মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের রাউজানে শহীদ হওয়া বীর বিক্রম কনস্টেবল বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নানের কবর স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের রাউজান থেকে তাঁর জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে স্থানান্তর কার্যক্রম পক্রিয়াধীন। এ উপলক্ষে সোমবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাউজান উপজেলাস্থ কবরস্থান পরিদর্শন করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম। এসময় তিনি পুষ্পমাল্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের স্যালুট প্রদর্শন করেন। সাথে ছিলেন কবর স্থানান্তরের উদ্যোক্তা শহীদ আবদুল মান্নান স্মৃতি সংরক্ষণ বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক এম এস কে মাহাবুব। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা চলাকালীন সময়েimageপাকিস্তানি সেনা সদস্যদের মদুনাঘাট বিদ্যুৎ লাইনের ট্রান্সফর্মা বিষ্ফোরেণের অপারেশন কমান্ডার হাটহাজারীর বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী, রাউজানের মুক্তিযোদ্ধা ইউসূফ খান, মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ বড়ুয়া, সাধন পালিত, বাদল পালিত, হারুনুর রশিদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল বড়ুয়া, রাউজান প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক শফিউল আলম।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ অক্টোবর পাকিস্তানি বাহিনীর এক বর্বরোচিত হামলায় নবীনগরের শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের নোয়া গ্রামের সন্তান, অকুতোভয় সৈনিক পুলিশ কনস্টেবল আবদুল মান্নান চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার আবুরখিল গ্রামে যুদ্ধরত অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন। এরপর সেখানেই এক গহীন অরণ্যে তাঁকে সমাহিত করা হয়। দেশ স্বাধীনের পর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃত স্বরূপ তাঁকে বীর বিক্রম খেতাব দেওয়া হয়। সম্প্রতি শহীদ আবদুল মান্নান স্মৃতি সংরক্ষণ বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক এম এস কে মাহাবুব বীর বিক্রম আবদুল মান্নানের মরদেহ রাউজান থেকে তাঁর জন্মভূমি নবীনগরে ফিরিয়ে আনতে এই প্রথম দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তাকে সার্বিকভাবে সহায়তা করছেন বীর বিক্রম আবদুল মান্নানের এলাকার কৃতি সন্তান শেরপুর জেলা এডিশনার এসপি বলাল হোসেন, নোয়াফের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী প্রদীপ আচার্য ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ। এ প্রসঙ্গে সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘বীর বিক্রম পুলিশ কনস্টেবল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান রাউজানে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। তিনি এখনেই শায়িত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উনাকে আরও সম্মানিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উনার কবর স্থানান্তর পক্রিয়া চলছে। শীঘ্রই উনার কবর নিজ গ্রামে নবীনগরে স্থানান্তর করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নস্থ আবুলখীল গ্রামের যে এলাকা থেকে বীর বিক্রম পুলিশ কনস্টেবল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নানের কবর স্থানান্তর করা হবে সেই এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের দাবি- উনার কবরের স্থলে যাতে একটি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে স্মৃতিস্তম্ভ এবং সড়ক তৈরি করার। বিষয়টি আমি বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর ব্যবস্থা করব। যাতে সকলের সমন্বয়ে আবুরখীল গ্রামে যেন বীর বিক্রম পুলিশ কনস্টেবল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নানকে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। ১৯৭১ সালে গহীন জঙ্গলের মধ্যে উনাকে কবরস্থ করতে এসেছিলেন সে জায়গায় একটি স্মৃতিচিহ্ন রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply