নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধিঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ ফসলী জমিতে কোন শিল্প কলকারখানা স্থাপন করা যাবে না । জমি ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অথচ একটি অসাধু সেন্ডিক্যাট ঢাকা থেকে এসে নেত্রকোনায় ফসলী জমি নষ্ট করে ইটের ভাটা দিচ্ছে । এদেরকে সহযোগীতা করছে প্রশাসনের কিছু অফিসার ও রাজনীতি মহলের নেতা, যাদেরকে টাকা দিলে সব কিছু করতে পারে। একটি সূত্রে জানা যায় , ঢাকার ইটভাটা ব্যবসায়ীরা একটি বড় টার্গেট নিয়ে নেত্রকোনায় এসেছে এরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক ইটভাটা স্থাপন করতে পারে । এ ব্যাপারে জমি বিক্রয়ে সতর্কতা জরুরী হয়ে পড়েছে। সহজলভ্যতার কারণে নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন গ্রাম এলাকার কৃষি জমি ধ্বংস করে, একের পর এক গড়ে উঠছে ইটের ভাটা। এতে নিরিবিলি গ্রামীণ পরিবেশ ও ফসল উৎপাদন মারাতœক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের বগপ্রতিপুর গ্রামের ভিতরে অবৈধভাবে দেওয়া হয়েছে ঢাকা ব্রিক্স ও রেন্ট্রিতলা উলুয়াটি গ্রামের পাশে, এ এস টি ব্রিক্স, এই দুটি নতুন ব্রিক্স শত শত একর জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে । এর পাশাপাশি সিংহের গাওঁ গ্রামের ভিতরে রয়েছে সনি ব্রিক্স, ও কেন্দুয়া পৌরসভার কাছে রয়েছে হিমালয় ব্রিক্স । ইট তৈয়ারের জন্য আশপাশের ফসলী জমির মাটি উজার করে কেটে ফেলছে । কমে যাচ্ছে ফসলী জমি ও ইটভাটার চিমনির ধোঁয়ায় শ^াসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগ বালাই ছড়াচ্ছে। ধোঁয়া ও ধুলা দূষণে বিষাক্ত হচ্ছে পরিবেশ। নেত্রকোনা জেলায় প্রায় ৫০টি ইটেরভাটা চালু আছে, আর জেলা প্রশাসকের জি এম শাখা সূত্রে জানা গেল, জেলায় প্রায় ২৪টি ইটের ভাটার লাইসেন্স আছে। তাহলে বাকি ২৬টি ইটেরভাটা লাইসেন্স ছাড়া কেমন করে চলে। এরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর ইটেরভাটা চালাচ্ছে। প্রশাসনের দুর্বল দৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইটেরভাটা । নেই কোন সরকারি লাইসেন্স, নেই কোন পরিবেশের ছাড়পত্র, এরপরও প্রশাসনের টনক নড়ছে না । মনে হচ্ছে তাদের আয়ের একটি বড় অংশ হচ্ছে ইটের ভাটা,এই ভাবে চলছে অবৈধ ইটভাটার রমরমা ব্যবসা। ইটভাটার বিষয় নিয়ে বগপ্রতি পুরের রমজান মিয়া ও সুনিল চন্দ্র বিশ^াস জানান এলাকায় একটি প্রভাবশালী মহলের ক্ষু দৃষ্টি পড়েছে। এরা এসে আমাদের গ্রামের ভিতরে ইটের ভাটা দিয়েছে, আমরা গরীব মানুষ মরলেই কি আর বাচলেই কি এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। উলুয়াটি গ্রামের সাদেক মিয়া বলেন গ্রামের সামনে ইটভাটা হয়েছে এর প্রভাবে এলাকা জুড়ে ফসলী জমিতে ধান উৎপাদন কমে যাবে। অবৈধ ইটভাটার রমরমা ব্যবসার বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলার হাজী সাহিদ ব্রিক্স এর মালিক হাজী ফারুক আহম্মদ বলেন, আমরা সরকারের রাজস্ব দিয়ে ও সকল আইন মেনে ইটভাটার ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু কিছু অসাধু ইটভাটার মালিক সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ইট উৎপাদন করছে। তারা আমাদের চাইতে কম দামে ইট বিক্রি করছে। এদের জন্য আমাদের ইটভাটার ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে। ঢাকা ব্রিক্স ও এ এস টি ব্রিক্স ফিল্ডের বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সাবিকুন্নাহার বলেন এই দুটি ব্রিক্স ফিল্ড পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড় পত্রের জন্য আবেদন করেছিল আমরা তা না মঞ্জুর করে দিয়েছি । নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আব্দুর রহমান বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply