করছে। অথচ নবীজি মক্কা বিজয়ের দিন শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন। আজকের নেতারা যদি তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতেন, সংলাপ ও ক্ষমাশীলতার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেত।অর্থনীতি এবং শ্রমিক অধিকারেও নবীজির শিক্ষা অসাধারণ। তিনি বলেছেন, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি প্রদান করো।” শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা, কৃষকের ফসলের সঠিক দাম, প্রবাসীর রেমিট্যান্সের মর্যাদা—এসবই নবীজির শিক্ষার বাস্তবায়ন।নবীজির জীবন থেকে আমরা আরও শিখি মানবিক সহমর্মিতা। তিনি শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন, দুর্বলকে রক্ষা করেছিলেন। অথচ আমাদের সমাজে হিংসা, ঘৃণা, বৈষম্য বেড়েছে। দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি বাড়ানো, ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা—এসবই নবীজির শিক্ষা অনুযায়ী। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া মানেই শুধু ধর্মীয় আচার পালন নয়; বরং তা সামাজিক ন্যায়বিচার, রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান। বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতার যুগে এ শিক্ষা গ্রহণই পারে আমাদেরকে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে। আজ, ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এই দিনটি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং আত্মসমালোচনার দিন। যদি আমরা তাঁর জীবন ও শিক্ষাকে না বুঝি, তবে দুর্নীতি, সহিংসতা ও বৈষম্যের অন্ধকার থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি আমরা সত্যিই তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করি—রাজনৈতিক নেতৃত্ব, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সাধারণ মানুষের জীবন সবক্ষেত্রে—তাহলে বাংলাদেশ হতে পারে শান্তি, ন্যায় ও সমৃদ্ধির দেশ। ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের কেবল ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, বরং আত্মসমালোচনা ও কর্মপ্রেরণার দিন। নবীজির (সা.) শিক্ষা বাস্তবায়ন করলেই— রাজনৈতিক সংকট কাটবে ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্বের মাধ্যমে, সামাজিক অবক্ষয় রোধ হবে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস পাবে সুষম বণ্টন ও জাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে সহনশীলতা ও মানবপ্রেমের মাধ্যমে। আজকের আহ্বান: রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে—সংকটমুক্ত জাতি গড়ার একমাত্র পথ তাঁর জীবন ও শিক্ষার অনুসরণ। আমাদের প্রত্যেকের উচিত— রাজনৈতিক নেতা হোক ক্ষমাশীল ও ন্যায়পরায়ণ, অর্থনীতির নিয়ম হোক ন্যায্য ও বৈষম্যমুক্ত, সাংবাদিক হোক সাহসী ও সত্যনিষ্ঠ, সাধারণ মানুষ হোক সততা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা—এটাই হতে পারে আমাদের দেশের অন্ধকার থেকে মুক্তির একমাত্র আলো। আমরা বিশ্বাস করি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর শিক্ষা আজকের পৃথিবীতে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত বিশ্ব, বিভক্ত মুসলিম উম্মাহ, দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ ও অস্থির তরুণ প্রজন্ম—সব সমস্যার সমাধান রয়েছে নবীজির দেখানো পথে। তাই আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও বিশ্ব রাজনীতি পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা বাস্তবায়ন করা। কেবল তখনই মানবতা সত্যিকারের মুক্তি পাবে।আজকের পৃথিবী যেন নানা সংকটে ঘেরা—যুদ্ধ, দুর্নীতি, বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবেশ বিপর্যয়, নৈতিক অবক্ষয়—এসব আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে। মুসলিম বিশ্বও এ সংকট থেকে মুক্ত নয়। অথচ আমাদের সামনে রয়েছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত—রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা। রাসূলুল্লাহ (সা.) এমন এক যুগে আগমন করেছিলেন, যখন আরব সমাজ ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। গোত্রবাদ, অবিচার, নারী নিপীড়ন, মিথ্যা প্রতিযোগিতা আর সহিংসতায় জর্জরিত ছিল গোটা সমাজ। ঠিক সেখানেই তিনি ন্যায়, সাম্য, দয়া, ভ্রাতৃত্ব আর মানবতার আলো জ্বালিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার আচার-আচরণে উত্তম।” আজকের সমাজে এই বাণীই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। বর্তমান সংকটে আমরা দেখি—ক্ষমত জাতীয়করণের দাবিতে রাজশাহীতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের সমাবেশ খুলনায় সাংবাদিক বুলুর রহস্যজনক মৃত্যুর অধিকতর তদন্তের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন সংবাদদাতা মোঃ রুবেল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউজ ক্লাব ও বাংলাদেশ ভূমিহীন গৃহহীন হাউজিং লিঃ উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রাঈবালীতা সাগরে ভাসতে থাকা অজ্ঞাত ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার উলিপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে সফল ওসি জিল্লুর রহমান। যশোরে সিআইডির ওপর হামলা গ্রেফতার ২, প্রধান আসামি তুষার এখনো পলাতক

