আজ,ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ শেখ কামাল এর ৭২তম জন্মবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে পিতা মুজিব ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শাহাদাতবরণ করেন শেখ কামাল।
দিনটি পালন উপলক্ষে ধোবাউড়া উপজেলা প্রাশাসন কতৃক আয়োজিত উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফিকুজ্জামানের সভাপত্বিতে,বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর শ্রদ্বাঞ্জলি অর্পন করেন।
শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রাধান অথিতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ধোবাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিস্টার ডেভিড রানা চিসিম,সহকারী কমিশনার (ভূমি)মাহমুদা হাসান,ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এর ( ভারপ্রপ্ত)সভাপতি বীব মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোজাম্মেল হোসাইন,মহিলা কলেজ এর অধক্ষ্য মোঃ হেলাল উদ্দিন, ধোবাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কামাল আজাদ, উপজেলা প্রকৌশলী শাহিনুর ফেরদৌস,প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জহিরুল ইসলাম, উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইসতিয়াক হোসেন উজ্জল,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার তুষার,প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা লায়লা আকতার,এবং সকল শিক্ষকবৃন্দ,এবং বিভিন্ন ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতীবৃন্দ,বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। শহীদ শেখ কামালের জন্মদিন সরকারিভাবে এদিনটি পালিত হচ্ছে।পরে গাছে চারাও বিতরণ করেন।
শহীদ শেখ কামাল ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে আক্রমণ করার আগমুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি এ অনার্স পাস করেন। বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানটে’ সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন তিনি। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তার।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং শাহাদাতবরণের সময় তিনি সমাজবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন। নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার মাত্র এক মাস আগে ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। খুকুও ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণ করেন।
Leave a Reply