২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং
“প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে৷ আর আমি ভালো ও মন্দ অবস্থার মধ্যে ফেলে তোমাদের সবাইকে পরীক্ষা করছি, শেষ পর্যন্ত তোমাদের আমার দিকে ফিরে আসতে হবে৷”
( সূরা আম্বিয়াঃ ৩৫ )
এমন সত্য কথা পবিত্র সত্য কথা কোরআন ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যাবে না।
আল্লাহ রাববুল আলামীন কুরআনে কারীমে ইরশাদ করেন-
كُلُّ نَفْسٍ ذَآىِٕقَةُ الْمَوْتِ ؕ
প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।
পৃথিবীর সব প্রাণীই একদিন মৃত্যু বরণ করবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কিয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ বদলা দেওয়া হবে। তারপর যাকে দোজখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।(সুরা আল ইমরান: ১৮৫)
প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভালো দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। (সুরা আম্বিয়া-৩৫)
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও। (সুরা আন নিসা-৭৮)
তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন? অথচ তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ তাদেরকে বললেন মরে যাও। তারপর তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের উপর অনুগ্রহকারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক শুকরিয়া প্রকাশ করে না। (সুরা বাকারা-২৪৩)
বলুন তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে। (সুরা আল জুমুআহ-৮)
প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন। (সুরা মুনাফিকুন-১১)
এ রকম দুনিয়াতে যেই আসে সেই চলে যাবে। এখানে আসার অর্থই তাকে যেতে হবে। আর আসার পর থেকেই যাওয়ার সময় এগুচ্ছে। একজন লোক আসার পর থেকে আমরা দেখছি সে বড় হচ্ছে। কিন্তু আসলে তার যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসছে। যাওয়ার দিকে সে অগ্রসর হচ্ছে। এই দুনিয়াতে কতজন আসে আবার কতজন যায়। কারো যাওয়াটা একটা বড় বিষয় আর কারো যাওয়াটা কোন বিষয়ই নয়। কোথায় সেই হিন্দুস্তানে আবরারুল হক সাহেবের ইন্তেকাল হয়েছে, কিন্তু হরদুঈ এলাকা বা শুধু হিন্দুস্তান নয়, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে আলোচনা চলছে যে, আল্লাহর খাস এক ওলী ছিলেন তিনি। মানুষকে সঠিক রাস্তা দেখাতেন, সুন্নতের রাস্তা দেখাতেন, খারাপ ছেড়ে ভালো পথে চলার পথ দেখাতেন। এই নেক কাজ তিনি করতেন, মানুষকে নেক কাজের উপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাঁর দিন-রাতের সাধনা ছিল এবং জীবন-মরণ শুধু সুন্নতের জন্যই ছিল। কিভাবে সুন্নাত প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, প্রতিটা ঘরে প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে কিভাবে সুন্নতী জীবন আসতে পারে এবং কিভাবে মানুষ গুনাহ থেকে, বিদআত থেকে, কুফর ও শিরিক থেকে বাঁচতে পারে- সেই এক ফিকির আর মাথা ব্যথা ছিল সর্বদা। উম্মতের দরদে, উম্মতের ব্যথায় তিনি ব্যথিত ছিলেন সব সময়। এই কথাটাই দেখবেন এখন আলোচনা হচ্ছে। শুধু এখানে নয় সব জায়গায়। কারণ তিনি নিজেকে আল্লাহর জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন, নিজের জীবনকে আল্লাহর দ্বীনের জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছেন।
‘আমার জীবন আমার মরণ আল্লাহর জন্য।’ তিনি তাঁর জীবনকে আল্লাহর জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছেন। আর আল্লাহর বিধান এবং আ্ল্লাহর নীতি হল, যে আল্লাহর জন্য হয়েছে, নিজেকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে দিয়েছে আল্লাহর জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছে আল্লাহ তার হয়ে যান। আর যখন আল্লাহ তার হয়ে যাবেন তখন সকল মানুষ তার হয়ে যাবে। সমস্ত মাখলুকের অন্তর তো আল্লাহর হাতে। আল্লাহর কুদরতের কব্জায়। মাখলুকের দিলের খালেক আল্লাহ, দিলের মালিক আল্লাহ। তাদের অন্তরে তোমার মুহাববত আল্লাহই দিয়ে দিবেন।
কথাটা আজকের মজলিসে আমি বলতে চাই সেটা হল এই যে, আল্লাহর বান্দারা যাচ্ছেন। চলে যাচ্ছেন আল্লাহর ওলীরা। তাঁদের জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু নেওয়ার আছে। কুরআন মাজীদে আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন-
اُولٰٓىِٕكَ الَّذِیْنَ هَدَی اللّٰهُ فَبِهُدٰىهُمُ اقْتَدِهْ ؕ
এদেরকে আল্লাহ তাআলা হেদায়েত দান করেছেন। সুতরাং তুমিও তাদের পথের অনুসরণ কর। তুমিও তাদের হেদায়েতের পথে চল। যাদেরকে আল্লাহ তাআলা হেদায়াত দান করেছেন। যারা সিরাতে মুস্তাকীমের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আনিত শরীয়তের উপর, রাসূলের সুন্নতের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। আল্লাহ বলেছেন, তুমি তাদের রাস্তায় চল। তাহলে সেটাই হল নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রাস্তা, সাহাবায়ে কেরামের রাস্তা।
আর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রাস্তায় চলেছেন সেটাই হেদায়েতের একমাত্র রাস্তা। আল্লাহকে রাজী-খুশি করার, আল্লাহকে পাওয়ার একমাত্র রাস্তা। তো এই যে লোকটা জীবনভর সুন্নতের দাওয়াত দিয়ে গেলেন, তাঁর শিক্ষা-দীক্ষার মধ্যে ছোট ছোট কিছু কথা আছে। একেবারে ছোট ছোট এক-দুইটা বাক্য, অল্প কয়েকটা কথা। যদি ভালোভাবে বুঝে এগুলোর উপর আমল করা যায় তাহলে সুন্নত এবং শরীয়তের রাস্তায় চলা আমাদের জন্য অনেক আসান। এই ধরনের কথা তাঁর জীবনে এবং শিক্ষা-দীক্ষার মধ্যে অনেক আছে। এটা তাঁর আবিস্কৃত নয়, তার আবিষ্কৃত হলে কে তার অনুসরণ করত? সব রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের জীবন ও সীরাত থেকে নেওয়া জিনিস। সে জন্যই বলা।
বরং তুমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দুটি হাদীসের দিকে লক্ষ কর। অর্থাৎ কোনো নেক কাজকে ছোট মনে করে ছেড়ে দিবে না। এমন ভাববে না যে, এটুকু করলে আর কি হবে? আল্লাহর রাসূল বলেন, যেটুকু পার সেটুকুই কর। এটুকু করলেও অনেক
Leave a Reply