কে এই হেলেনা জাহাঙ্গীর???

আবুল কাশেম সংবাদকর্মী ......
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১
  • ৮১১ বার পঠিত

তার অনেক পরিচয়, নানা বিশেষণে বিশেষায়িত!! কখনো ব্যবসায়ী, কখনো মানবতাবাদী!!
কখনো উপস্থাপিকা, আবার কখনো ইউটিউবে নানা বিষয়ের বিশ্লেষক-সমালোচক!!
তিনি আর কেউ নন হেলেনা জাহাঙ্গীর!!
কয়েক বছর আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে মনোনয়ন চেয়ে এবং ‘সিস্টার হেলেন’ নামে রাজধানী জুড়ে পোস্টার সাঁটিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। তখন আলোচনা উঠেছিল- কে এই নারী, যে কিনা বাঘা-বাঘা রাজনীতিবিদদের টেক্কা দিয়ে মেয়র হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন! মাদার তেরেসা হওয়ার ব্রত নিয়ে মাঠে নেমেছেন!!
বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে তার বাসায় আটককৃত অবস্থায় হেলেনা জাহাঙ্গীর!!

সে সময় জানা গিয়েছিল তিনি একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি এই ব্যবসার সাথে জড়িত স্বামীর সুবাদে। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের পরিচালক হয়েছেন। জয়যাত্রা নামে একটি আইপিটিভি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আইপিটিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদ অলংকৃত করেছেন। যদিও দেশে এই সংগঠনের সরকারি অনুমোদন নেই। আছে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন,যার মাধ্যমে নানা সামাজিক কাজ-কর্ম করেন তিনি। গরীব অসহায়দের পাশে দাঁড়ান, বিতরণ করেন শীতবস্ত্র!!

তিনি রাজনীতিতে যোগ দেয়ার কিছু দিনের মাথায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্যও মনোনিত হন। কুমিল্লা উত্তরের আওয়ামী লীগের উপদেষ্টার পদও পান তিনি।
নতুন সংগঠন চাকরিজীবী লীগ বানাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের পদ হারালেন হেলেনা জাহাঙ্গীর!!

সেই যে সিস্টার হেলেন পোস্টার সাঁটিয়ে তিনি আলোচনার জন্ম দিয়েছেন, তারপর আর থামেননি। রাজনীতিবিদ সেলিব্রিটি, উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তি সবার সাথে সেলফি তুলে সব সময় আলোচনায় থাকতে চেয়েছেন তিনি। ইফতার মাহফিলে গান গেয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। মাহফুজুর রহমানের সাথে গান গেয়ে ঝড় তুলেছেন। পরী মনিকে নিয়ে লাইভ করে আলোচনায় থেকেছেন!!

সম্প্রতি আবারও তিনি আলোচনায়। আলোচনার নাম চাকরীজীবী লীগ। তার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি তিনি। অথচ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে এ ধরনের কোনো সংগঠন নেই। শুধু তাই নয়, ফেসবুকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নেতা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তিনি রীতিমত বিস্মিত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের। থেমে থাকেননি আওয়ামী লীগও। হেলেনাকে বাদ দিয়েছে এ ঘটনা দলের নেতাদের চোখে পড়ার পরই!!
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর!!

