দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ এক কিলোমিটার সড়ক বাঁধটি নির্মাণ করতে কেউ এগিয়ে না এলেও অবশেষে নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা রুদ্রেশ্বর গ্রামের বাসিন্দারা এবং স্বেচ্ছায়।
জানা গিয়েছে যে দু'বছর আগে বন্যার সময় কাকিনা রুদ্রেশ্বর ফুলচানবাড়ির বাঁশঝার থেকে সুলতান মার্কেটের দিকে যাওয়ার রাস্তাটি তিস্তানদী পানির স্রোতে এসে ভেঙ্গে গিয়েছিল। ফসলের ব্যাপক ক্ষতিও হয়েছিল। জরুরী পরিস্থিতিতে হাটবাজারে ফসল চাষাবাদ করতে ও উপজেলা সদরে যাওয়া শত শত পরিবারকে চূড়ান্ত কঠিন মনে হচ্ছে। রাস্তাটি তৈরিতে জনপ্রতিনিধিদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও স্থানীয়রা কোনও সমাধান পাননি। অবশেষে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে তাদের নিজস্ব তহবিল এবং স্বেচ্ছাসেবায় এই এক কিলোমিটার রাস্তাটি তৈরি করেছিলেন ফলস্বরূপ, স্থানীয়রা তিস্তা নদীর শক্তিশালী স্রোত কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে তবে সরকারিভাবে আরো শক্তিশালী ভাবে বাঁধ নির্মাণ না হলে পুনরায় আবার নদীর স্রোত এলে ভেঙে যেতে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন ।
তবে তিস্তা নদীর তীরে বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, সরকার যদি রাস্তাটি আরও বাড়িয়ে না দেয় বা একটি শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণের জন্য তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা না নেয়, লালমনিরহাট কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর গ্রামে আবাদি জমি সহ চলা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে । তিস্তা নদীর আগ্রাসনের কারণে এই অঞ্চলগুলিতে অনেক লোক জমি ও ফসল হারিয়েছিল। তারা শরণার্থী হয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছে।অনাবিক জীবন-যাপনের কাছ থেকে ফিরে আসার জন্য জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের কাছে হাত বাড়িয়েছে গ্রামবাসীরা,
রুদ্রেশ্বর গ্রামের শাহাআলাম বলেছিলেন, “আমরা যদি স্থানীয়রা রোহিঙ্গা হতাম তবে রাস্তাঘাট,খাবার, বাসস্থান এবং ঘর-বাড়িসহ সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পেতাম, তবে রোহিঙ্গা হলে মনে হয় ভাল হত সরকার রোহিঙ্গাদের থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে তবে আমাদের চলাচলের কোনও রাস্তা নেই। রাস্তার জন্য আমার সব শেষ, আমার কয়েক একর জমি ছিল, রাস্তাটি ভেঙে গেছে এবং তা কৃষিকাজে পরিণত হয়েছিল। ফলস্বরূপ, আমি এবং স্থানীয়রা কষ্টের মাঝে দিনরাত কাটাচ্ছি।
রুদ্রেশ্বর গ্রামের মোঃ ইসমাইল হোসেন সহ স্থানীয়রা জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা গ্রামবাসীর অর্থ নিয়ে সরকারী রাস্তায় হালকা বাঁধ তৈরি করেছি। তিস্তা নদীর তীরে সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণে বিলম্বের কারণে আমি গ্রামের মানুষকে এক করে রাস্তা মেরামত করে মারাত্মক ক্ষয় রোধ করার চেষ্টা করছি। তবে সরকার কর্তৃক রাস্তা বাঁধ দিলে স্থানীয়রা লাভবান হবেন। তাদের আর অর্থ ব্যয় করতে হবে না। এই আশা নিয়ে স্থানীয়দের বেঁচে থাকার একমাত্র আশা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাকিনা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য ইয়াকুব বলেছিলেন, "আমি রাস্তাটি তৈরিতে আগ্রহী কিন্তু স্থানীয়রা আমাকে জমি না দেওয়ার কারণে তারা তা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে শত শত স্থানীয় লোকেরা এই অর্থ ব্যয় করেছে। রাস্তা নির্মানের অর্থ প্রদান করা হবে। "
বিষয়টি সম্পর্কে কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামকে এখনও অবহিত করা হয়নি।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, “মহিষামুড়ী ও রুদ্রেশ্বরের এই দুটি রাস্তা সম্পর্কে আমরা জানি। আমরা শীঘ্রই মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সাথে কথা বলব এবং আমরা দুটি রাস্তা বরাদ্দ দেওয়ার চেষ্টা করব।