নওগাঁর আত্রাইয়ের এম এ রতন নামের এক যুবক। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সফলতার মুখ দেখছেন তিনি। প্রবল ইচ্ছা শক্তি ও অধ্যাবসায় থাকলে সফলতার সিড়ি বেয়ে উঠা যায় তার জলন্ত প্রমান এমএ রতনের । শুরুতে ৬টি গাভী দিয়ে খামার গড়ে তুলে। সেই ৬টি গরু থেকে বর্তমানে তার ওই খামারে গরুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫টি। খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি তার খামারে সার্বক্ষনিক কাজ করছেন ৬জন শ্রমিক।
এছাড়াও পাশাপাশি ২৫টি গাড়ল ও ১৬টি ছাগল, ৩০টি রাজহাঁস পালনও করছেন তিনি। সফল খামারি হিসাবে পরিচিত এম এ রতন আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জ গ্রামের মৃত আকবর আলী বড় ছেলে। আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় জীবিকার তাগিদে ঢাকা গিয়ে চাকুরী করেন একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে। সেখানেই উপলব্দি হয় নিজেই কিছু করা। সাভারে একটি খামার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজে বাড়ী ফিরে এসে বাড়ীর ২টি গরু বিক্রয় করে ছোট ছোট ৬ বাছুর কিনে পালন করতে থাকে। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। শুধুমাত্র কুরবানীর ঈদে বিক্রিয়ের উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালের ফাতেমা বহুমূখী ও সোহার আলী গরুর ২টি খামার গড়ে তুলেন।
দিন দিন বাড়তে থাকে গরু। বর্তমানে তার খামারে এখন ছোট বড় ৮৫টি গরু রয়েছে। প্রায় ১ একর জমির উপর গড়ে তুলেছে ২টি খামার। তার খামারে শ্রমিকের সংখ্যা ছয়জন। শ্রমিকদের বেতন আর গরুগুলোর নিয়মিত খাদ্যদ্রব্যের খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো আয় হয় রতনের। রতন তার সফলতার গল্পে তিনি বলেন, কোনো প্রকার ইঞ্জেকশন, রাসায়নিক সার ছাড়া সম্পূর্ণ দেশি খাবার দিয়ে গরু মোটাতাজা করে দেশের বিভিন্ন বাজারে, বিশেষ করে ঢাকার গিয়ে বিক্রি করেন। তবে গরুর সুস্থতার জন্য গরুর শরীর আর ঘর সব সময় পরিস্কার রাখতে হয়। আমি কোনো রাসায়নিক সার বা ইঞ্জেকশন দিয়ে গরু মোটাতাজা করি না।
ইতিমধ্যে সোনালী ব্যাংক থেকে খামার প্রসারে ঘটাতে ১০লাখ টাকা লোন পেয়েছি। সেই টাকাতে আমার খামার বৃদ্ধি করেছি। তরুন খামারি রতন জানান সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খামারটি আরও সমৃদ্ধ করতে ও বেকার কর্মস্থান সৃষ্টি হবে এমনটা আশা। তিনি বলেন, যদি খামারি ও কৃষকরা গরুর ন্যায্য দাম না পান তাহলে আগামীতে গরু পালনে আগ্রহ কমে যাবে। পাশাপাশি ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু না আসলে খামারিরা লাভবান হবেন। অন্যথায় ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকা করেছেন তিনি।
স্থানীয় প্রানি সম্পদ অফিসের সহযোগিতা এবং পরামর্শ নিয়ে কাজ করি। সময়মত কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পাশাপাশি সম্পূর্ণ দেশি খাবার যেমন- চালের ভূষি, কাঁচা সবুজ ঘাস, খড়, খৈল ইত্যাদি দিয়ে গরুকে মোটাতাজা করি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একটা লাভ পেয়ে যাই। রতনের প্রতিবেশি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রতনের সাফল্য দেখে আশেপাশের অনেকেই ঝুঁকছেন গরুর খামার গড়ে তুলতে।
প্রতিদিন অনেক যুবক আসছে এ খামার দেখার জন্য। আত্রাই উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ নুবায়েত রেজা বলেন, এটি শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য এটি অনুকরণীয় হতে পারে। এ ধরনের সফলতা দেখে অনেক বেকার যুবক এগিয়ে আসবে। আমরা উপজেলার সকল গরু খামারিদের সব সময় সার্বিক সহযেগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।
Leave a Reply