জাতীয়পার্টিির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত এরশাদ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালদা জিয়ার সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরৈর ছবি আছে। তা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। ছবি আছে আলোচিত প্রতারক সাহেদের সঙ্গেও। প্রভাবশালী এমন কেউ নেই যার সঙ্গে হেলেনার ছবি নেই!!

অনেকেই বলছেন, হাওয়া ভবন থেকেই তার ব্যবসায়ী হিসেবে উত্থান। শীর্ষ নারী উদ্যোক্তার পুরস্কারও পেয়েছিলেন। তারপর রাতারাতি ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েন। সেই আওয়ীমী লীগও তাকে পরিত্যাগ করলো!!
আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার আগে খালেদা জিয়া, এরশাদের সঙ্গে তার তোলা সেলফিও ভাইরাল হয়!!

বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব তার বাসায় অভিযান চালায়। এর পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়। র‌্যাবের দাবি, অভিযানে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় বিপুল পরিমাণ মদ, ইয়াবা আর হরিনের চামড়া পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এরই মধ্যে তাকে নেওয়া হয়েছে র‌্যাবের হেডকোয়ার্টারে!!

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

বর্তমান সংকটের সমাধান নবীজির শিক্ষা সম্পাদকীয় আজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিনটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্র, অনন্য ও শিক্ষণীয়। এ দিনে জন্ম নেন বিশ্বমানবতার আলোকবর্তিকা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একই দিনে তিনি পৃথিবী ত্যাগ করেন। নবীজির আগমন ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের সূচনা। তাঁর জীবন ও শিক্ষা আজও যুগে যুগে প্রাসঙ্গিক বিশেষ করে আমাদের বর্তমান সময়ে।বাংলাদেশ আজ গভীর অন্ধকারে নিঃশ্বাস ফেলছে। চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভাজন, হানাহানি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর নৈতিক অবক্ষয়। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের মৌলিক নিরাপত্তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। দোকানের তাক থেকে চাল, ডাল, তেল—প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষক ফসল বিক্রি করতে পারছেন না, শ্রমিক ঘাম ঝরিয়েও ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। তরুণ প্রজন্ম কাজের অভাবে হতাশ, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসাত্মক সংকটের মুখোমুখি। এর সঙ্গে জুড়ে গেছে মাদক, অপরাধ ও সহিংসতার প্রলয়।এই সংকটে আমরা ভুলে যাই সেই আলোর পথে, যিনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে মুক্ত করেছিলেন—রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি এসেছিলেন এমন এক সমাজে, যেখানে গোত্রবিভাজন, মিথ্যা, নারীর অবমাননা, দারিদ্র্য, নিপীড়ন ও সহিংসতা ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। তিনি আমাদের দেখিয়েছিলেন সত্য, ন্যায়, দয়া ও মানবতার পথ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মানুষের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে অন্যের জন্য সবচেয়ে বেশি কল্যাণ বয়ে আনে।” আজকের বাংলাদেশে যদি আমরা তাঁর এই শিক্ষার অনুসরণ করি, তবে সমাজে স্বার্থপরতা, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব।সাংবাদিকরা যখন সত্য প্রকাশের জন্য নির্যাতনের মুখোমুখি হন, তখন নবীজির শিক্ষা আমাদের শেখায়—সত্যের পথে থাকা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী হওয়া। তিনি বলেছেন, “সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হলো অন্যায় শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।” সাংবাদিকরা দেশের ন্যায়বিচার রক্ষায় যে ভূমিকা রাখেন, তা নবীজির দৃষ্টিকোণ থেকে সত্যিই মহৎ।রাজনীতিতেও আমাদের শিক্ষা প্রয়োজন। ক্ষমতার জন্য লড়াই, প্রতিশোধ, হিংসা—এগুলো জাতিকে ক্ষয় করছে। অথচ নবীজি মক্কা বিজয়ের দিন শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন। আজকের নেতারা যদি তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতেন, সংলাপ ও ক্ষমাশীলতার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেত।