মোঃ বাবুল স্টাফ রিপোর্টার
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে,সেবা নয়, দুর্ভোগই নিয়তি অভিযোগ আছে হাসপাতালের চিকিৎসক ও দালালের মাধ্যমে রোগীদের প্রাইভেট হাসপাতাল এরও ক্লিনিক এ ভর্তি করান। নানা অব্যবস্থাপনায় চলছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম, পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ভোগান্তি । এনিয়ে বিপাকে রয়েছেন রোগীরা।
তিনবার দেশসেরার খ্যাতি পাওয়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালে গরু ও কুকুরের অবাধ বিচরণ দেখে মনে হবে মানুষের সঙ্গে এরাও চিকিৎসা নিতে এসেছে। হাসপাতালের সেবার মানের পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স এবং স্টাফদের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রোগী এবং তাদের স্বজনরা। তবে এসব মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এশিয়া মহাদেশের মাঝে নাম করা উল্লেখযোগ্য একটি প্রতিষ্ঠান, আজ এই হাল কেন? যেখানে টেন্ডার নিয়ে মারামারি হয়, পুলিশ পাহারা দিতে হয়। হাসপাতালের নিরাপত্তায় কতজন সরকারি বেসরকারি (আউটসোর্সিং) নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে! অভ্যন্তরে টয়লেটগুলোর কী হাল সরেজমিন পরিদর্শন করুন।’
এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলার মানুষ ছাড়াও কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ এবং গাজীপুর থেকে রোগীরা সেবা নিয়ে থাকেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী ভর্তি থাকেন এখানে। এছাড়াও আউটডোরে চার থেকে সাড়ে চার হাজার রোগী চিকিৎসাসেবা নেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় আট হাজার রোগীর চাপ সামলিয়ে সেবার মান নিশ্চিত করে বিগত পরিচালনা প্রশাসনের নেতৃত্বে ২০১৮, ১৯ এবং ২০২০ সালে ‘হেলথ মিনিস্টারস’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। তবে সম্প্রতি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নানা অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ রোগী, তাদের স্বজন এবং নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
সম্প্রতি লক্ষ্য করা যায়, নোংরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মেঝে এবং বারান্দায় গাদাগাদি করে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। দেড়-দুই বছর আগে নিয়মিত ওষুধ পাওয়া গেলেও এখন প্রকট সংকট দেখানো হচ্ছে। পরীক্ষা নীরিক্ষাতেও ভুলের অভিযোগ। আবার অনেক চিকিৎসক বাহিরে তাদের পছন্দের প্রাইভেট হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন রোগীদের।
হার্টের সমস্যা নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৭১ শয্যা কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হন জেলার হালুয়াঘাটের মোশারফ হোসেন। শয্যা না পেয়ে বারান্দায় সেবা নিচ্ছেন তিনি। ভর্তি হওয়ার পরপরই কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার সুযোগ পেলেও ইকো বা ইকোকার্ডিওগ্রাফি পরীক্ষার সময় বেঁধে দেওয়া হয় দুই মাস। বাধ্য হয়ে তিনি ইকোসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা বাহিরে করান।
মোশারফ হোসেন বলেন, আমি হার্টের রোগী হওয়ায় অন্যান্য পরীক্ষার সঙ্গে ডাক্তার বলেছে ইকো পরীক্ষা করাতে। কিন্তু তারা পরীক্ষার জন্য সিরিয়াল দিয়েছে দুই মাস পর। বাধ্য হয়ে তা বাহিরে করিয়েছি। মেশিন নষ্ট থাকার কারণে অনেক পরীক্ষা তাদের এখানে হচ্ছে না। তাই ডাক্তাররা অন্য ক্লিনিকে করার পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা গরীব বলেই এই হাসপাতালে সেবা নিতে আসি; কিন্তু সেখানে এসে ভোগান্তির পাশাপাশি ফতুর হচ্ছি।
এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply