
মোঃ রাশেদ আল শাহরিয়া
স্টাফ রিপোর্টার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া একটি সৌন্দর্যমণ্ডিত উপজেলা। সেই সৌন্দর্যকে আরও বর্ধিত করতে আখাউড়া পৌরসভার উদ্যোগে পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের নারায়ণপুর বাইপাস মোড়ে ‘I LOVE AKHAURA’ লেখা একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। নান্দনিক এই উদ্যোগের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ প্রশংসার দাবি রাখে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
তবে স্থাপনাটির অবস্থান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে গুরুতর উদ্বেগ। সংশ্লিষ্ট স্থানে চারটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এসে মিলিত হয়েছে, যা স্থানীয়দের কাছে নারায়ণপুর বাইপাস বা চার রাস্তার মোড় হিসেবে পরিচিত। অতীতে এই মোড়ে একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের রাস্তা পারাপার হতে হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আব্দুল হান্নান বলেন,
“এই মোড়টাতে আগেও অনেক দুর্ঘটনা হয়েছে। এখন আবার রাস্তার গা ঘেঁষে স্থাপনা করা হলে মানুষ ছবি তুলতে এসে রাস্তায় নেমে পড়বে। তখন দুর্ঘটনা হওয়াটা শুধু সময়ের ব্যাপার।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা রওশন আরা বেগম বলেন,
“সৌন্দর্য অবশ্যই দরকার, কিন্তু মানুষের জানের নিরাপত্তা তার চেয়েও বেশি জরুরি। এখানে ফুটপাত পর্যন্ত রাখা হয়নি, এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।”
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, স্থাপনাটি উদ্বোধনের পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সী দর্শনার্থীরা এখানে ভিড় জমাবেন এবং ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। অথচ এই সড়ক দিয়ে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই উচ্চগতিতে বাস, ট্রাক, সিএনজি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে।
স্থানীয় যুবক ও সমাজকর্মী ইমরান হোসেন বলেন,
“আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে না। কিন্তু পরিকল্পনাটা যদি নিরাপত্তার কথা না ভেবে করা হয়, তাহলে সেই উন্নয়ন মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থাপনাটি নির্মাণের সময় মূল সড়কসংলগ্ন ফুটপাত ও নিরাপদ খালি জায়গা রাখা হয়নি। একেবারে সড়কের গা ঘেঁষে নির্মাণ করায় দর্শনার্থীরা স্থাপনা থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই মূল সড়কে চলে আসছেন। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হওয়ায় স্থাপনাটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা আখাউড়া পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার পাশাপাশি পথচারী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও সমানভাবে জরুরি।
Leave a Reply