
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করায় এলাকায় গুঞ্জন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে উপজেলার কেদারনগর গ্রামের আবু বকর ও জরিনা বেগমের একমাত্র ছেলে রেজাউল ১৯৯৭ সালে বিয়ে করেন আলমডাঙ্গার নওদাবন্ডবিল গ্রামের রফিক উদ্দিন বকার মেয়ে মমতাজ পারভিনকে। তাদের ঘর আলোকিত করে ২ টি ছেলে সন্তান আজিজ আহমেদ জীবন ও রাকিবুল হাসান পিয়াস জন্ম লাভ করে। ভালোই কাটছিল তাদের সংসার কিন্তু মমতাজ পারভিন তার স্বামীকে বিদেশ গিয়ে অনেক টাকা ইনকাম করার জন্য বলে। বেচারা স্বামী রেজাউল পরিবারের সবাইকে অধিক সুখে রাখার আসায় ইউরোপের গ্রীসে পাড়ি জমান। রেজাউলের ইনকামের সব টাকা স্ত্রী মমতাজ ও দুই ছেলের নামে পাঠান। রেজাউল বিদেশে থাকায় এবং বাবা বৃদ্ধ হওয়ায় দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ফরিদপুর গ্রামের আরজ মালিতার ছেলে বিএনপি নেতা কামাল মালিতা বাড়ির বিভিন্ন কাজ করে দেওয়ার সুবাদে রেজাউলের স্ত্রী মমতাজের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মমতাজ আর গ্রামের বাড়িতে থাকতে চায় না। আলমডাঙ্গা শহরে বাসা ভাড়া করে বিএনপি নেতা কামালকে নিয়ে গোপনে বসবাস শুরু করে। একদিন রেজাউলের মা ছেলের বউ ও পোতাছেলেদের জন্য গ্রাম থেকে আলমডাঙ্গা শহরের ভাড়া বাসায় খাবার নিয়ে যান। বাসায় গিয়ে দেখে কামাল খালি শরীরে মমতাজের খাটে শুয়ে রয়েছে। একইরুমে কেন জিজ্ঞেস করলে কামাল এবং মমতাজ রেগে গিয়ে কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তখন রেজাউলের মা জরিনা বেগম তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলে আসেন। এ ঘটনা রেজাউল কে তার মা জানালে স্ত্রী মমতাজের সাথে ঝগড়া ও কথা কাটাকাটি হয়। কামাল আওয়ামী লীগ নেতা তারাচাঁদ মেম্বার ও আওয়ামী পুলিশের সহযোগিতায় রেজাউলের মা জরিনা বেগম কে ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং তারিখে বাড়ি থেকে তুলে থানায় নিয়ে গিয়ে স্ট্যাম্পে টিপ সই করে নেয়। বলা হয় ছেলের বউ মমতাজের সাথে ঝগড়া হয়েছে তার আপোষ নামা। এভাবেই ঝগড়া মান অভিমানের মধ্যে চলতে থাকে। জরিনা বেগম পরবর্তীতে আবার সেই বাসায় খাবার নিয়ে গেলে আর সেখানে তাদের দেখা পায় না। বাসা খুঁজে নতুন বাসায় গিয়ে দেখতে পান খালি শরীরে কামাল শুয়ে আছে মমতাজের বিছানায়। আবারও মেরে ফেলার পরিকল্পনা বুঝতে পেরে পালিয়ে চলে আসেন। কামাল আপষ নামার সেই স্ট্যাম্পের উপর ভিত্তি করে মমতাজকে বাদী করে চুয়াডাঙ্গা জজ কোর্টে মামলা দায়ের করে। মামলায় লেখা ছিল রেজাউলের স্ত্রী মমতাজ পারভিন ও পোতাছেলে ২ জনের জন্য প্রতিমাসে ২২ হাজার টাকা এবং খোরাকি বাবদ প্রতি বছর ৩৫ মন ধান দিতে হবে। পরবর্তীতে রেজাউলের মা জরিনা বেগম ও পিতা আবু বকর এর নামে মিথ্যা মামলা করে। সে মামলায় বৃদ্ধ মা বাবা জেল খাটেন। এলাকায় আরও গুঞ্জন রয়েছে কামালের সাথে পরকীয়ার বিষয়টি মমতাজের পিতা রফিক জানার পর বিষ পান করে মারা যান। বিএনপি নেতা কামালের সাথে স্ত্রীর পরকীয়ার খবর জানতে পেরে রেজাউল ২০২৪ সালের ২২ শে এপ্রিল দেশে চলে আসেন। বিএনপি নেতা কামাল আওয়ামী লীগ নেতা তারাচাঁদের সহযোগিতায় আওয়ামী পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে রেজাউলের উপর মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে ২ দফায় হামলা করে বেলগাছি পুরাতন বাজার ও কেদাররগর স্কুল প্রাঙ্গণে বকুলের বাড়িতে। এতে রেজাউল গুরুতর আহত হন। জোর পূর্বক মমতাজকে তালাক দিতে বাধ্য করে। দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে রেজাউল ২৫ শে জুন আবার গ্রীসে চলে যান। বিএনপি নেতা কামাল রেজাউলের স্ত্রীকে নিয়ে বসবাসের খবর এলাকার মানুষের গল্পের খোরাক হয়ে গুঞ্জন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তখন থেকে কামাল প্রকাশ্য মমতাজ কে নিয়ে আলমডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের কোরবানের বাসায় বসবাস করে। এতে আলমডাঙ্গায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়, যা এখনো চলমান রয়েছে। এরপর মমতাজ রেজাউলের বিরুদ্ধে যৌতুকের মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এতকিছুর পরও রেজাউল তার দুই ছেলেকে খরচের টাকা নিয়মিত পাঠান। বিএনপি নেতা কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি তখন মমতাজের কাছে ছিলেন এবং বলেন, মমতাজের সাথে আমার বিয়ে হয় নি। আমি শুধু মমতাজ ও তার দুই ছেলেকে খোঁজখবর রাখি। এব্যাপারে মমতাজ পারভিন বলেন, আমি কার সাথে থাকবো নাকি বিয়ে করবো এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। বেলগাছী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা শুনেছি কামাল মমতাজ কে নিয়ে একসাথেই সাথে। দলের বদনাম হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলের বদনাম হচ্ছে সেজন্য আমরা দলের সমস্ত কার্যক্রম থেকে কামালকে অব্যাহতি দিয়ে রেখেছি। রেজাউলের বৃদ্ধ মা বাবার সাথে কথা বললে তারা জানান মমতাজের দেওয়া মিথ্যা মামলা থেকে কিভাবে রেহাই পাবেন সেজন্য ঘুরছেন বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে।
Leave a Reply