খন্দকার জলিল,  জেলা ব্যুরো প্রধান পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর গলাচিপা সদর ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রাম থেকে ফারজানা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের মজিবর মোল্লার ছেলে মো. শাকিল মোল্লা (২৩) ওরফে শাকিব তিন মাস আগে রতনদী তালতলী ইউনিয়নের দেওয়ানবাজার এলাকার মৃত অলিউল চৌকিদারের মেয়ে ফারজানা আক্তার (২০) কে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে নবদম্পতি ওই বাড়িতেই বসবাস করছিলেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। সন্ধ্যার কিছু আগে মজিবর মোল্লার ছোট ছেলে রাতুল (১০) বাসায় ফিরে পিছনের বারান্দায় গিয়ে চৌকির পাশে আড়ার সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ফারজানার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘটনাটি দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে গলাচিপা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে গলাচিপা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠায়। ফারজানার শাশুড়ি রিনা বেগম বলেন, “ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। বড় ছেলের স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গলাচিপা গিয়েছিলাম। ফিরে এসে এই দৃশ্য দেখি।” ফারজানার স্বামী শাকিল মোল্লা বলেন, “আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরে বাড়ি ফিরে দেখি আমার স্ত্রী ঝুলন্ত অবস্থায়।” এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, যেভাবে ফারজানার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে, তাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করি এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। তদন্ত চলছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ফারজানার আকস্মিক মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে দুই পরিবারে। স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না, সদ্যবিবাহিত এ তরুণী আর নেই। অন্যদিকে, পুরো উত্তর বোয়ালিয়া গ্রাম জুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ফারজানা ছিলেন শান্ত স্বভাবের, তার এমন অকাল মৃত্যুতে এলাকাবাসী হতবাক ও মর্মাহত।