শিরোনাম :
ঝিনাইদহের কোটচাঁপুরে সরকারি রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের দিনব্যাপী কর্মশালা ও চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২১ দফা দাবিতে নীলফামারী সাংবাদিক ইউনিয়নের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কক্সবাজারের পেকুয়ার রাজাখালীতে পানিতে ডুবে জন্নাতুল নুর নামের দুই বছর বয়সী এক কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়েছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সঙ্গে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় গোমস্তাপুরে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস (২০২৫) পালিত কবি রিপন শানকে নিয়ে শব্দকুঠির ৭৭ তম জমজমাট আসর অনুষ্ঠিত নিয়াজ মুহাম্মদ খান সিএসপি যিনি ভালোবেসেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে বিজয়নগরে বিজিবির বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ চোরাচালান পণ্য আটক।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১
  • ৩১৮ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ভারতের জম্মুতে বসবাসকারী কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর বিরুদ্ধে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঢালাও তল্লাসি অভিযান ও ধরপাকড় শুরু করেছে।উপযুক্ত পরিচয়পত্র নেই, এই অভিযোগে প্রায় পৌনে ২০০ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে তারা হীরানগরের বন্দী শিবিরে আটক করার পর অনেক রোহিঙ্গা শিশুই মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

জম্মুর রোহিঙ্গারা দলে দলে এখন দিল্লিতে এসে জাতিসঙ্ঘ কার্যালয়ের সামনে ধরনায় বসারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।ওদিকে দিল্লির একটি রোহিঙ্গা শিবিরেও সোমবার রাতে দুষ্কৃতিকারীরা এসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে যাওয়ার পর রাজধানীর রোহিঙ্গাদের মধ্যেও চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বস্তুত গোটা ভারতে যে প্রায় হাজার চল্লিশেক রোহিঙ্গা শরণার্থী আছে বলে ধারণা করা হয়, তার প্রায় এক-চতুর্থাংশই থাকেন জম্মু শহর ও তার আশেপাশের নানা বস্তিতে।

রোহিঙ্গারা সেখানে দিনমজুরি করেন, মাছ ধরেন বা অটো চালিয়ে পেট চালান, জম্মুতে তাদের একটি ‘বার্মা মার্কেট’-ও গড়ে উঠেছে।

এদের মধ্যে অনেকেই দশ বা বিশ বছর ধরে জম্মুতে আছেন, কিন্তু গত কয়েক বছরে রোহিঙ্গাদের জম্মু থেকে তাড়ানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলন শুরু করেছেন।

রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বরও তাতে প্রবল সমর্থন আছে, বিজেপি নেতারাও সেখানে ‘রোহিঙ্গা খেদাও’য়ের ডাক দিচ্ছেন।

এই পটভূমিতেই জম্মু পুলিশ গত শনিবার সকালে রোহিঙ্গা কলোনিতে গিয়ে হুকুম দেয়, তাদের সবাইকে স্থানীয় মৌলানা আজাদ স্টেডিয়ামে গিয়ে তখনই হাজিরা দিতে হবে এবং সেখানে তাদের পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করা হবে।রোহিঙ্গা কলোনির মহম্মদ সুলেমান জানাচ্ছেন, ‘ভেরিফিকেশনের পর আমরা যে আড়াই শ’র মতো লোক গিয়েছিলাম তার মধ্যে ১৫৫ জনকেই পুলিশ আটক করে সাম্বা জেলে ঢুকিয়ে দেয়।’

‘কারো মা, কারো বাবাকে জেলে যেতে হয় – অথচ বাচ্চারা রয়ে যায় বাইরেই।’

আটকদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল, তারা জাল নথি দিয়ে ভারতের পরিচয়পত্র বা আধার কার্ড জোগাড় করেছেন।জম্মুর রোহিঙ্গা জাফর কিন্তু বলছেন, “আমাদের কাছে জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থার দেয়া পরিচয়পত্র ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনো কার্ড নেই।”

‘আমাদের মধ্যে দু-একজন আধার কার্ড বানিয়ে থাকলেও তারা হয়তো ভুল করে করেছে।’

দিল্লিতে রোহিঙ্গা মানবাধিকার কর্মী তাসমিদা জোহর বিবিসিকে বলছিলেন, আসলে জম্মুর প্রশাসন ও স্থানীয় মানুষ চায় না রোহিঙ্গারা সেখানে থাকুন, সে জন্যই এই ঢালাও ধরপাকড় শুরু হয়েছে।তার কথায়, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি, জম্মুতে চেক করা হচ্ছিল সবার কাছে বৈধ পরিচয়পত্র আছে কি না। যাদেরই নেই তাদেরই ঢালাওভাবে আটক করা হয়েছে।’

‘আসলে জম্মুতে রোহিঙ্গারা থাকুক, সেটা সেখানকার চাইছে না অনেকদিন ধরেই। স্থানীয় বাসিন্দারাও চাইছে না।’

‘এজন্যই মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে যে রোহিঙ্গারা না কি দাঙ্গা-হাঙ্গামা কিংবা উগ্রবাদী কার্যক্রমে লিপ্ত।’

জম্মুর রোহিঙ্গারা ভারতবিরোধী বা নাশকতামূলক কাজেও লিপ্ত বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে- সেটা তারা অবশ্য দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছেন।মোহম্মদ তাহির যেমন বলছেন, ‘আমরা তো ভারতে থাকতেই আসিনি। আমরা জানি এখানে ১০০ বছর থাকলেও আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’

‘কিন্তু আমরা ভারতের কখনও কোনো ক্ষতিও করব না – শুধু চাইব মিয়ানমারের পরিস্থিতি শোধরালে সেখানে তারা আমাদের পাঠিয়ে দেবে।’

‘তবে তার আগে বাচ্চাদের কেন বাবা-মার থেকে আলাদা করে দেয়া হচ্ছে? চাইলে পুরো পরিবারকে একসঙ্গে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠাক, আমরা চলে যাব।’এই অভিযান নিয়ে পুলিশ মুখ না-খুললেও জম্মুতে বিজেপির প্রেসিডেন্ট রবীন্দ্র রায়না দাবি করছেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের অনুরোধেই এই পদক্ষেপ।

তিনি বলছেন, ‘মিয়ানমার সরকার ভারতের কাছে এ দেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের তালিকা চেয়েছে বলেই যাচাই করে দেখা হচ্ছে এদের মধ্যে কারা কারা সে দেশের নাগরিক।’

“তারা স্বদেশে ফিরে যেতে পারলে তার চেয়ে ভাল কিছু হতে পারে না, এটা তো মানবেন?” যুক্তি দিচ্ছেন রায়না।এদিকে জম্মু থেকে দলে দলে রোহিঙ্গারা যখন দিল্লির দিকে রওনা দিচ্ছেন, তখন দিল্লির মদনপুর খাদার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুষ্কৃতী এসে সোমবার রাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে গেছে।

ওই ক্যাম্পের বাসিন্দা মিজান বিবিসিকে বলছিলেন, “ওই মুখোশধারীরা গাড়ি করে এসে আমাদের ক্যাম্পের অফিসঘরে পেট্রল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।”

‘যেখানে আমরা মিটিং করতাম, সেই অফিসঘর জ্বলে ছাই হয়ে গেছে, ভয়ে আমরা এখন রাতে ঘুমোতে পারছি না।’

ফলে দিল্লি থেকে জম্মু – ভারতের যেখানেই রোহিঙ্গারা আছেন সেখানেই তাদের ভয় দেখিয়ে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে পুরোদমে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com