শিরোনাম :
জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক পদে পদোন্নতি পেলেন মোজাম্মেল হোসেন বাবু ধামরাইয়ে বিজ্ঞান মেলা নীলফামারী সদরে বিসমিল্লাহ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে সাড়ে ৬২ লাখ টাকার কো*কেন ও হি*রোইন জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৫৬ বিজিবি) নীলফামারী। রাজশাহীতে হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা কোটচাঁদপুরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় জনগণের রোষানলে সাব রেজিস্ট্রার ঝিনাইদহে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের মৃত্যু Daily Detectivenews কেরানিগজ্ঞের বিপুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ গোদাগাড়ীতে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার মিরপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শাহজাদপুরে মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের কাছে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদা দাবির অভিযোগ

রাজশাহীতে ঈদ কেনাকাটায় আরডিএ মার্কেট-ফুটপাতে উপচেপড়া ভিড়

মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বাবু স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহীঃ
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ মে, ২০২১
  • ৩২১ বার পঠিত

০১ মে ২০২১ ইং

কোভিড-১৯ করোনা ভীতি উপেক্ষা করে ঈদ উদযাপনের লক্ষ্যে কেনাকাটায় মহাব্যস্ত রাজশাহীবাসী। এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ তাদের পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে। প্রতিটি মার্কেটেই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো তাড়না নেই। কিছু কিছু মার্কেটে পা ফেলার জায়গাও পাওয়া দুষ্কর।

রাজশাহীর আরডিএ মার্কেটে একজনের সঙ্গে আরেকজনের গা ঘেঁসে ঘেঁসে চলতে দেখা গেছে। অভিভাবকদের সঙ্গে ঈদ শপিংয়ে মার্কেটে আসা শিশুদেরকেও মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। বিক্রেতারা বলছেন, আজ পহেলা মে সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় অনেক বেশি। প্রায় প্রতিটি মার্কেটে বিক্রিও হচ্ছে সন্তোষজনক বলে জানান বিক্রেতারা। ঈদ শপিংয়ে উপচেপড়া ভিড়ের কারণে রাজশাহীর কিছু কিছু সড়কে তীব্র যানজটেরও দেখা মেলে।

করোনা মহামারিতে প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বাড়ছে সংক্রমণও। সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ জারির পরও নগরবাসী কিংবা জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো ধরনের করোনা ভীতি নেই। এই সংকটকালেও নিশ্চিন্তে ঈদের কেনাকাটা করছেন তারা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা থাকছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে বেচাকেনা করতে হবে বলে জানানো হয় নির্দেশনায়।

শনিবার (১ মে) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজশাহীর বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্তের কাছে জনপ্রিয় আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেট, ওমর থিম প্লাজা, কোর্ট মার্কেটেরট মতো মার্কেটগুলো ক্রেতায় পরিপূর্ণ। নিউ মার্কেট ও আরডিএ মার্কেটের সামনের দোকানগুলোতে শারীরিক দূরত্ব দূরে থাক, গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে মানুষজনকে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকের মুখে মাস্ক থাকলেও তা সঠিক নিয়মে পরা ছিল না।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধ দু’দফা শেষে তৃতীয় দফা চলছে। বিধিনিষেধের শুরুর দিকে জনসমাগম ও গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের যে সরব ভূমিকা ছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা নিষ্প্রভ হয়ে গেছে। অন্যদিকে, তৃতীয় দফায় লকডাউনে রাজশাহীতে তীব্র যানজটের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষদের। কোথাও কোথাও যানজটের কারণে ১৫-২০ মিনিটের মত আটকে থাকতেও হয়েছে।

এদিকে চেকপোস্টগুলোতে শুরুর দিকে পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত হলেও এখন তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। আর কোথাও কোথাও তো চেকপোস্টই গায়েব হয়ে গেছে। ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বিধিনিষেধের শুরুতে যে কড়াকড়ি ছিল, তা এখন আলোচনা থেকে বহু দূরে। এখন ‘মুভমেন্ট পাস’ চেক করতে দেখা যাচ্ছে না পুলিশকে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এখনও চলছে মুভমেন্ট পাস চেকিং। কিন্তু পিক-আওয়ারে সব গাড়িকে একসঙ্গে ধরে চেক করা সম্ভব হচ্ছে না।

সরেজমিনে রাজশাহীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একপ্রকার হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। কেউ নিজস্ব গাড়ি হাঁকিয়ে যাচ্ছেন মার্কেটে। কেউ যাচ্ছেন অটোরিকশা কিংবা রিকশায়। এদিকে ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে চলাফেরার কথা থাকলেও তা নিয়ে এখন আর কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই মানুষের মধ্যে। স্বাস্থ্যবিধি কেউ কেউ মানছেন আর কেউবা মানছেন না, যারা মানছেন না তাদেরকে বাধ্য করাররও যেন কেউ নেই।

শিরোইল কলোনীর বাসিন্দা রানা ও রনি, বের হয়েছেন সন্তানদের জন্য নতুন কাপড় কিনতে। বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন মনে হয় করোনা কমে গেছে। অনেকেই তো বের হচ্ছেন। তাইতো আমরাও বের হয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হয়েছি। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবো। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।

স্ত্রী ও এক ছোট শিশু সন্তান নিয়ে আরডিএ মার্কেটে ঈদের শপিং করতে এসেছেন হুমায়ন কবির। তিনি বলেন, ঈদের আগে গ্রামের বাড়িতে যাব। গ্রামে যারা আত্মীয়-স্বজন আছে, তাদের জন্য কিছু মার্কেট করতে এসেছি। এছাড়া ছেলে-মেয়েসহ আমাদের কেনাকাটাও করবো। তবে তিনি নিজেই দাবি করেন, আরডিএ মার্কেটে আসা অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মানুষের চাপের কারণে গায়ে গা লাগিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

নিউ মার্কেটে ঈদের শপিং করতে এসেছেন লাকি আরী। তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও তো ঈদ করতে হবে। এ কারণেই কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি। তবে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘোরাঘুরি কম করছি, পছন্দ হলেই কিনে নিচ্ছি পছন্দের পোশাক।

মার্কেটে বাচ্চাদের কাপড় দেখছিলেন খুশি আকতার। কথা প্রসঙ্গে জানালেন, সবসময় পরিবারের সদস্যদের নিয়েই মার্কেটে আসেন। কিন্তু গত দুই বছর করোনার কারণে তাদের নিয়ে আসা হয় না। তাই নিজেই পছন্দ করে কেনাকাটা করছেন।

করোনা সংক্রমণের মধ্যেও অনেকে শপিংমলগুলোতে ঘুরতে বেরিয়েছেন। দেখছেন নতুন কী কী কাপড়-চোপড় কিংবা জিনিসপত্র এসেছে। এতে করেও লোকজনদের ভিড় বাড়ছে।

নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করেন ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে লকডাউনে অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন বসতে পারছি। তবে আজ ক্রেতা অনেক। বিক্রিও মোটামুটি আগের দিনের তুলনায় ভালোই হচ্ছে।

জাবেদ আলী নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, সরকার মার্কেট খুলছে কিন্তু মানুষ যে আসবে সেই রাস্তা বন্ধ করে রাখছে। বাস বন্ধ, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আসতে খরচ বেশি। যে কারণে দূরের ক্রেতারা আসতে পারছে না। তবে আজ বেশ ভালো ক্রেতা এসেছে। বাস চললে আরও অনেক ক্রেতা আসত।

বিক্রেতারা বলছেন, আজ ভিড় বেশি। কিন্তু বেচা-বিক্রি অনেক কম। যে পরিমাণ জনসমাগম রয়েছে সবাই যদি একটি করে জিনিসও কিনতেন তাহলে আমাদের দোকানের জিনিসপত্র অনেক কমে যেত। কেনাকাটা হচ্ছে কম, অধিকাংশই শুধু জিনিসপত্র দেখছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com