শিরোনাম :
জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক পদে পদোন্নতি পেলেন মোজাম্মেল হোসেন বাবু ধামরাইয়ে বিজ্ঞান মেলা নীলফামারী সদরে বিসমিল্লাহ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে সাড়ে ৬২ লাখ টাকার কো*কেন ও হি*রোইন জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৫৬ বিজিবি) নীলফামারী। রাজশাহীতে হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা কোটচাঁদপুরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় জনগণের রোষানলে সাব রেজিস্ট্রার ঝিনাইদহে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের মৃত্যু Daily Detectivenews কেরানিগজ্ঞের বিপুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ গোদাগাড়ীতে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার মিরপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শাহজাদপুরে মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের কাছে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদা দাবির অভিযোগ

বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে তরুণীকে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ দেওয়ার মামলা নিয়ে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১
  • ৭৫৫ বার পঠিত

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশানে একজন তরুণীকে ”আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার” জন্য যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই অভিযোগের ব্যাপারে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দিয়ে পুলিশ কাজ শুরু করেছে বলে গণমাধ্যম কে জানিয়েছেন ঢাকার গুলশান অঞ্চলের উপ-পুলিশ কমিশনার। বসুন্ধরার এই কর্মকর্তা দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে সামাজিক মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লেও, পুলিশ বলছে, তাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, তিনি দেশের ভেতরেই রয়েছেন। আর মৃত তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, মামলা করার পর থেকে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মৃত তরুণীর বোন ”আত্মহত্যার প্ররোচনা”র অভিযোগ তুলে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার ভোররাতে একটি মামলা করেন। সেই মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে ঢাকার গুলশান অঞ্চলের উপ-পুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যম কে বলেন, ”আমাদের এখন যে কাজটি করতে হচ্ছে, এই যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক সাক্ষ্য, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বা বস্তুগত সাক্ষ্য- সকল বিষয়কে আমাদের গুরুত্ব দিতে হচ্ছে।” তিনি জানান, এই মামলার অভিযোগ হচ্ছে, “আত্মহত্যায় প্ররোচনার” অভিযোগ। তিনি বলেন এক্ষেত্রে দুইটি জিনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি হচ্ছে, অভিপ্রায়, আরেকটি হচ্ছে প্ররোচনা। ”এই জন্য মামলার যে অভিযোগ এসেছে, অভিযুক্ত এবং ভিকটিমের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সম্পর্কের বিষয়গুলো নিয়ে,” সেগুলো যাচাই বাছাই করা হবে বলে বিবিসিকে জানান মি. চক্রবর্তী। তিনি বলেন, মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসগুলো বিশ্লেষণ করে এবং মৃতদেহের পোস্টমর্টেম ও ফরেনসিক রিপোর্টের মাধ্যমে ওই তরুণীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে চান। ”ভিকটিমের মোবাইল ফোন, সেখান থেকে তথ্য উদ্ধারের চেষ্টার পাশাপাশি অন্যান্যভাবেও তাদের মধ্যে বিভিন্ন ভাবে সম্পর্কের যে অভিযোগ এসেছে, এজাহারে যে পয়েন্টগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, তার যৌক্তিকতা, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে, সেই ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সংশ্লিষ্টতা, সেগুলো আমাদের বেশ গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হচ্ছে,” বলছেন মি. চক্রবর্তী। মামলায় যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ”এই মামলার অভিযোগ হচ্ছে, আত্মহত্যায় প্ররোচনা। এই জন্য আমাদের যে কাজটি করতে হচ্ছে, (সেটা হল) প্ররোচনার বিষয়টি যথাযথভাবে সংজ্ঞায়িত করা। ”না হলে মামলার সঠিক তদন্ত নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। এই জন্য আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি প্ররোচনার বিষয়টিকে যৌক্তিকভাবে প্রমাণ করার জন্য পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণদি সংগ্রহ করা, বিশ্লেষণ করা- সেই সঙ্গে অভিযোগের মানানসই একটি বিষয় খুঁজে বের করার ওপর।” তিনি বলেন অভিযুক্তের গ্রেপ্তারের বিষয়টি তারা পরে ভাববেন। “যখন পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আসবে, তখন দণ্ডবিধি ও ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা অবশ্যই নেবো।” মামলাটি হওয়ার পর মি. আনভীরের বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে একটি আবেদন করেছিল পুলিশ। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে যে, বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোপনে দেশের বাইরে চলে গেছেন। এই প্রসঙ্গে পুলিশের কাছে কী তথ্য আছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ”বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাপনা একেবারেই ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা। এখানে কোন্ যাত্রী কোন্ পাসপোর্ট ব্যবহার করে, শনাক্ত করণ পদ্ধতি কী, সেটা ডিজিটালি অন্তর্ভুক্ত থাকে। একজন যাত্রী যদি দেশের বাইরে যান বা বাইরে থেকে দেশে আসেন, সেটা ডিজিটালি নিবন্ধিত থাকে। ”ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের যে ডাটাবেজ, সেই ডাটাবেজ অনুযায়ী, অভিযুক্ত যিনি, তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি, তিনি বাংলাদেশেই আছেন,” জানান মি. চক্রবর্তী। এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা মোঃ আবু তৈয়ব বলেছেন, যেহেতু এই বিষয়ে মামলা হয়েছে, তারা আইনগতভাবেই এগোবেন। তিনি আরও বলেন, এই মামলা করা এবং পুরো ঘটনাকে তারা বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসাবে দেখছেন। অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে এদিকে তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা প্রসঙ্গে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ”আইন অনুযায়ী আইন চলবে। যেই অপরাধী হোক, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। এটা তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের পরেই আমরা বলতে পারবো।”  নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে অভিযুক্ত করে ”আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার” মামলা করার পর হুমকিধামকি দেয়া হচ্ছে বলে গণমাধ্যম কে জানিয়েছেন মামলার বাদী নুসরাত জাহান। তিনি মৃত তরুণীর বড় বোন। তিনি গণমাধ্যমকে বলছেন, ”কালকে রাত ১২টার, সাড়ে ১২টা থেকে আমি খুব ডিপ্রেসড। আমাকে বিভিন্নভাবে ফোন দিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলা হচ্ছে। অনেক হুমকির মুখে আছি। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।” তিনি দাবি করেন, অনেক কিছুই তো প্রুফ হয়ে গেছে। যদি প্ররোচিত মৃত্যু হয়ে থাকে,তাহলে কে প্ররোচিত করেছে? এখন শুধু বিচারের অপেক্ষা। ”আসামীর গ্রেপ্তার..এটা মনে হয় আমার আশা করাটা দুষ্কর” মন্তব্য করে তিনি সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আগে যা ঘটেছে মৃত তরুণীটি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন ছাত্রী ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে কয়েকমাস ধরে তিনি একাই থাকছিলেন। গুলশান অঞ্চলের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান ফিরোজ গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ওই তরুণীর বোন কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসেন। সন্ধ্যায় গুলশানের অ্যাপার্টমেন্টটিতে ঢুকে তিনি বোনের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ওই বাসায় গিয়ে দেখতে পায় যে, মৃতদেহটি সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এটিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে। রাতেই মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে মেয়েটির বড়বোন গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, তাতে ”আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার” অভিযোগ আনা হয়। পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মি. হাসান বলছেন, মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে যে ওই তরুণীর সাথে মি. আনভীরের দুই বছর যাবৎ সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম তরফ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। মি. আনভীরের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও সকাল থেকে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com