স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া:
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), বগুড়ার বিশেষ অভিযানে দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া বাজারে সংঘটিত দুর্ধর্ষ খুনসহ ডাকাতির ঘটনার মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের চারজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানে ভিকটিমের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন এবং লুণ্ঠিত নগদ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ গত ১৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ রাত ২টা ৩০ মিনিট থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটের মধ্যে বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া থানাধীন তালোড়া পৌরসভার তালোড়া বাজার এলাকার হিমু পোদ্দার আগরওয়ালা (৬২), পিতা মৃত রাধেশ শ্যাম পোদ্দারের বসতবাড়িতে ৭-৮ জন অজ্ঞাতনামা ডাকাত টিনের চাল কেটে প্রবেশ করে। বাড়িতে থাকা দুই ভাই ও তিন বোনকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করে নগদ টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন লুট করে নেয়। ডাকাতির সময় বাধা দিলে বড় বোন বিমলা পোদ্দার (৬৭)-কে শ্বাসরোধে হত্যা করে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।
দ্রুত অভিযান ও গ্রেফতার। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বগুড়া জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায় ইন্সপেক্টর মোঃ রাজু কামালের নেতৃত্বে ডিবির একটি চৌকস টিম তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে। একই দিনে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বগুড়া সদর থানাধীন বারোপুর এলাকা থেকে চারজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়ঃ
১. মোঃ বাহালুল প্রামানিক রাজু (২৯), পিতা মোঃ বাছেদ প্রামানিক, সাং খেউনী বিন্ন্যাচাপড়, থানা শিবগঞ্জ।
২. মোঃ ইমরান (৩১), পিতা মোঃ নাজির উদ্দিন প্রাং, সাং পোগইল, থানা কাহালু।
৩. মোঃ আসলাম (২৫), পিতা মোঃ হাফিজার, সাং শাপলা (তালোড়া), থানা দুপচাঁচিয়া।
৪. মোঃ জুয়েল প্রাং (২৬), পিতা মোঃ নবাব আলী প্রাং, সাং নওদাপাড়া, থানা দুপচাঁচিয়া।
মূলহোতা গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধার। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় যে লুণ্ঠিত টাকা ও মোবাইল ফোন মূলহোতা জুয়েল প্রাং-এর হেফাজতে আছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে কাহালু থানাধীন দুর্গাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূলহোতা জুয়েল প্রাং-কে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত নগদ ১৩,০০০ টাকা ও ভিকটিমের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। অপরাধমূলক অতীত গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পূর্বে একাধিক মামলা রয়েছে—মোঃ বাহালুল ইসলাম রাজু: ডাকাতি, চুরি ও দস্যুতাসহ মোট ৪টি মামলা।
মোঃ ইমরান: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২টি মামলা। মোঃ আসলাম: ১টি চুরি মামলা। মোঃ জুয়েল প্রাং: ডাকাতি, চুরি, দস্যুতা ইত্যাদি মিলিয়ে মোট ৬টি মামলা বিচারাধীন। ডিবি পুলিশের বক্তব্য: ডিবি বগুড়ার ইন্সপেক্টর মোঃ রাজু কামাল জানান, “ঘটনার মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যেই মূলহোতাসহ ডাকাত চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ও নগদ অর্থ আদালতে উপস্থাপন করা হবে। তিনি আরও বলেন, “পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।