স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরাঃ
সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল স্পন্দন ল্যাব থেকে নবজীবন স্কুল হয়ে তেঁতুলতলা সায়েরের খাল পর্যন্ত ব্যস্ততম রাস্তায় ড্রেনেজ কালভার্ট ও সড়ক নির্মাণের কাজ চললেও তা এখন স্থানীয় মানুষের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন এই সড়কটি নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেসার্স স্টোন ব্রিকস্ ও ইকবাল জমাদ্দার এন্ড কনর্সোটিয়াম এর ঠিকাদার ইকবাল জমাদ্দার কাজের গুণগতমান তোয়াক্কা না করে, অদক্ষ লেবার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে কাজ পরিচালনা করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনো ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি, নিরাপত্তা বা বিকল্প রাস্তা না রেখেই বাড়ির পাঁচিল ভেঙে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে ঠিকাদার। সড়কের বিভিন্ন অংশে খোঁড়াখুঁড়ির পর সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্ত যা বর্তমানে এলাকাবাসীর জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
এই অবস্থায় হঠাৎ কোনো শিশু বা পথচারী পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরব। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই রাস্তা দিয়ে নবজীবন স্কুলের শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাটি কয়েকটি স্থানে এতটাই ভেঙে পড়েছে এবং সংকীর্ণ হয়ে গেছে যে, সেখানে একটি বাইসাইকেলও চালানো যাচ্ছে না।
শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে ঘুরপথে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পৌঁছাচ্ছে, আবার কেউ কেউ সময়মতো পৌঁছাতে না পেরে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে। এই দুরাবস্থার মধ্যে কাঠের একটি সাঁকো বানিয়ে অস্থায়ী চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও, সেটিও বর্তমানে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে এলাকাবাসীর চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু, নারী এবং অসুস্থ মানুষজন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বাসিন্দারা জানান, ঠিকাদারের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতায় তারা যেন নিজের বাড়িতেই বন্দি হয়ে পড়েছেন। কেউ অসুস্থ হলে বা কোনো জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলেও মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অথচ কাজটি যথাযথ পরিকল্পনা ও তদারকির মাধ্যমে দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করা যেত।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, “রাস্তার কাজের শুরুতে আমরা ভেবেছিলাম দুর্ভোগের অবসান হবে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কাজ না করলেই ভালো ছিল। বাড়ির পাঁচিল ভেঙে দিয়েছে, রাস্তায় চলাচল বন্ধ, কোনো বিকল্প রাস্তা নেই, আমরা তো বন্দি!” অপর এক এলাকাবাসী বলেন, “ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে, রাস্তার এমন অবস্থা যে একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ঠিকাদার কাজ শুরু করেই ফেলে রেখেছে। মাসের পর মাস কেটে যাচ্ছে কেউ খোঁজ নেয় না।”
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বা প্রকৌশলী দপ্তরের কোনো কার্যকর তদারকি না থাকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, এমন দায়িত্বহীন ও জনগণের জীবনকে হুমকিতে ফেলা কার্যক্রম কেন চলতে দেওয়া হচ্ছে? এলাকাবাসীর জোর দাবি, দ্রুত সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে জনদুর্ভোগ লাঘব করতে হবে। পাশাপাশি যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এমন অব্যবস্থাপনা ও জনভোগান্তির সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে এলজিইডি’র সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।