মানজারুল ইসলাম মিলন।
শরীয়তপুর৷ প্রতিনিধি,
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি থেকে ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে অসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছে ইউএনও’র বিরুদ্ধে
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থানের পর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সারাদেশের ন্যায় জাজিরা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি গঠনে অন্যতম শর্ত ছিল নিয়মিত খেলাধুলার সাথে জড়িত এমন ব্যক্তিদের সদস্য করতে হবে।
সে অনুযায়ী গত ১৬ জানুয়ারি পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহবায়ক ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি এডহক কমিটি গঠন হয়।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- খেলোয়ার ও রেফারি মো: রাজিব মিয়া, খেলোয়ার ও কোচ বন্যা রহমান, সর্বজন গ্রহণযোগ্য ক্রীড়ানুরাগী শিক্ষক মো: মতিউল ইসলাম সেলিম, ক্রীড়া সম্পৃক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মো: হানিফ বেপারী ও ক্রীড়া সাংবাদিক শাওন বেপারী।
তবে, ওই কমিটি গঠনের ৭ মাসেও উপজেলার ক্রীড়াঙ্গন সুশৃঙ্খল রাখতে ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা, পরামর্শ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কোন ধরণের সভার আয়োজন করা হয়নি।
কিন্তু কমিটিতে থাকা ২ জন সদস্যকে বাদ দিয়ে অন্য দুজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাদের খেলাধুলার সাথে কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। আর এই সংযোজক-বিয়োজনটি করে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) কাবেরী রায়।
গত ২৬ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কাছে একটি সুপারিশপত্র প্রেরণ করেন। যা গত ১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের(সার্বিক) কার্যালয় থেকে অনুমোদন করা হয়। বাদ দেয়া সদস্যরা হলেন- ক্রীড়া সম্পৃক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মো: হানিফ বেপারী ও ক্রীড়া সাংবাদিক শাওন বেপারী।
তাদের বিপরীতে অন্তর্ভুক্ত করায় হয়েছে ক্রীড়া সম্পৃক্ত ছাত্র প্রতিনিধি ক্যাটাগরিতে জাজিরা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম সোহেল রানা ছৈয়াল। এবং ক্রীড়া সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে সানজিদ মাহমুদ সুজন নামে এক ব্যক্তিকে।
কমিটি থেকে বাদ পড়া সদস্যরা বলেন, বিগত দিনে যেভাবে এই কমিটি নামমাত্র গঠন করে সরকারের থেকে আসা বিভিন্ন বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বর্তমান ইউএনও এই কাজটি করেছেন। নয়তো যাদের ক্রীড়ার সাথে কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হতো না। যদি আমাদের থেকে বেশী খেলাধুলায় সক্রিয় ব্যক্তিদের নেয়া হতো তবে বিষয়টি মেনে নেয়া যেত।
এছাড়াও কোন গাফিলতির কারনে আমাদের বাদ দেয়া হলো তাও জানানো হয়নি।
তারা আরও বলেন, কমিটি গঠনের ৬-৭ মাস পেরিয়ে গেলেও ওই কমিটির কোন ধরণের সভার আয়োজন করা হয়নি। এতেই বোঝা যায় বর্তমান ইউএনও প্রকৃতভাবে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মন রক্ষার্থে এই কমিটির সদস্যদের সংযোজন-বিয়োজন করেছেন। বিষয়টি হতাশাজনক।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, আমার মনে হয়েছে পরিবর্তন করা প্রয়োজন তাই করেছি। ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে অসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার কারন জানতে চাইলে, তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
জানতে চাইলে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো: ইমরুল হাসান বলেন, ‘লোকাল এডমিনিস্ট্রেশন যেটি সুপারিশ করে তার উপর ভিত্তি করে অনুমোদন দেয়া হয়।’
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমার জানা নেই। বিষয়টি জানতে ইউএনও’র কাছে জিজ্ঞেস করব।’’
Leave a Reply