খন্দকার জলিল-স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের ভিত গড়ে উঠতে যারা ঘাম, পরিশ্রম ও ঝুঁকির বিনিময়ে খবর এনে দেন তারাই হচ্ছে সাংবাদিক। দিন-রাত, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে, দেশের নানা প্রান্ত থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ পরিবেশন করেন এই সাহসী মানুষগুলো। অথচ অবাক করার বিষয়, তারাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, সবচেয়ে বেশি সুবিধা বঞ্চিত।
সাংবাদিকদের জন্য নেই কোনো সরকারী সুরক্ষা আইন। বেতন-ভাতা পান না অনেকেই। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নেই হেলমেট বা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। ঝড়বৃষ্টি, অগ্নিকাণ্ড কিংবা সংঘর্ষ সব ক্ষেত্রেই তাদের যেতে হয় খালি হাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
সাংবাদিকদের নেই কোনো সরকারী হোন্ডা বা যানবাহনের সহায়তা। দুর্গম এলাকায় পায়ে হেঁটে বা ভাড়া করা গাড়িতে গিয়ে সংগ্রহ করতে হয় সংবাদ। অফিস কিংবা ফিল্ড সবখানে নিজের খরচে চলতে হয়। নিউজ লিখতে নেই ল্যাপটপ বা আধুনিক সরঞ্জাম। নিজের ফোনে কোন রকম টাইপ করে পাঠাতে হয় রিপোর্ট।
সবচেয়ে দুঃখজনক বাস্তবতা, দেশের সাধারণ জেলেদের পর্যন্ত সরকারী আইডি কার্ড আছে, যার মাধ্যমে তারা চাল, ডাল, তেল এমনকি তারা ২০-২৫ লক্ষ টাকার জাল নৌকা পায়। অথচ সাংবাদিকদের নেই কোনো স্বীকৃত আইডি কার্ড, নেই সরকারি সহায়তা, নেই ন্যূনতম সম্মান।
সত্যিই, একদিন যদি দেশের সব সাংবাদিক কলম বিরতি পালন করেন, বন্ধ হয়ে যাবে দেশজুড়ে খবরের স্রোত। জনগণ জানতে পারবে না প্রশাসনের গাফিলতি, উন্নয়ন কার্যক্রম কিংবা দুর্নীতির খবর।
সাংবাদিকদের দাবি-
১.সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইন প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
২. সকল সাংবাদিককে সরকারী স্বীকৃত আইডি কার্ড প্রদান করা।
৩. নিউজ সংগ্রহে হোন্ডা ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম বরাদ্দ দেওয়া।
৪. প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি (ল্যাপটপ/কম্পিউটার) সরবরাহ করা।
৫. স্বাস্থ্যবীমা ও দুর্ঘটনা সহায়তা তহবিল গঠন করা।
৬. সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য নূন্যতম বেতন কাঠামো নির্ধারন।
সাংবাদিকদের কলম যতদিন সচল, ততদিন সচল থাকবে দেশের গণতন্ত্র, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং জনস্বার্থ। তাই রাষ্ট্রকে এখনই ভাবতে হবে, এই সাহসী মানুষগুলোর পাশে কিভাবে দাঁড়ানো যায়।
Leave a Reply