অর্থনীতি এবং শ্রমিক অধিকারেও নবীজির শিক্ষা অসাধারণ। তিনি বলেছেন, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি প্রদান করো।” শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা, কৃষকের ফসলের সঠিক দাম, প্রবাসীর রেমিট্যান্সের মর্যাদা—এসবই নবীজির শিক্ষার বাস্তবায়ন।নবীজির জীবন থেকে আমরা আরও শিখি মানবিক সহমর্মিতা। তিনি শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন, দুর্বলকে রক্ষা করেছিলেন। অথচ আমাদের সমাজে হিংসা, ঘৃণা, বৈষম্য বেড়েছে। দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি বাড়ানো, ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা—এসবই নবীজির শিক্ষা অনুযায়ী। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া মানেই শুধু ধর্মীয় আচার পালন নয়; বরং তা সামাজিক ন্যায়বিচার, রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান। বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতার যুগে এ শিক্ষা গ্রহণই পারে আমাদেরকে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে। আজ, ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এই দিনটি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং আত্মসমালোচনার দিন। যদি আমরা তাঁর জীবন ও শিক্ষাকে না বুঝি, তবে দুর্নীতি, সহিংসতা ও বৈষম্যের অন্ধকার থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি আমরা সত্যিই তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করি—রাজনৈতিক নেতৃত্ব, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সাধারণ মানুষের জীবন সবক্ষেত্রে—তাহলে বাংলাদেশ হতে পারে শান্তি, ন্যায় ও সমৃদ্ধির দেশ। ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের কেবল ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, বরং আত্মসমালোচনা ও কর্মপ্রেরণার দিন। নবীজির (সা.) শিক্ষা বাস্তবায়ন করলেই— রাজনৈতিক সংকট কাটবে ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্বের মাধ্যমে, সামাজিক অবক্ষয় রোধ হবে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস পাবে সুষম বণ্টন ও জাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে সহনশীলতা ও মানবপ্রেমের মাধ্যমে। আজকের আহ্বান: রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে—সংকটমুক্ত জাতি গড়ার একমাত্র পথ তাঁর জীবন ও শিক্ষার অনুসরণ। আমাদের প্রত্যেকের উচিত— রাজনৈতিক নেতা হোক ক্ষমাশীল ও ন্যায়পরায়ণ, অর্থনীতির নিয়ম হোক ন্যায্য ও বৈষম্যমুক্ত, সাংবাদিক হোক সাহসী ও সত্যনিষ্ঠ, সাধারণ মানুষ হোক সততা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা—এটাই হতে পারে আমাদের দেশের অন্ধকার থেকে মুক্তির একমাত্র আলো। আমরা বিশ্বাস করি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর শিক্ষা আজকের পৃথিবীতে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত বিশ্ব, বিভক্ত মুসলিম উম্মাহ, দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ ও অস্থির তরুণ প্রজন্ম—সব সমস্যার সমাধান রয়েছে নবীজির দেখানো পথে। তাই আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও বিশ্ব রাজনীতি পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা বাস্তবায়ন করা। কেবল তখনই মানবতা সত্যিকারের মুক্তি পাবে।আজকের পৃথিবী যেন নানা সংকটে ঘেরা—যুদ্ধ, দুর্নীতি, বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবেশ বিপর্যয়, নৈতিক অবক্ষয়—এসব আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে। মুসলিম বিশ্বও এ সংকট থেকে মুক্ত নয়। অথচ আমাদের সামনে রয়েছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত—রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা। রাসূলুল্লাহ (সা.) এমন এক যুগে আগমন করেছিলেন, যখন আরব সমাজ ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। গোত্রবাদ, অবিচার, নারী নিপীড়ন, মিথ্যা প্রতিযোগিতা আর সহিংসতায় জর্জরিত ছিল গোটা সমাজ। ঠিক সেখানেই তিনি ন্যায়, সাম্য, দয়া, ভ্রাতৃত্ব আর মানবতার আলো জ্বালিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার আচার-আচরণে উত্তম।” আজকের সমাজে এই বাণীই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। বর্তমান সংকটে আমরা দেখি—ক্ষমত

এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com