গাইবান্ধার জেলার সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন সড়কে যন্ত্র দানবের ন্যায় রাত দিন দাফিয়ে চলছে ট্রাক্টর।
চলতি ইট কাটার মৌসুমে কৃষি জমি হতে মাটি কেটে সড়ক পথে বিভিন্ন ইট ভাটায় চুক্তি ভিত্তিক মাটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাঘাটার সড়কসহ উপজেলার অভ্যন্তরীন সড়কে দিন রাত ২৪ ঘন্টা অবাধে দাপিয়ে চলছে শতাধিক মাটিবাহী ট্রাক্টর (কাঁকড়া)। এসব ট্রাক্টরের অধিকাংশ চালকরা বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে মাঝে মধ্যে ঘটেই চলেছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা।
গত মঙ্গলবার সকালে ট্রাক্টরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে মতিয়ার রহমান নামে এক চালক নিহত হয়েছে। এছাড়া ট্রাক্টরের ধাক্কায় গত দুই বছরে স্কুল ছাত্রসহ বেশ কয়েক জন নিহত হলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ট্রাক্টর চালক ও মালিকরা আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে বিরামহীন ভাবে অবৈধ ট্রাক্টর (কাঁকড়া) সড়ক পথে চালিয়ে যাচ্ছে। লাভজনক ব্যবসা হওয়ার কারণে একজনের দেখে আরেক জনও ট্রাক্টর ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। অবৈধ ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে পুলিশী ব্যবস্থা জোরদার করে নিরাপদে সড়কে চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কিছুদিন আগেই সাঘাটা-ডাবাংলা সড়ক মেরামত এর কাজ সম্পূর্ণ করা হলেও অতিরিক্ত মাটি বোঝায় ট্রাক্টর চলাচলের কারণে এই সড়কটি আবারও খানা-খন্দের শুরু হতে চলেছে। সাঘাটা সদরের উপজেলা বাসট্যান্ড, গ্রামীণ ব্যাংক মোড়, সাঘাটা বাজার চৌ-মাথা মোড় এবং পার্শ্ব রাস্তা সহ বিভিন্ন সড়কে পিছু ছাড়ছে না যানজট আর ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। এলাকার সাধারণ মানুষ বলছে, সাঘাটা থানা পুলিশ মাঝে মধ্যেই চেকপোষ্ট বসিয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বৈধ কাগজপত্র না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু পথচারিদের আতঙ্ক এসব অবৈধ ট্রাক্টর চলার ক্ষেত্রে চালক ও মালিকদের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া বা বিধি নিশেষ করছেন না পুলিশ । এমনকি এসব অবৈধ ট্রাক্টরের চালক ও মালিকদের ধারের কাছেও পুলিশের অভিযানের ছোঁয়া পৌছায় না । বেশি লাভের আশায় ট্রাক্টর মালিক পক্ষ স্বল্প বেতনে অপ্রাপ্ত বয়সের চালককে দিয়ে ট্রাক্টর চালানোর ফলে সড়কে চলাচলরত স্কুল গামী কমলমতি ছাত্র-ছাত্রী, হাট-বাজা গামী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মাঝে মধ্যে ট্রাক্টরের চাপায় আহত ও নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। তাদের ট্রাক্টর চালানোর কোন প্রশিক্ষণ না থাকায় ভ্যান চালক হেলপাররাই ট্রাক্টর মালিকদের ভরসা। যে চালক যত বেশি গতিতে গাড়ি চালানোর পারদর্শি সেই চালককে মালিকরা বেশি পছন্দ করে। পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে বিকট শব্দে, শব্দ দূষণে শিশুদেরকে নিয়ে সড়কে হাটা-চলা করতে মারাতœক ভাবে অসুবিধা হয়। এই রকম প্রতিযোগীতায় পৃষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও ছোট-খাটো যানবাহন।
এদিকে ট্রাক্টরে অতিরিক্ত মাটি বহন করার কারণে সড়কে চলার পথে ঝাকুনি খেয়ে পড়ে যাওয়ার মাটি একটু বৃষ্টি হলেই পাকা সড়কগুলো কাদামাক্ত হয়ে পড়ে । ফলে চলাচলের অনুপোযুগী হয়ে পড়ে সড়ক।
Leave a Reply