বগুড়ার কাহালু উপজেলায় চোর সন্দেহে ঘুম থেকে তুলে আতাউর রহমান শিরু নামে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শিরু কাহালু উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার ১৮ জুন সকালে পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধার করে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। এর আগে বুধবার গভীর রাতে শিরুকে বাড়ি থেকে তুলে নেয়া হয়। শিরু উপজেলার অঘোর মালঞ্চা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মজনু মিয়া। একই গ্রামের সেলিনা আক্তারসহ অন্যরা তাকে নির্যাতন করেন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে কাহালু থানায় শিরুর বাবা মজনু সোনার একটি লিখত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার গভীর রাতে শিরুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন একই গ্রামের সেলিনা, আছিয়া, সুমনসহ তার পরিবারের পাঁচ থেকে ছয়জন নারী-পুরুষ। পরে তাকে সেলিনাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে গ্যাস সিলিন্ডার চুরির অভিযোগে প্রথমে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয়। পরে শিরুর আঙ্গুলে সুঁচ ফোটানো হয় ও বাম পায়ে হাতুড়ি দিয়ে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও তাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়। অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে বুধবার রাতেই গ্যাস সিলিন্ডার চুরি হয়। এরপর তারা শিরুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত সেলিনা আক্তারসহ অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ জানায়, সিলিন্ডার চুরির বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। জানতে চাইলে কাহালু থানার ওসি মো. আমবার হোসেন বলেন, চোর সন্দেহে শিরুকে মারধর করা হয়েছে। তার শরীরে গুরুতর জখমের চিহ্ন রয়েছে। পায়ের পাতাতে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তবে সেটা পেরেক বা সূচজাতীয় কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। কাহালু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাকিয়া তাসনিম বলেন, শিরু নামের এক রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তার পায়ে পেরেকজাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। হাতে সুচজাতীয় কিছু দিয়ে ক্ষত করা হয়েছে। তবে হাত ও পায়ের আঘাত গভীর নয়। আমরা শিরুকে যথাযথ চিকিৎসা দিচ্ছি।
Leave a Reply