৬৫ দিনের অবরোধ শেষে অনেক আশা বুকে ধারণ করে গভীর সমুদ্র থেকে প্রচুর মাছ শিকার করবে এবং দায়দেনা পরিশোধ করবে জেলেরা, তবে এখন সেই আশা উল্টো হচ্ছে, শুন্য ট্রলার নিয়ে মলিন মুখে কুল প্রান্তে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। জালভরা ইলিশ ধরার স্বপ্ন নিয়ে দিন-রাত নদী এবং সাগরে কাটাচ্ছেন জেলেরা। কিন্তু পর্যাপ্ত ইলিশ না পেয়ে ফিরতে হচ্ছে হতাশ হয়ে। গতকাল কুয়াকাটা মহিপুরের জেলেদের এমন ধরন দেখে হতাশ সাধারণ মানুষসহ মালিকরা ।
আষাঢ় মাস ও শ্রাবণেও ইলিশের দেখা মেলেনি। এখন ভাদ্রের মাঝামাঝি সময়েও বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় নদ-নদীতে তেমন একটা দেখা মিলছে না ইলিশের। জেলেরা নদ-নদী ও সাগর থেকে ফিরছেন ‘খালি’ হাতে। যা-ও ইলিশ পাচ্ছেন, তা বিক্রি করে উঠছে না খরচ। অথচ এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। বাজারে ইলিশের দাম চড়া।
এদিকে অবরোধ শেষে অনেকদিন যাবত সাগর উত্তাল থাকায় মাছ শিকার করতে সাগরে নামতে না পেরে চিন্তিত হয়েছিল জেলেরা, মূলত আবহাওয়ার খামখেয়ালি স্বভাবকেই ইলিশের আকালের জন্য দায়ী করছেন মৎস্যজীবীরা। তাঁরা বলছেন, তিনটি লঘুচাপ, এর ওপরে উজানের পানির কারণে জেলেরা অন্তত ১৫ দিন ছিলেন ঘরে। এখন বন্যার পানি নদী থেকে সাগরে ছুটছে। উজানের পানির স্রোত এতটাই প্রকট যে, তা অতিক্রম করে ইলিশের অভয়াশ্রমে (নদী) ফেরা প্রায় অসম্ভব। বন্যার আগে জেলেরা বারকয়েক গভীর সমুদ্রে গেলেও ইলিশের ঝাঁক সেভাবে আটকায়নি জালে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষিত নদী তথা জলে নুনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ইলিশের উজানে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এখনো আশার বাণী শোনা যাচ্ছে মহিপুর কুয়াকাটার জেলেপল্লীতে, সাগরের অবস্থা স্বাভাবিক হলে, মাছের দেখা মিলবে তাদের পল্লীতে এবং দায়দেনা পরিশোধ করে কিছুটা হল স্বাভাবিক হতে পারবে তারা।
কুয়াকাটার জেলে দেলোয়ার মোল্লা বলেন, ৬৫দিন অবরোধ এরপরে সাগরে মৎস্য শিকার করতে গেছিলাম কিন্তু খালি নৌকা নিয়ে তরে আসতে হয়েছে । আলিপুরের জেলে হারুন আকন জানান, সাত দিন যাবত সাগরের মধ্যখানে মাছ শিকার করার জন্য ছিলাম কিন্তু যে কয়টা মাছ পেয়েছি সেই মাছ দিয়ে নিজের স্টাফদের খরচ দেওয়াও অসম্ভব তিনি আরো বলেন ২ লাখ টাকার বাজার নিয়ে সাগরের ভিতরে গেছি, কিন্তু মাছ না পাওয়ায় সব খরচ এখন গায়। এভাবে শত জেলেদের হতাশ মুখে ফিরতে হয়েছে কুলে।
খান ফির্শ এর মালিক,রহিম খান বলেন, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও আহরণ নিশ্চিত করতে বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই (৬৫ দিন) সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে উপকূলের জেলেরা ইলিশ শিকারে গিয়েছিলেন গভীর সমুদ্রে। কিন্তু বেশির ভাগ জেলেই ফিরেছেন সামান্য ইলিশ নিয়ে। তবে অবস্থা স্বাভাবিক হলে সাগরের জেলেরা তাদের নিজেদের ইচ্ছামত জাল ফেলাতে পারলে মাছ দেখা যাবে কুয়াকাটা পৌর মেয়র বাজারে
কুয়াকাটা আশার আলো জেলা সমবায় সমিতির সভাপতি নিজাম শেখ বলেন, ট্রলার মালিকরা মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরতে জেলেদের পাঠিয়ে খরচের টাকাও উঠাতে পারছেন না।
সমুদ্রে মাছ না হওয়ায় জেলেদের দিন চলছে এখন হতাশে, তারপরও অতি আগ্রহ নিয়ে আল্লাহতালার উপর ভরসা করে গভীর সমুদ্রের মাছ হবে এমন আশায় দিন পার করছেন।