২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ বেলা ১২.০০ টায় ভূক্তভোগী জনাব বকুল কুমার সরকার(৩৩), ম্যানেজার, অগ্রণী ব্যাংক, চারঘাট শাখা, রাজশাহী’র সহকর্মী জনাব নিপেন্দ্র নাথ সরকারের বিকাশের টাকা দেয়ার বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় তিনি ডিবি অফিসে আসেন এবং তার দেয়া মৌখিক তথ্য মতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন হড়গ্রাম কোর্টবাজার চৌরাস্তা সংলগ্ন প্রতারকদের ভাড়াবাসার সামনের রাস্তা হতে ভূক্তভোগীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।
ভূক্তভোগীর দেয়া তথ্য মতে তৎক্ষণাৎ সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় , জনাব মোঃ আরেফিন জুয়েল উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এর সার্বিক তত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব মোঃ রাকিবুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ, এসআই/মোঃ আমিনুর রহমান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ মহানগর ডিবি পুলিশের বিশেষ টিম প্রতারকদের নেওয়া ভাড়াবাসার মালিককে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে যে, প্রতারকরা প্রায় ০১(এক) মাস যাবত বাসা ভাড়া নিলেও নিয়মিত বাসায় থাকে না। ডিবির টিম দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নারী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে ভূয়া ডিবি ও সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণ, প্রাণ নাশের হুমকী এবং চাঁদা আদায় চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো ১। মোঃ মনোয়ার হোসেন(৩৬), (মুল পরিকল্পনাকারী এবং সাবেক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিপাহী) থানা-চারঘাট, জেলা-রাজশাহী, ২। মোঃ তুহিন সরকার(৩২), থানা-রাংগাবালী, জেলা-পটুয়াখালী, ৩। মোসাঃ সেলিনা আক্তার @ সাথী(২৫), থানা-চারঘাট, ৪। মোঃ খাইরুল ইসলাম(২৬), থানা-চারঘাট, উভয় জেলা-রাজশাহী। গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মুল পরিকল্পনাকারী মোঃ মনোয়ার হোসেন অপর প্রতারক চক্রের সদস্য মোসাঃ সেলিনা আক্তার @ সাথীকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে গত ইং ২৬/০১/২০২১ তারিখ কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন জনৈক মোঃ রিয়াজুল ইসলাম(৬৭), পিতা-কসিম উদ্দিন, হোল্ডিং নং-৪৯৫ হড়গ্রাম নতুনপাড়া(রাণীদিঘী), থানা-কাশিয়াডাঙ্গা, রাজশাহী এর বাসার তৃতীয় তলা ভাড়া নেয়। পরবর্তীতে মোসাঃ সেলিনা আক্তার @ সাথী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভূক্তভোগী বকুল কুমার সরকার (৪০), ম্যানেজার, অগ্রণী ব্যাংক, চারঘাট শাখা, রাজশাহীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে উপরোক্ত ভাড়া বাসায় কৌশলে ডেকে নেয় এবং পার্শ্বের কক্ষে লুকিয়ে থাকা অপর উপরোক্ত প্রতারক চক্রের সদস্যদের সংকেত দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে নেয়। ঐ সময় প্রতারক মনোয়ার ডিবি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে, প্রতারক তুহিন সাংবাদিক এবং প্রতারক খাইরুল ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে ভূক্তভোগীকে গ্রেফতারের হুমকী দেয়। প্রতারক খাইরুল ভূক্তভোগীর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয় এবং প্রতারক মনোয়ার ভূক্তভোগীর পিছনে নকল পিস্তল ঠেকিয়ে বলে যে, তোর কাছে যা আছে দিয়ে দে নইলে গ্রেফতার করে মেয়েসহ কোর্টে চালান করে দিব। অপর পক্ষে প্রতারক তুহিন ভূক্তভোগীকে টাকা না দিলে মেয়েসহ তার ছবি সংবাদ পত্রে প্রকাশ করে দিবে বলে হুমকী দেয় এবং মারধর করে। পরিস্থিতি দৃষ্টে ভূক্তভোগী জীবন বাঁচাতে তার পকেটে থাকা নগদ ২৬,০০০/- টাকা মুক্তিপন ও চাঁদা হিসেবে প্রতারক চক্রের সদস্যদের দিয়ে দেয়। এছাড়াও ভূক্তভোগীর নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে তার পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের নিকট হতে বিকাশের মাধ্যমে মোট-৪৪,০০০/- টাকা এনে মুক্তিপন ও চাঁদা হিসাবে দিয়ে দেয়। উক্ত বিকাশ লেনদেনের তথ্য সূত্র ধরে মহানগরের বিভিন্ন এলাকা হতে ডিবি পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রতারকদের আটক করে।
গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে ১। নকল পিস্তল,
২। হ্যান্ডকাফ, ৩। ভূয়া ডিবি জ্যাকেট, ৪। মোবাইল ০৬ টি, ৫। সিমকার্ড ০৯ টি, ৬। বিদেশী নোট- Francs Guineens-100-০১ টি, ৭। বিদেশী নোট- Bank of Korea-1000-01 টি, ৮। বিদেশী নোট- Republic of Liberia-5-01 টি, ৯। ১০০ ডলারের নকল নোট ০১ টি, ১০। সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত ছবি-০৪ কপি, ১১। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও ভূক্তভোগীর নিকট থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকার মধ্য হইতে নগদ-১৫,৫০০/- টাকা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। এ সংক্রান্তে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply