মোঃ মাহমুদুল হাসান
স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক মাতৃজগত
কলাপাড়া উপজেলায় ভূমি সংক্রান্ত সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে চালু হলো ‘ভূমি সহায়তা সেবা কেন্দ্র’।
এই কেন্দ্রটি তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অংশ হিসেবে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক (ডিসি) কর্তৃক অনুমোদিত একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
সেবা কেন্দ্রটি স্থানীয় উদ্যোক্তা মোঃ তোহা মোল্লা-এর পরিচালনায় ‘ভাই ভাই কম্পিউটার’-এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় সেবা কেন্দ্রটির।
ফিতা কেটে শুভ উদ্বোধন করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক, যাঁর উপস্থিতি এই কার্যক্রমের গুরুত্বকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যায়।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও সেবাগ্রহীতারা।
উদ্যোক্তা মোঃ তোহা মোল্লা বলেন, “ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে অনেক হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আমি নিজেও সেটি উপলব্ধি করেছি। তাই ভোগান্তি কমাতে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে ডিজিটাল ভূমি সহায়তা সেবা চালু করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এটি শুধু একটি কম্পিউটার দোকান নয়—এটি হবে মানুষের জন্য সহায়ক একটি হেল্প ডেস্ক, যেখানে কোনোরকম বাড়তি চার্জ ছাড়া স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য ভূমি সেবা দেওয়া হবে।”
এই সেবা কেন্দ্র থেকে এক ছাদের নিচে নিম্নোক্ত ডিজিটাল ভূমি সেবা গ্রহণ করা যাবে—
নামজারি আবেদন ও ফলাফল যাচাই, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ,পর্চা ও খতিয়ান ডাউনলোড,মিসকেস আবেদন,
অনলাইন দরখাস্ত জমা,
ভূমি সংক্রান্ত পরামর্শ ও তথ্য সহায়তা।
সেবার শুরুতেই স্থানীয় জনগণের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।
অনেকেই বলছেন, এই কেন্দ্র কুয়াকাটা ও কলাপাড়াসহ উপকূলীয় এলাকার জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা ভূমি অফিসে দীর্ঘ লাইনের ভোগান্তি, দালালের দৌরাত্ম্য এবং তথ্য বিভ্রান্তি কমাবে।
কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য,
“ভূমি সংক্রান্ত সেবা সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে অনেকেই ভূমি অফিসের জটিলতা ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়ার কারণে সমস্যায় পড়েছেন।
কলাপাড়ায় ‘ভূমি সহায়তা সেবা কেন্দ্র’ চালু হওয়ায় এই দুর্ভোগ কমবে এবং দ্রুত, স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য সেবা পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
মোঃ তোহা মোল্লা এই উদ্যোগ কুয়াকাটা, মহিপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের জন্য এক নতুন সুযোগ এবং আধুনিক সেবার যুগের শুরু।
আমি আশা করছি, জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই সেবা কেন্দ্র আরও শক্তিশালী হবে এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবে।”
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক তাঁর বক্তব্যে বলেন,“সরকারি সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এমন উদ্যোক্তামূলক উদ্যোগ অত্যন্ত ইতিবাচক। আমরা চাই—প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে ভূমি সেবা হোক আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।”