খন্দকার জলিল-স্টাফ রিপোর্টার
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও গলাচিপা-দশমিনা সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী, সাবেক ছাত্র নেতা হাসান মামুন বলেছেন, “আমার রাজনীতি শুরু হয়েছিল এরশাদবিরোধী আন্দোলনের ময়দান থেকে, আর শেষ হবে মানুষের আস্থা ও ভালবাসার মর্যাদা রক্ষা করে।”
গতকাল (১৩ আগস্ট) বুধবার রাতে ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির জনপ্রিয় রাজনৈতিক টকশো "সোজাসাপটা" অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, বর্তমান সংকট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে খোলামেলা মতামত দেন।
সাক্ষাৎকারের শুরুতেই তিনি ১৯৮০-র দশকের এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনের স্মৃতি তুলে ধরেন। সেই সময়ের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, ছাত্র রাজনীতির ত্যাগ ও তিতিক্ষার কথা তিনি আবেগভরে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, “২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, তাদের ত্যাগ কখনও বৃথা যাবে না। তাদের পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।”
অনুষ্ঠানে তিনি ভিপি নুরুল হক নুরকে নিয়েও কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “বিগত কোরবানির ঈদে নুরুল হক নুর গলাচিপা-দশমিনা সফরে এসে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন এবং আওয়ামী লীগ আমল থেকে চলমান সংস্কার একটি রাস্তা নিয়ে বিএনপিকে দোষারোপ করেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য, যার কোনো ভিত্তি নেই।” তিনি আরও বলেন, “গলাচিপা ও দশমিনার রাজনীতি ঐক্যের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে, বিভেদ তৈরি করে নয়।”
হাসান মামুন ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, “এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। কিন্তু এরই মধ্যে কিছু মহল, বিশেষ করে জামায়াত, গন অধিকার পরিষদ ও এনসিপি, নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।” তিনি দাবি করেন, জনগণের সচেতনতা ও রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যই এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করবে।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমার লক্ষ্য কেবল ক্ষমতায় যাওয়া নয়। আমি চাই গলাচিপা ও দশমিনার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ও কর্মসংস্থানে আমূল পরিবর্তন আনতে। দীর্ঘদিন এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখে থেকেছি, ভবিষ্যতেও সেই দায়িত্ব পালন করব।”
অনুষ্ঠানে উপস্থাপক যখন তার রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে প্রশ্ন করেন, তিনি বলেন, “রাজনীতি ব্যক্তিস্বার্থে নয়, জনগণের কল্যাণে হওয়া উচিত। মানুষের আস্থা অর্জনই আমার সবচেয়ে বড় সাফল্য হবে।”
সাক্ষাৎকারের পুরোটা জুড়েই হাসান মামুন যুক্তি, ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সমন্বয়ে এক গঠনমূলক বক্তব্য উপস্থাপন করেন, যা প্রচারের পর স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।