জামালপুর জেলার বকশীগন্জের মাহবুবুল হক বাবুল চিশতী বৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক বাবুল চিশতী সহ চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদনের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
বাবুল চিশতী ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী এবং দুই শ্যালক গোলাম রসূল ও বকশীগন্জের ধানুয়াকামালপুরের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। এর আগে আদালতে এ মামলার এজাহার পৌঁছায়। এরপর আদালত মামলার এজাহার করে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ২৪ কোটি টাকার এই অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করার অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফয়সাল বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গোলাম রসূল ২৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৬ হাজার ২১০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন এবং তিনি ২৬ লাখ ৫৫ হাজার ৩৬০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। এজাহারে আরো বলা হয়, বাবুল চিশতী তার শ্যালক গোলাম রসূলের নামে যমুনা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের হিসাবে ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ১০ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা জমা করেন। অন্য আসামি রাশেদুল হক চিশতী ২০১২ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে তার ছোট মামা গোলাম রসূলের নামে যমুনা ব্যাংকের একাধিক হিসাবে ছয় কোটি ৪৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা করেন।
এছাড়া আরেক আসামি মোস্তফা কামাল তার ছোট ভাই গোলাম রসূলের নামে ফারমার্স ব্যাংকের চারটি হিসাবে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এক কোটি ২০ হাজার টাকা জমা করেন। মামলায় বলা হয়, এসব টাকা বাবুল চিশতী, তার ছেলে রাশেদুল ও শ্যালক মোস্তফা কামাল তাদের আয়ের অবৈধ উৎস, অবস্থান ও মালিকানা গোপন করে বৈধ করার উদ্দেশ্যে গোলাম রসূলের বিভিন্ন হিসাব নম্বরে জমা করেন। যা মূলত তাদের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ। বাবুল চিশতী পরিবারের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত এক ডজনের বেশি মামলা করেছে দুদক। ফারমার্স ব্যাংকের চার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, মাহবুবুল হক বাবুল চিশতীসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে বিচার কাজ চলছে। এ পর্যন্ত এ মামলায় মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় মামলাটি করেন। এরপর একই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ।
Leave a Reply