মোঃ বকুল মিয়া
ক্রাইম রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুলাল মিয়া (৪৫) নামে একটি কুখ্যাত ডাকাত ও চোরাকারবারির অত্যাচার এবং নিপীড়ন থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন করে আইনী সহায়তা চেয়েছেন উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষা রাউৎখলা গ্রামবাসী। আজ বিকেল ৫ টার দিকে রাউৎখলা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে গ্রামবাসীর উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষে কুখ্যাত দুলাল মিয়ার অসংখ্য অপকর্মের বিবরন তুলে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সরকার ফজলে রাব্বি।সংবাদ সম্মেলনে গ্রামের প্রবীণ আলি মিয়া মেম্বারের সভাপতিত্বে গ্রামবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন কায়েমপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ কামাল উদ্দিন, ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি নাছির উদ্দীন ও কায়েমপুর ইউনিয়ন সাবেক নবীন দলের সভাপতি আনোয়ার মুন্সি প্রমুখ।বক্তাগন বলেন, কুখ্যাত দুলাল ডাকাত ছিল কায়েমপুর গ্রামের বাসিন্দা। সেখানে তার চুরি,ডাকাতি ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে গ্রামবাসী একজোট হয়ে তাকে ও তার পরিবারকে গ্রাম থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে পরিবারের অনুরোধে গ্রামের একপাশে বসবাস করার সুযোগ দেয়। কিন্তু সেখানে কিছুদিন তার অপকর্ম বন্ধ থাকলেও বিগত সরকারের স্থানীয় কতিপয় নেতৃবৃন্দের ছত্রছায়ায় আবারও নেমে পড়ে ডাকাতি ও মাদক চোরাকারবারিতে। অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকতিয়ার আলম রনির সংগে সখ্যতা গড়ে তুলে অপকর্মে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠে দুলাল মিয়া। পরে আবারও গ্রামবাসী একজোট হয়ে গ্রাম থেকে বের করে দেয়া কুখ্যাত ডাকাত ও চোরাকারবারি দুলাল মিয়াকে। সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে আশ্রয় নেয় একই ইউনিয়নের রাউৎখলা গ্রামের সীমান্তের শুন্য রেখার কাছে। এখানে এসে আরও বেপরোয়া গতিতে চলতে থাকে তার অপকর্ম। অসংখ্য চুরি ডাকাতি সংগঠিত হয় তার নেতৃত্বে এই গ্রামে। বিগত সময়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেতনা গ্রামবাসী। কারন বিগত সরকারের অসাধু নেতাকর্মীদের সহায়তায় তার অত্যাচার আরও বেড়ে যাওয়ার ভয় কাজ করতো গ্রামবাসীর মাঝে। পট পরিবর্তনের পর এলাকার কতিপয় অসাধু বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় মিশে গিয়ে দুলাল ডাকাত গং যেন ওই চুরি,ডাকাতি ও মাদক পাচারে রাউৎখলা গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোতেও জনসাধারনের কাছে আতংক হয়ে উঠে। সম্প্রতি চলতি মাসের ৭ তারিখ তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ডাকাতি করতে রাউৎখলা গ্রামের তাহের মিয়ার বাড়িতে হানা দেয়। ডাকাতির সময় তাহের মিয়ার স্ত্রী রেনুয়ারা বেগম (৫০) দুলাল মিয়াকে চিনে ফেলে তাকে জাপটে ধরে আর্তচিৎকার শুরু করলে দুলাল ডাকাত তার হাতে থাকা দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে প্রাণে ফেলার চেষ্টা করে রেনোয়ারা বেগমকে। রেনোয়ারা বেগমের আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসার আগেই নগদ ৮৫ হাজার টাকা, একাধিক এন্ড্রয়েড মোবাইল ও প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালঙ্কারসহ মালামাল নিয়ে দুলাল ডাকাত ও তার সাঙপাঙ্গরা পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় রেনোয়ারা বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এখনো রেনোয়ারা বেগম চিকিৎসাধীন।এ ঘটনায় দুলাল ডাকাত ও তার সঙ্গী আলো আমিন গংদেরকে আসামী করে কসবা থানায় এজাহার দায়ের করেছেন রেনোয়ারা বেগমের স্বামী আবু তাহের মিয়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি গ্রামবাসীর দাবী কুখ্যাত ডাকাত ও চোরাকারবারি দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যেন তার সকল অপকর্মের হাত থেকে রেহাই পায় গ্রামবাসী ও উঠতি প্রজন্ম। সম্মেলনে বক্তাগন জানান, নিজের অপরাধ ঢাকতে গ্রামের বেশ কয়েকজনকে আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে অভিযুক্ত দুলাল মিয়া।এ বিষয়ে জানতে চাইলে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুল কাদের জানান, এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply