মুরাদনগরের শতবর্ষী সরকারি খাল দখল করে দোকানপাট নির্মাণ 

★অভিযুক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তির দাবি ‘এ জায়গা আমাদের’

মোঃ ইউনুছ মিয়া , মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরের নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নে সরকারি খাল দখল করে দোকান নির্মাণের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। শত বছরের পুরোনো এ খালটি কোম্পানীগঞ্জ বাজারের উত্তর পাশ ঘেঁষে প্রবাহিত, যা দীর্ঘদিন ধরে আশপাশের এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

কিন্তু সম্প্রতি প্রভাবশালী একটি মহল খালটি ভরাট করে জায়গা দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কুলুবাড়ী এলাকায় সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ওই খালের কালভার্টের সামনেই চলছে দখল ও নির্মাণকাজ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মৃত জহর আলীর ছেলে ইসলাম মিয়া খাল ভরাট করে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। ইতোমধ্যেই সেখানে ইট, বালু ও নির্মাণসামগ্রী ফেলে জায়গাটি পূরণ করা হয়েছে। এতে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়ছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলমগীর বলেন, এই খাল দিয়েই বৃষ্টির পানি নেমে যেত। এখন দোকান উঠছে খালের ওপর! বৃষ্টি হলে চারপাশ ডুবে যাবে। এতে খালের স্বাভাবিক জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অভিযুক্ত ইসলাম মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার জমির ওপর দিয়েই খাল খনন করা হয়েছিল। বর্তমানে যে জায়গায় দোকানঘর তুলছি, সেটি আমাদের নিজস্ব জমি। তাই সেখানে আমি যা ইচ্ছা করতে পারি।

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ শুধু বেআইনি নয়, বরং এলাকার পরিবেশ ও জনজীবনের জন্য হুমকি। খাল দখল করে দোকান নির্মাণ করায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তারা দ্রুত অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভিপি) জাকির হোসেন বলেন, জনগণের সম্পদ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে দখল করতে পারে না। সরকারি খাল জনগণের, কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। অবৈধ স্থাপনা যেই করুক না কেন, টিকে থাকতে দেওয়া হবে না।

মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খাঁন বলেন, সরকারি খাস জমি বা খাল দখল আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।  বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।