সুনামগঞ্জের ছাতকে আখলাকুর রহমান উরফে আখলাদ (৩৫) নামের এক ব্যবসায়ী দূর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছেন। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বুড়াইরগাঁও গ্রামের দক্ষিণের জমি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। সে পার্শ্ববর্তী মোল্লাআতা গ্রামের জাহির আলীর ছেলে ও গোবিন্দগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকায় হোছন সুপার মার্কেটের সামনে খোলাবাজারে তৈল, ডাল, আলু, পিঁয়াজ, লবন, মরিচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল বিক্রি করতো আখলাকুর । প্রতিদিনের মত রাত প্রায় সোয়া ১০টার দিকে আখলাকুর দোকান বন্ধ করে সওদাপাতি নিয়ে বাই সাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। বুড়াইরগাঁও-বাউভোগলী সড়কের বুড়াইরগাঁও গ্রামের দক্ষিণের কবরস্থান এলাকা অতিক্রম করার পর পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা দূর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে বাই সাইকেল থেকে পাকা রাস্তায় ফেলে দেয়। প্রাণে বাঁচতে ব্যবসায়ী রক্তাক্ত অবস্থায় ধানের জমিতে দৌড় শুরু করে কিন্তু বাঁচতে পারেনি। দূর্বৃত্তরা তাকে কাঁদাযুক্ত জমিতেই মুখ থুবড়ে ফেলে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
বুড়াইরগাঁও গ্রামের দক্ষিণে রাস্তার এক পাশে বাইসাইকেল ও সওদাপাতি অপর পাশে রাস্তায় রক্ত দেখতে পায় রাত প্রায় সোয়া ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন। পরে তারা বিষয়টি গ্রামের মানুষকে অবহিত করে। এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য সুরেতাজ মিয়াসহ গ্রামের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান এর মাধ্যমে থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করার পর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। তারা ঘটনারস্থল থেকে প্রায় একশ’গজ দূরে সদ্য রোপনকৃত ধানের কাঁদা জমি থেকে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের পর স্বজনরা তাদের আখলাকের লাশ সনাক্ত করেন। পাকা রাস্তায় রক্তমাখা পায়ের চাঁপ দেখে স্থানীয়দের ধারণা দূর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে পাশের খালের ওপর সেতু দিয়ে দক্ষিণ দিকে চলে গেছে।
খবর পেয়ে রাতেই ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান সুন্দর আলী, ব্যবসায়ী রুহুল আমীন, কাজী মাওলানা আবদুস সামাদ, আবু হানিফা সায়মন, ফখর উদ্দিনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ব্যবসায়ী আখলাককে হত্যাকারী দূর্বৃত্তদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য উপস্থিত পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান। তাদের দাবী, পুলিশ ইচ্ছে করলেই দ্রুত এ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে পারবে।
থানার উপ-পরিদর্শক শামসুল আরেফিন জানান, সোমবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply