বরগুনার পাথরঘাটায়
একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কাজে লাগিয়ে কাগজ-কলমে চলছে দুটি মাদ্রাসার কার্যক্রম। এমন দুটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সরকারি হিসাবে দুটি মাদ্রাসা থাকলেও প্রতিষ্ঠান রয়েছে একটি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সুপারভাইজার মনিরুল ইসলাম বলেন, নাসির উদ্দিন প্রধান শিক্ষক এ মাদ্রাসাটির নাম আমরা উপজেলা থেকে প্রথমে পাঠিয়েছিলাম। পরবর্তীতে দেখি প্রণোদনা পাওয়ার সময় জাকির হোসেন প্রধান শিক্ষক ওই ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটির নাম এসেছে। তবে একই নামে দুটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা থাকার বিষয়টি বেমানান।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি পাথরঘাটা উপজেলা শাখার সভাপতি ইব্রাহিম কামাল বলেন, সরকারি খাতায় দুটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা থাকলেও প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে ওই ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটিই আসল ও সঠিক প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় সময়ই সরেজমিনে গিয়েও নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন শিক্ষকদেরই ক্লাস করতে দেখেছি বা তাদেরই পেয়েছি। কিন্তু যারাই আসল প্রতিষ্ঠান তারাই আজ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের শিকার।
ওই ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ও বর্তমানে বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক খান সালামতুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে যে, শিংড়াবুনিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি রয়েছে ওই মাদ্রাসাটিই আসল ও পূর্বের সেই মাদ্রাসা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জলিলুর রহমান খান বলেন, শিংড়াবুনিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের বাবা আবুল হাসেম হাওলাদারসহ হযরত আলী ও শাহজাহান হাওলাদার এ মাদ্রাসার জমিদাতা। একই সঙ্গে ওই তিন ব্যক্তি ১৯৮৪ সালে এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় খান সালামতল্লাহ প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। খান সালামতুল্লাহ সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর জমিদাতা আবুল হাশেম হাওলাদারের ছেলে নাসির উদ্দিন এ মাদ্রাসার হাল ধরেন।
প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, শিংড়াবুনিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় আমরা পাঁচজন শিক্ষক দীর্ঘ বছর ধরে শিশু শিক্ষার ওই ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি পরিচালা করে আসছি। কিন্তু প্রতারণার মাধ্যমে জাকির হোসেন ও গোলাম কবিরসহ একটি চক্র শিংড়াবুনিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার নাম ও মাদ্রাসার দলিল ব্যবহার করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। সরকারি খাতায় ওই মাদ্রাসায় জাকির হোসেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে আছেন। তবে কাগজ-কলমে ওই মাদ্রাসা থাকলেও বাস্তবে ওই মাদ্রাসার কোন অস্তিত্ব নেই।
তিনি আরও বলেন, ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রণোদনার প্রথম কিস্তির শিক্ষক প্রতি পাঁচ হাজার টাকা ওই ভুয়া শিক্ষকরা নিয়ে গেছেন। আর আমরা আসল ৫ জন শিক্ষক ওই সরকারি প্রনোদনা থেকে রয়েছি বঞ্চিত। তবে একমাত্র সরেজমিনে তদন্তে গেলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জাকির হোসেন বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইউএনও আমাদের কাগজে সই করে দিয়েছেন। আমাদেরও মাদ্রাসা আছে। করোনার মধ্যে তো ক্লাস হয় না, করোনার পর সব দেখা যাবে।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ বলেন, আমি পাথরঘাটায় সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি দেখা হবে।
Leave a Reply