মানিকগঞ্জের সিংগাইরে মীম আক্তার নামে এক বছর বয়সী কন্যাশিশুকে হত্যার অভিযোগে তার বাবা আল আমিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সিরাজপুর-পাড়াগ্রাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আজ সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় মেয়ে মীম আক্তারকে হত্যা করেছে মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। গ্রেফতারকৃত আল আমিন উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই ফরহাদুজ্জামান ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৬ নভেম্বর উপজেলার কালিগঙ্গা নদীর পাড় থেকে শিশু মীমের হাত-পাবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে মাদকাসক্ত আল-আমিন স্ত্রী হোসনেয়ারাকে বিভিন্ন সময় মারধর করতো। সর্বশেষ গত ৩ নভেম্বর সকালে আল-আমিন ও তার বাড়ির লোকজন মিলে একমাত্র কন্যা সন্তান মীম আক্তারকে রেখে স্ত্রী হোসনেয়ারাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
গত ৬ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে পার্শ্ববর্তী বার্তা গ্রামের কালিগঙ্গা নদীতে জনৈক জেলে মাছ ধরতে গেলে পানিতে ভেসে ওঠা লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে হোসনেয়ারা তার পরিবারের লোকজন নিয়ে গলায় তাবিজ দেখে সন্তানের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওই দিনই স্বামী আল আমিন (৩০), তার পিতা আ. হালিম (৫৫), মা নাছিমা বেগমসহ (৪৮) ছয় জনের বিরুদ্ধে সিংগাইর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন হোসনে আরা বেগম। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, আল আমিনের ভাই আজিজুল (৩৫), বোন মুক্তা আক্তার (২০) ও স্বজন ছাবিনা আক্তার (৩২)।
এদিকে, আদালতের নির্দেশে শিশুটির লাশ শনাক্তের জন্য রবিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহের নিগার সুলতানার উপস্থিতিতে মাধবপুর-মানিক নগর কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ পরিক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। উল্লেখ্য, পারিবারিক কলহের জেরে গত ৩ নভেম্বর স্ত্রী হোসনে আরাকে মারধর করে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্বামী আল আমিন। পরে এক বছর বয়সী কন্যা মীমকে নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও স্বামী-সন্তানের সন্ধান না পাওয়ায় ৪ নভেম্বর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন হোসনে আরা। ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় কালিগঙ্গা নদীর পাড় থেকে শিশু মীমের হাত-পাবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়।
Leave a Reply