মোঃ শাকিল রেজা সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের আলোচিত ব্যবসায়ী তোয়াজ উদ্দিন শেখ (৫৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রায় ২০ দিন পর খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকা থেকে তানভীর হাসান (১৮) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর মহারাজপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে তোয়াজ উদ্দিনের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। সদর থানা পুলিশ বিকাল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহের দুই পা বাঁধা ছিল এবং মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ঘরের ভেতরে তোশক ও বালিশে রক্তের দাগ ছিল। এছাড়া দেয়ালে লেখা ছিল— “কে মারার কারণ, সে মুহাম্মাদ (সঃ)-কে গালি দিয়েছে। আল্লাহু আকবর।”
ঘটনার পর নিহতের ভাই আকাচ্চ আলী বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ড গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সুপার সদর থানা পুলিশ ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলকে হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের নির্দেশ দেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নিহত তোয়াজ উদ্দিনের সাথে আসামি তানভীর হাসানের পরিচয় হয় ২০২২ সালে। তোয়াজ উদ্দিনের স্ত্রী-সন্তান না থাকায় তাদের মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে ভিকটিমের কেশবপুরের বাড়িতে অবস্থানকালে জোরপূর্বক অনৈতিক সম্পর্কের চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে তানভীর ঘরে থাকা শীলপাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করে। পরে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, হত্যার পর আসামি ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেয় এবং আলামত নষ্ট করতে মোবাইলটি ভৈরব নদীতে ফেলে দেয়। গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত শীলপাথর ও দেয়ালে লেখা মার্কার পেন উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার গ্রেফতারকৃত তানভীরকে আদালতে প্রেরণ করা হলে সে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
*পুলিশ সুপার ঝিনাইদহ জানান*, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামি গ্রেফতারের মাধ্যমে এলাকায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
Leave a Reply