শিরোনাম :
মাদারীপুরে এনসিপি নেতার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, সোশ্যাল মিডিয়া নিন্দার ঝড় বাকৃবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ, ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল বন্ধ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র‌্যাব-১৪, এর অভিযান পরিচালনা করে ১৯ জন দালাল চক্র গ্রেফতার। আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অবাধ ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে জনগণের সরকার: আমিনুল হক রাঙ্গাবালীতে গরু চুরি করতে গিয়ে আটক ৫ উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক অসন্তোষে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: নিহত ১, আহত অন্তত ২০ কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন কারাগারে কালীগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দলের কাছে বিচার চাইলেন হামলায় আহত দুর্গাপুরের বিএনপি নেতা দুর্গাপুরে গাঁজা ও ইয়াবাসহ ৩ জন গ্রেফতার

উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক অসন্তোষে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: নিহত ১, আহত অন্তত ২০

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩৩ বার পঠিত

আশীষ বিশ্বাস
সিনিয়র স্টাব রিপোর্টার

নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিক অসন্তোষ চরম আকার ধারণ করেছে। অবৈধ ছাঁটাই, বেতন বকেয়া, নামাজের সময় না দেওয়া এবং ১৮ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামা এভারগ্রীন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকদের বিক্ষোভ আজ (মঙ্গলবার) সকালে রূপ নেয় সহিংসতায়। এতে এক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উত্তেজিত শ্রমিকরা নীলফামারী-সৈয়দপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।

শ্রমিকরা জানান, গত শনিবার থেকে তারা ১৮ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এর মধ্যে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কাজের পরিবেশ উন্নয়নের দাবি ছিল প্রধান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এসব দাবি মেনে না নিয়ে উল্টো অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। এতে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। আজ সকাল ছয়টা থেকে বিক্ষোভে নামেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলে এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস এবং গুলি চালানো হয়।

এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইকু প্যাকেজিং কোম্পানির শ্রমিক হাবিব হোসেন (২০)। আহত হন এভারগ্রীন ফ্যাক্টরির অন্তত ২০ জন শ্রমিক। নিহত হাবিব নীলফামারী সদরের সংগলশী কাজিপাড়া গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে।

নিহতের বাবা দুলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন,
“আমার ছেলে আন্দোলনে ছিল না। সে ইকু প্যাকিং কোম্পানিতে চাকরি করে। রাতের ডিউটি শেষে সকালে বাড়ি ফেরার পথে সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা গেছে। আমার ছেলেকে কেন হত্যা করা হলো? আমি এর বিচার চাই।”

হাসপাতালের সামনে নিহতের বোন কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বারবার বলতে থাকেন—
“ভাইরে, তুই তো সকালে বাড়ি আসার কথা ছিল, তোর এমন হলো কেনো? এখন আমি কাকে ভাই বলে ডাকবো।”

অন্যদিকে আন্দোলনরত শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরও কর্তৃপক্ষ আলোচনা না করে উল্টো কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এক শ্রমিক বলেন,
“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। তারা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস আর গুলি চালিয়েছে। এমনকি ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে একজন শ্রমিককেও হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।”

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফারহান তানভীর ইসলাম জানান, “সকালে ছয়জন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বাকিদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”

এছাড়া আরও বেশ কয়েকজন আহত শ্রমিককে সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ইপিজেড এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com