শিরোনাম :
জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক পদে পদোন্নতি পেলেন মোজাম্মেল হোসেন বাবু ধামরাইয়ে বিজ্ঞান মেলা নীলফামারী সদরে বিসমিল্লাহ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে সাড়ে ৬২ লাখ টাকার কো*কেন ও হি*রোইন জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৫৬ বিজিবি) নীলফামারী। রাজশাহীতে হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা কোটচাঁদপুরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় জনগণের রোষানলে সাব রেজিস্ট্রার ঝিনাইদহে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের মৃত্যু Daily Detectivenews কেরানিগজ্ঞের বিপুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ গোদাগাড়ীতে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার মিরপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শাহজাদপুরে মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের কাছে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদা দাবির অভিযোগ

ভোলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির অলঙ্কার ‘সবুজ টিয়া

মোঃ এমরান হাসান আলীম স্টাফ রিপোর্টারঃ লালমোহন
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৩১৪ বার পঠিত

টিয়া আমাদের দেশে অতি পরিচিত ও সুদর্শন পাখি। প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে টিয়া পাখির ভূমিকা অপরিসীম। বাংলা সাহিত্য, সংষ্কৃতি আর আদি ঐতিহ্যে লালিত গল্প-কাহিনী-পালাগানে রয়েছে টিয়া পাখির সরব উপস্থিতি। এক সময় ভোলা জেলার প্রতিটি উপজেলায় গ্রামে-গঞ্জে বিশেষ করে বনে বাঁদাড়ে অবাধে ঘুরে বেড়াতো টিয়াসহ বহু প্রজাতির পাখি। কিন্তু গত এক দশক সময়ের ব্যবধানে পাল্টে গেছে সে চিত্র। এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না প্রকৃতির অলংকারখ্যাত টিয়া পাখির অবাধ বিচরণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বন-জঙ্গল উজাড় হয়ে যাচ্ছে। গাছ পালা কেটে বসতি গড়ার কারণে এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে পাখিদের অভয়ারণ্য। মনুষ্য ও কৃত্রিম কারণে ভোলাতে এখন আর হরহামেশা দেখা যায় না সবুজ টিয়া পাখি। যতসামান্য যেগুলোর দেখা মেলে তাও আবার অনেকে ধরে নিতে চায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সবুজ টিয়ার দেখা মেলা দায়। গাঢ় রঙের আভিজাত্য, সুন্দর চলন-বলন, সহজেই পোষ মানা এবং বাকপটুতার কারণেই মানুষের কাছে অতি জনপ্রিয় এই পাখিটি। আমাদের দেশে সাধারণত সাত প্রজাতির টিয়া পাখির বসবাস। এগুলো হলো চন্দনা টিয়া, বাসন্তী লটকন টিয়া, মদন টিয়া, লালমাথা টিয়া, মেটেমাথা টিয়া, ফুলমাথা টিয়া ও সবুজ টিয়া। এরা সাধারণত বন, বৃক্ষবহুল এলাকা, প্রশস্ত পাতার বন, আর্দ্র পাতাঝরা বন, খোলা বন, পাহাড়ি বন, বসতবাড়ির বৃহৎ বৃক্ষ, আবাদি জমি, পুরোনো বাড়িতে বসবাস ও বিচরণ করে। সাত প্রজাতির মধ্যে সবুজ টিয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সবুজ টিয়া কলাপাতা-সবুজ রঙের সুদর্শন পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য সাধারণত ৪২ সেন্টিমিটার, ওজন ১৩০ গ্রাম। সামান্য কিছু পালক ছাড়া পুরো দেহই সবুজ। দীর্ঘ সবুজ লেজের নিচের দিকে নীলের আমেজ পাখিটাকে আরও সৌন্দর্যময় করে তুলেছে। ঠোঁট মিষ্টি লাল, চোঁখ হলদে-সাদা। ছেলে পাখির থুুতনিতে কালো রেখা, গলা ও ঘাড়ের পেছনে গোলাপি পাটল বর্ণ।মেয়ে পাখির ঘাড় পান্না সবুজে ঘেরা। সবুজ টিয়া সচরাচর ছোট দলে থাকে, তবে জোড়ায়ও দেখা যায়। খাদ্য তালিকায় আছে পত্রগুচ্ছ, ফুল, ফল, লতাপাতা, বীজ ও ফলের মিষ্টি রস। গ্রামের ধান ক্ষেতে সবুজ টিয়ারা নামে পাকা ধান খেতে। নদীর ধার দিয়ে শেষ বিকেল ও গোধূলিলগ্নে দল বেঁধে উড়ন্ত টিয়াদের দৃশ্য এক মনোরম মনকাড়া সৌর্ন্দের প্রতিচ্ছবি। টিয়া (Parrot) Psittaciformes বর্গের পাখি। ইংরেজি নাম Rose-ringed Parakeet। বৈজ্ঞানিক নাম Psittacula krameri। পরিবেশবাদী সংস্থা বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের এক সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এশিয়ার দেশুগলোতে পাখি শিকারের প্রবণতা মারাত্মক। ফলে ৬২ ভাগ পাখি বিলুপ্ত হয়েছে শিকারীদের হাতে। গবেষকদের মতে, শুধু শিকারীদের লোলুপদৃষ্টিই পাখি ধ্বংসের একমাত্র কারণ নয়। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসও অন্যতম কারণ। প্রজনন সময় জানুয়ারি থেকে এপ্রিল। গাছের প্রাকৃতিক কোটরে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২ থেকে ৪টি। ডিম ফোটতে সময় লাগে ২২ থেকে ২৪ দিন। শাবক স্বাধীনভাবে চলাচলের জন্য সময় নেয় ৫০ থেকে ৫৫ দিন। এদের নিরাপদ আবাসস্থল আর শিকারীদের তৎপরতা বন্ধ না করলে এক সময় বিলুপ্তির খাতায় নাম উঠবে প্রকৃতির অপরূপ শোভা টিয়া পাখির। তাই টিয়া পাখি রক্ষায় সকলের সজাগ দৃষ্টি আর আন্তরিকতা প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিবেশবাদীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com