দূর্গাপুর( রাজশাহী) প্রতিনিধি
মোঃ ইসমাইল হোসেন নবী
রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে সেবার মান কমেছে ভোগান্তি, জনমনে প্রশান্তি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চিকিৎসা সেবায় আলোর মুখ দেখেছে দুর্গাপুর উপজেলাবাসী। বদলে গেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার পুরো চিত্র। যোগ হয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও লোকবল। সংকট কাটিয়ে স্বচ্ছল হয়েছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিশেষায়িত রোগ নিরূপন যন্ত্রগুলো। সেবার মানে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে বললেন সেবা নিতে আসা রোগীরা।
সেবা নিতে আসা কয়েকজনের কাছ থেকে খোজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলাতে বৃহত্তর কোন বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান না থাকায় প্রায় ৩ লক্ষ্য উপজেলাবাসীকে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপরেই প্রত্যক্ষভাবে নির্ভর করতে হয়। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে নানা অনিয়ম দুর্নীতি অবহেলায় প্রায়ই সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছে এই হাসপাতাল। প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া বেশিরভাগ রোগীদের ছুটে যেতে হতো শহরের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক সময় সরকারি হাসপাতালে সব রোগের একই ধরনের ঔষধ মিলতো। কিন্তু বর্তমানে মিলছে বিভিন্ন রোগের দামি দামি নানা ঔষধ। আবার উল্লেখযোগ্য কিছু রোগের পরিক্ষা ছাড়া সবই করতে হতো বাহিরে। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরো কার্যক্রমে। এখন সব গুলো পরিক্ষা হাসপাতালেই হচ্ছে।
এছাড়াও গর্ভবতী ও গর্ভ পরবর্তী সেবা কেন্দ্র ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার কেন্দ্র। মহিলাদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু। সিজারিয়ান সেকশন চালু। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য রক্ত সঞ্চালন করার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। মিডওয়াইফ দ্বারা চব্বিশ ঘণ্টা নরমাল ডেলিভারি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। কনফারেন্স রুম সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে।
এদিকে আউটডোরে সুন্দর হেল্প ডেস্কে টিকিট কাউন্টার তৈরি করা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স এর ভাড়া একেবারে সীমিত করা হয়েছে। খাবারের মান বজায় রাখতে বিশেষ মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে রান্নার পূর্বে ও পরে বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিস কক্ষের সামনে বিশেষ অভিযোগ বক্স চালু করা হয়েছে যার মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের পরিচয় গোপন রেখে সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।
আলতাফ হোসেন নামের এক রোগী জানান,
অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। সাথে কোনো টাকা ছিল না কখনো কল্পনাও করেনি হাসপাতাল থেকে সকল ঔষধ বিনামূল্যে ও সুন্দর খাবার পরিবেশন করা হবে। সবকিছু মিলিয়ে বিনামূল্যে অনেক ভালো চিকিৎসা পাচ্ছি আমি।
রোগী আলেয়া বেগম জানান, আগে হাসপাতাল থেকে সর্বোচ্চ গ্যাসের ঔষধ পাওয়া যেত। সকল রোগের অধিকাংশ সময়ে একই ঔষধ দিত। সেদিন ৫ টাকার একটি টিকিট কেটে ডাক্তারের কাছে গেলাম। ভাবলাম যে ঔষধগুলো লাগবে সেগুলো বাহির থেকে কিনব। কিন্তু অবাক হলাম তিনি কাউন্টারে যেতে বললেন ওষুধের জন্য। সকল ঔষধগুলো বিনামূল্যে দিল।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডাঃ মোহাম্মাদ রুহুল আমিন জানান, আমি হাসপাতালের টিএইচও এর দায়ীত্ব পাওয়ার পর থেকে সেবার মান বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আপনারা নিশ্চয় প্রত্যক্ষ করেছেন হাসপাতালের বিভিন্ন নতুন সেবা চালু হয়েছে। আরো অনেক নতুন কর্মপরিকল্পনা রয়েছে আমাদের হাসপাতালের জন্য।
ভালো কিছু করতে পারলে নিশ্চয়ই সাধারন মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা আমার কাছে সবথেকে বড় পাওয়া হবে।