
খন্দকার জলিল, জেলা ব্যুরো প্রধান, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকার পরিষদের আয়োজনে সাংবাদিক, শিক্ষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় গলাচিপা উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে এ সভার আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সভায় নুরুল হক নুর গলাচিপা–দশমিনা অঞ্চলের দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, ভাঙা রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংকট ও স্থবির উন্নয়ন পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, সংসদে যেতে পারলে দেশের উন্নয়ন এই অঞ্চল থেকেই শুরু করবেন। তিনি জানান, গলাচিপা-দশমিনা তার জন্মভূমি এবং এখান থেকেই তিনি ট্রাক মার্কায় নির্বাচন করবেন।
তফসিল ঘোষণার প্রসঙ্গে তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে তার জন্য দোয়া করে বলেন, সুস্থতার কারণে নির্বাচন পিছিয়ে এপ্রিল পর্যন্ত যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু দলের প্রধান হয়েছি, সুযোগ হলে দেশের প্রধানও হতে পারি।
সভায় অংশ নেওয়া শিক্ষকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব, ম্যানেজিং কমিটিতে অযোগ্য ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি, শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সমাবেশে বাধ্য করা এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ওপর অযাচিত চাপের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিসেস মুক্তা বেগম বলেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায় কার্পেটিং সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। কাজ শেষ হওয়ার পরই মানুষ হাত দিয়ে তা টেনে তুলে ফেলতে পারে। একটি রাস্তা এক বছরও টেকে না। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে দেশ এগোবে কীভাবে—প্রশ্ন তুলেন তিনি।
গলাচিপা প্রেসক্লাবের সভাপতি খালিদ হাসান মিল্টন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে গভীর সংকট রয়ে গেছে।
বক্তারা বলেন, শিক্ষক জাতি গঠনের কারিগর এবং সাংবাদিক সমাজের আয়না। দুই পেশার সমন্বয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন দ্রুত আসে। গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় তারা কাজ করছে এবং স্থানীয় সমস্যাগুলো শিক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা সম্ভব।
নুরুল হক নুর শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, তিনি সবসময় ন্যায়সংগত দাবির পাশে থাকবেন।
রাজনৈতিক জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি, জোট আলোচনায় তাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
শিক্ষকরা আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ এবং শিক্ষার্থীদের নৈতিক উন্নয়নে আরও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা সত্য ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের গুরুত্ব উল্লেখ করেন।
সামগ্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক এ মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, গলাচিপা অঞ্চলে শিক্ষা, সামাজিক ন্যায্যতা ও উন্নয়ন জোরদারে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply