মোঃ মাহমুদুল হাসান-স্টাফ রিপোর্টার:
“চাঁদা না দিলে মরতে হয়!” — এ যেন এখন এদেশে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। আর এই নির্মম সত্যের বিরুদ্ধে আজ বরিশালবাসী ফুঁসে উঠেছে।
বরগুনার এক নিরীহ ব্যবসায়ীকে ঢাকায় প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনার জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো বরিশাল শহর। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে নতুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা।
দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে তারা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়। নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে এই অবরোধের ফলে পুরো বরিশাল শহরের দক্ষিণাঞ্চলের যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
বরগুনার সন্তান ও ঢাকার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সম্প্রতি চাঁদা না দেওয়ায় দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। তার পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই একটি চাঁদাবাজ চক্র তাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। বিষয়টি থানা-পুলিশেও জানানো হয়েছিল, কিন্তু কাজ হয়নি।
অবশেষে তাকে রাজধানীর ব্যস্ত রাস্তায় প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
বরিশালে উত্তাল জনতা মুখে একটাই স্লোগান — “চাঁদাবাজদের ফাঁসি চাই!”
বিক্ষোভে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রিকশাচালক, দোকানদার, নারী-পুরুষ— সকল শ্রেণির মানুষ অংশ নেয়।
ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করা হয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “জনগণের ক্ষোভ যৌক্তিক। অপরাধীরা যেই হোক, তাকে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
এই ঘটনা শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং সমাজে এক ভয়ঙ্কর ব্যাধির প্রতিচ্ছবি— “চাঁদাবাজি এখন রাষ্ট্রের ভিত খেয়ে ফেলছে”।
সাধারণ মানুষ যখন পথে নামে, তখন বুঝতে হবে সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেছে। প্রশাসন যদি এখনো জেগে না ওঠে, তাহলে এই আগুন ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে।
Leave a Reply