গনতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টিতে আগমন হয়েছে আরেক বিপ্লবী নেতৃত্বের। ৩৩ বছর বয়সী এই বিপ্লবীর নাম ফয়সাল আহমেদ খাঁন। তিনি ঢাকা পলিটিকনিক ইন্সটিটিউটে ডিপ্লোমা ইন ইন্জিনিয়ারিং কোর্স করা অবস্থায় কিডনী রোগে অসুস্থ পিতার ব্যাবসার হাল ধরেন। ২০১০ সাল থেকেই প্রতিমাসে আট নয়বার পিতার কিডনীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেয়ে ডায়ালাইসিস করানো এবং প্রতিমাসে একবার রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর ইনজেকশনের ব্যায় বহন করার টাকা যোগার করার যুদ্ধ করতে করতে ২০২০ সালে তিনি পিতৃহারা হন।
তার পিতার নাম আনিসুর রহমান খাঁন। তিনি ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুর আগে ৪৩দিন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। তিনি ছিলেন চরম বাস্তববাদী মানুষ। নীতির সাথে কখনোই আপোষ করেননি। ফয়সাল আহমেদ খাঁনের দাদা ছিলেন নৌবাহিনীর অফিসার। অবসর নেয়ার পর ভোলার চরফ্যাশনে ৭.৫ একর জমি পেয়েছিলেন কিন্তু তৎকালীন চেয়ারম্যান কৌশলে সেটি দখল করে নেয়।
মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্র আনিসুর রহমানকে জমি উদ্ধারের জন্য অসিয়ত করে যান। কিন্তু বিভিন্ন কারনে আনিসুর রহমান তার পিতার দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধার করতে পারেননি। তার মধ্যে কিডনী রোগে ভোগান্তি অন্যতম কারন। এই কারনে মুক্তিযুদ্ধ করেও তার নাম নিবন্ধন করা হয়নি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায়।মৃত্যুর ৪৩ দিন আগে ২২ জানুয়ারী তিনি পরিবারের সবাইকে ইচ্ছেশক্তি বিষয় নিয়ে তার লেখা পড়ে শোনানোর সময় বৃরেন ষ্ট্রোক করে মাটিতে পড়ে যান।
এসময় তার মুখে অাঘাত পেয়ে রক্ত গড়াতে থাকে। তারপর থেকে টানা ৪৩দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ৫ই মার্চ ২০২০সালে পিজি হাসপাতালে সন্ধ্যা ৬টা ১০ ঘটিকায় তার জীবনের ইতি ঘটে। পিতার মৃত্যুতে পাথর হয়ে যান ফয়সাল আহমেদ খান কিন্তু অন্য দশজনের মতো হাউমাউ করে কাঁদেননি। বরং নিজেকে সামলে রেখেছিলেন। পিতাকে দাফন করার পরদিনই তিনি পিতার মোবাইলে পিতার রাজনৈতিক মহলের সবাইকে পিতার মৃত্যুর সংবাদ প্রদান করেন। তখন তার সাথে পরিচয় হয় গনতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশুর সাথে। তারপর তিনি মোশরেফা মিশুর অফিসে যেয়ে দেখা করেন। সেখানে তাদের মধ্যে দেশের অবস্থা এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে সুদীর্ঘ আলোচনা হয়।
আলোচনার একপর্যায়ে ফয়সাল আহমেদ খাঁন তার পিতার অসমাপ্ত রাজনৈতিক কাজগুলো বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন। পিতার প্রতি পুত্রের এই অনুভূতিকপ অভিনন্দন জানান মোশরেফা মিশু। তার দুদিন পর মোশরেফা মিশু ফয়সাল আহমেদ খাঁনের বাসায় যেয়ে তার মাতা ফেরদৌসী রহমানকে সমবেদনা জানান। এরপর থেকেই মোশরেফা মিশুর সহযোগীতায় আদর্শ রাজনীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন ফয়সাল আহমেদ খাঁন। গঠন করতে থাকেন একের পর এক কমিটি।
ফয়সাল আহমেদ খান পিতামাতার প্রথম সন্তান। তারা দুইভাইবোব। তার ছোটবোন বিবাহিত। বর্তমানে মা আর ছেলে এই দুইজন নিয়েই তাদের পরিবার। ব্যাবসা আর রাজনীতির বাইরে অন্য কোন জগৎ নেই তার। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি একদম সাদাসিধে এবং স্পষ্টভাষী স্বভাবের মানুষ। তিনি নিরিবিলি জীবনযাপন করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি মনে করেন যে কেবল বার বার সরকার বদল করাই একমাত্র সমাধান নয়, সেই সাথে সরকারি সিস্টেম পরিবর্তন করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
Leave a Reply