গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্য নদী তীরে কাপাশিয়া-শ্রীপুর সড়কসহ গাছপালা বেষ্টিত আবাদী কৃষিজমির বিশাল এলাকা বিকট শব্দে আকস্মিক ভূমি ধসে ১০ থেকে ১২ ফুট গভীরে দেবে গেছে। এতে কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে ওই একই এলাকায় চারবার ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। শুক্রবার ভোর রাতের এ ভূমিধসের ঘটনায় দস্যু নারায়ণপুর এলাকার রাস্তা সংলগ্ন দাসপাড়ার অন্তত ২০টি পরিবারের মাঝে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্কুলশিক্ষক রতন দাসসহ এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে শীতলক্ষ্যা তীরবর্তী কাপাসিয়া উপজেলার দস্যু নারায়ণপুর বাজারের পূর্ব পাশের দামপাড়াসহ আশপাশের এলাকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠলে তারা আতঙ্কিত হযে পড়েন পরে ঘটনাস্হল পরিদর্শন করে দেখতে পান প্রায় ২০০ ফুট দীর্ঘ ওই এলাকার কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কসহ পাশের প্রায় চার হাজার বর্গফুট গাছপালাসহ আবাদি কৃষি জমি কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ ফুট দেবে গেছে। স্থানীয় প্রবীণ ব্যবসায়ী তমিজউদ্দিন জানান, ১৯৬৮ সালে ওই এলাকায় প্রথম ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছিল।দীর্ঘ সময় পর দ্বিতীয় দফায় ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাস্তা ও একটি বাড়িসহ বিশাল এলাকা প্রায় ১৫ ফুট নিচে দেবে গিয়েছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল স্থানটি পরিদর্শন করে মাটির নমুনা পরীক্ষা করে ওই এলাকার মাটির গভীরে অতি মাত্রায় কাঁদামাটি ও পিট কয়লা জাতীয় পদার্থের উপস্থিতি শনাক্ত করেন। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে গেলে এগুলো শুকিয়ে যায়। ফলে সেখানে শূন্যতা সৃষ্টি হয়ে একের পর এক ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একই এলাকা বেশ কিছু গাছপালা, কলাবাগান ও রাস্তাসহ প্রায় ১০ ফুট নিচে দেবে যায়। চতুর্থ দফায় শুক্রবার ভোর রাতে আবারো সড়কসহ একই এলাকার প্রায় ১০ থকে ১২ ফুট নিচে দেবে যায়। এ ব্যাপারে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফ উদ্দিন জানান, গত বছর ওই সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। সংস্কারের পর ছয় মাস পর্যবেক্ষণও করা হয়েছে। এতে কোনো প্রকার ঝুঁকির আশঙ্কা পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু কেন এমনটি হলো তা বোঝা যাচ্ছে না। এদিকে আকস্মিক এই ভূমিধসের খবর পেয়ে কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খানসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দ দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
Leave a Reply