শিরোনাম :
মিরপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের নবনির্মিত কার্যালয়ের উদ্বোধন ও তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বরগুনা জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা থানা পুলিশ কর্তৃক ২০(বিশ) কেজি গাঁজা ও ০১টি প্রাইভেটকার সহ ০১ জন গ্রেফতার। ধনবাড়ীতে এডভোকেট মোহাম্মদ আলীর জনসভা অনুষ্ঠিত চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে স্বৈারাচার বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি চিহ্ন সম্বলিত চিত্র নিয়ে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের উদ্বোধন । গলাচিপা উপজেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা: শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আগ্রাবাদে নিষিদ্ধ সংগঠনের মিছিল, পুলিশের অভিযানে ১১ জন গ্রেফতার বরিশালে চাল ডিলার কর্তৃক সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি: বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাব (B.C.P.C)–এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটই সমাধান : সাবেক মন্ত্রী এম. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ খুনের মামলার দুই আসামি গ্রেফতার

মির্জাগঞ্জে অরক্ষিত বেড়িবাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পায়রা পাড়ের বাসিন্দারা  

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৩ বার পঠিত

মোঃ ফেরদৌস হাসান সৌরভ –
স্টাফ রিপোর্টার

আকাশে মেঘ আর নদীর পানির উচ্চতা বাড়লেই আতঙ্ক বাড়ে পায়রা নদীবেষ্টিত মির্জাগঞ্জ উপজেলা সহ পটুয়াখালী-বরগুনা উপকূল জুড়ে। সেই সঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিপদ সংকেত আতঙ্কের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোঁ’তে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি কিংবা বঙ্গোপসাগরে কোন নিম্নচাপ সৃষ্টি হলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মির্জাগঞ্জ উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত হাজার হাজার মানুষ। কারন প্রায় প্রতি বছরই মৌসুমী জোঁ’র প্রভাবে এবং জলোচ্ছ্বাসের ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে অনেকগুলো গ্রাম প্লাবিত হয়।

জানা যায়, এই উপজেলার মোট ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নই পায়রা নদীবেষ্টিত। আর এসব ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী বেড়িবাঁধ গুলোর অবস্থা খুবই নাজুক ও নড়বড়ে। নেই কোন ব্লোক ব্যবস্থা। সামান্য স্রোতেই যেকোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে এই অরক্ষিত বেড়িবাঁধ। পায়রায় যেকোনো মূহুর্তে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে বসতভিটাসহ ফসলি জমি। 

অপর দিকে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পায়রার বিরামহীন ভাঙ্গন শুরু হয়। তাই বর্ষা মৌসুম এলেই ভয় আর আতঙ্কে দিন কাটে এখানকার মানুষদের। কখন যেন পায়রার গ্রাসে শেষ সহায় সম্বলটুকু নদীতে চলে যায়। এদিকে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার কাকড়াবুনিয়া বাজার ও গোলখালী স্লুইসগেট। এগুলো যেকোন জলোচ্ছ্বাস কিংবা বর্ষা মৌসুমে পূর্ণিমার জোঁ’তে যেকোনো সময় স্রোতের তোপে দুমড়ে-মুচড়ে বিলিন হতে পারে পায়রার বুকে। 

এভাবে প্রতি বছরই বঙ্গোপসাগরের লঘু চাপের সৃষ্টি হলে চরম আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় এবং বর্ষা মৌসুমে দুর্বিষহ জীবন পার করতে হয় পায়রা পাড়ের বসতিদের। আর বর্ষা শেষে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধে নামে মাত্র মাটি দিয়ে সংস্কারের নামে বরাদ্দ লুটপাট করে সংশ্লিষ্টরা- এমনই মন্তব্য করেন বেড়িবাধ এলাকায় বসবাসকারীরা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, পায়রা নদীর বিরামহীন ভাঙ্গনের মুখে দিনে দিনে ছোট হচ্ছে মির্জাগঞ্জের মানচিত্র। পায়রার তীব্র স্রোতে উপজেলার  পিপঁড়াখালী শাহজাহান হাওলাদার বাড়ী সংলগ্ন বেড়িবাঁধটি অরক্ষিত হওয়ায় বসতবাড়িসহ কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়াও প্রতিনিয়তই ভাঙ্গনের কবলে নদীর গর্ভে বিলিয়ে যাচ্ছে উপজেলার গোলাখালী, চরখালী, মেহিন্দাবাদ, কাকড়াবুনিয়া, ভয়াং, রামপুর, সন্তোসপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ। ইতোমধ্যে পায়রা নদী গিলে নিয়েছে সুন্দ্রা কালিকাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুন্দ্রা প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামপুর দাখিল মাদ্রাসা।

আর এসমস্ত এলাকার বেড়িবাঁধের বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষা এলেই ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ওই সমস্ত এলাকার ফসিল জমি ও ঘরবাড়ির। বেড়িবাঁধগুলোর এমনই দূর্বস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে যে, জলোচ্ছ্বাস তো দূরের কথা পায়রার দুই একটা ঢেউয়ের তোরেই যেকোন সময় বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

 

স্থানীয় আলী আকবর, ইমরান ও খালেকসহ উপজেলার বিভিন্ন বেড়িবাধ সংলগ্ন বাসিন্দারা বলেন, মজবুত বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিনিয়ত ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আমাদের যা ছিলো সবই নদীতে গেছে। পায়রা নদীর সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় আমাদের। এখন বেড়িবাঁধের যে অবস্থা তা বৃষ্টি আসলে জোয়ারের পানিতেই ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তখন মাথাগোঁজার মতো ঠাই টুকুও থাকবে না। প্রতিবছর শুনি ব্লোকসহ টেকসই বেড়িবাঁধ হবে কিন্তু বাস্তবে দেখা নাই। আমাদের একটাই দাবি ত্রান নয়, আমরা ব্লোকসহ টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।

মির্জাগঞ্জের দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, এলাকার বেড়িবাঁধ ভাঙ্গাচুড়া ও দূর্বল অবস্থা। বড় ধরনের কোন বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস হলে গরীব মানুষের বাঁচার কোন উপায় থাকবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ যাতে এই বাঁধগুলো শক্ত করে তৈরি করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, মির্জাগঞ্জে উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভেঙে যায়, জনগণের ভোগান্তি হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা করা হয়। ব্লক দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাকিব বলেন, নিম্নচাপের কারণে যেসব এলাকা বেরি বাঁধ ভেঙে গেছে সেসব বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধের জন্য সমীক্ষা প্রকল্প পাশ হয়েছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com