শিরোনাম :
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ছারছীনা দরবার শরীফের ১৩৫ তম ঈসালে ছওয়াব মাহফিল ও হিযবুল্লাহ সম্মেলন-২০২৫। তারেক রহমানের দেশে না-ফেরা: সংকট, নিয়ন্ত্রণ ও বাংলাদেশের রাজনীতির অদৃশ্য সমীকরণ পদক্ষেপ বাংলাদেশ এর বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত নওগাঁয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সাওতুল কুরআন নূরানী কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসায় অভিভাবক সমাবেশ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (রহ.) স্মরণে বিশাল আয়োজন বক্তব্য রাখলেন চুয়াডাঙ্গা–২ আসনের এমপি প্রার্থী মোঃ রুহুল আমিন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় কাশিমপুর ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। রাজশাহীতে সাংবাদিকদের ওপর এনসিপি নেতাদের চড়াওয়ের ঘটনায় রাজশাহী প্রেসক্লাবের নিন্দা গলাচিপায় আইনশৃঙ্খলা সভায় বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন মায়ের প্রতি ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ এবং অতীতের নির্মম স্মৃতি। —ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার তরুণ ভোটারদের ভোটদানে আহ্বান আমিনুল হক বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির অনুমোদন চাঁপাইনবাবগঞ্জ টোল প্লাজায় পুলিশের চোখ ফাঁকি ব্যর্থ — আমেরিকান পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার নলডাঙ্গায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী দুলুর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিক পরিবারের ওপর হামলা ভাংচুর লুটপাট প্রতিবাদ করলে নারী নির্যাতন মামলার হুমকি গাজীপুর শ্রীপুরে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আদাবরে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত সংবাদ প্রকাশের জেরে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ নেতার নেতৃত্বে মানববন্ধন জামালপুর-মাদারগঞ্জে ২০১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক এক সাথে পরীক্ষা বর্জন ‎রাজশাহী দুর্গাপুরে নবাগত ইউএনও’র যোগদান ঝিনাইদহে সংঘবদ্ধ ছিনতাই চ/ক্রের সদস্য সন্দে/হে দুইজনকে গ্রে/প্তার করেছে র‍্যাব। ফতুল্লায় পরিত্যক্ত বাড়ির সামনে বাউল শিল্পীর স্বামী খুন

সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নে রাষ্ট্র এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৮২ বার পঠিত

প্রাসঙ্গিকতা:
বাংলাদেশে সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত নানান ঝুঁকি ও হুমকির মুখোমুখি হন—মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধানী রিপোর্ট থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমেও তারা হয়ে উঠেছেন নানা পক্ষের টার্গেট। এমন বাস্তবতায় “সাংবাদিক সুরক্ষা আইন” প্রণয়ন একটি সময়োপযোগী দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাষ্ট্রের দায়িত্ব:
রাষ্ট্রের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সাংবাদিকরা শুধু পেশাজীবী নন, তারা জাতির বিবেক—তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং প্রচারের মাধ্যমে একটি সচেতন সমাজ গড়ে তোলার কাজ করেন। অথচ বহু ক্ষেত্রেই তাদের ওপর হয়রানি, মামলা, হামলা কিংবা হত্যাকাণ্ড ঘটছে—কোনো প্রতিকার নেই।

রাষ্ট্র কী করতে পারে?
একটি সুনির্দিষ্ট সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে পারে। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যেতে পারে। সাংবাদিকদের তথ্য-অধিকারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশের সাথে সাংবাদিকদের আচরণে স্বচ্ছতা আনতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

গণমাধ্যমের ভূমিকা:
গণমাধ্যম শুধু সংবাদ প্রকাশেই সীমাবদ্ধ নয়—নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রেও তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের পেশাগত সুরক্ষার প্রশ্নে সাংবাদিক সমাজ ও গণমাধ্যমগুলোকে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে হবে।

গণমাধ্যম কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে?
সম্পাদকীয়, টকশো, সংবাদভিত্তিক প্রতিবেদন এবং সামাজিক প্রচারমাধ্যমে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন নিয়ে আলোচনার বিস্তার। সংবাদপত্র পরিষদ, ইলেকট্রনিক মিডিয়া কাউন্সিল ও অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংলাপ। মাঠপর্যায়ের সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নিয়মিত ডেটা সংগ্রহ ও প্রতিবেদন প্রকাশ।

বাস্তবচিত্র:
২০২৪ সালে বাংলাদেশে অন্তত ৯৭টি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে (সূত্র: রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স)। ২০২১-২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংস্থা সাংবাদিক সুরক্ষা আইন দাবি করে আসছে, তবে আইনি অগ্রগতি ধীরগতি।

একটি গণতান্ত্রিক সমাজে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে প্রকৃত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আশা করা যায় না। রাষ্ট্রকে যেমন দায়িত্ব নিতে হবে একটি কার্যকর ও প্রগতিশীল আইন প্রণয়নের, তেমনি গণমাধ্যমকে নিতে হবে সোচ্চার, তথ্যনির্ভর ও ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা।

“কলম যখন ভয়ে কাঁপে, তখন গণতন্ত্রও দুর্বল হয়ে পড়ে।”

সুরক্ষা আইন প্রণয়নে বিভিন্ন সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই সংগঠনগুলোর ভূমিকা নীচে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো:

১. চাপ সৃষ্টি ও জনমত গঠন
সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনসমাবেশের মাধ্যমে আইন প্রণয়নের জন্য জনমত তৈরি করা। রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে তারা দ্রুত আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেন।

২. গবেষণা ও নীতিগত প্রস্তাবনা প্রদান
সাংবাদিক নির্যাতনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ। দেশে ও বিদেশে বিদ্যমান সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের তুলনামূলক বিশ্লেষণ। আইন প্রণয়নের জন্য একটি খসড়া বা কাঠামোগত প্রস্তাব প্রস্তুত করে সরকারকে প্রদান।

৩. আইনি সহায়তা ও পরামর্শ
আইন বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় একটি কার্যকর, সাংবাদিকবান্ধব এবং সাংবিধানিকভাবে টেকসই আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় সহায়তা। মানবাধিকার ও গণমাধ্যম আইন সম্পর্কিত তথ্য ও পরামর্শ প্রদান।

৪. সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যম হওয়া
নীতি-নির্ধারক, মন্ত্রণালয় ও সংসদীয় কমিটির সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ ও পরামর্শ চালিয়ে যাওয়া। অংশগ্রহণমূলক আইন প্রণয়নে অংশ নেওয়া।

৫. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংযোগ স্থাপন
আন্তর্জাতিক সংগঠন (যেমন: Reporters Without Borders, CPJ, IFJ)-এর সহায়তায় আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করা। জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাউন্সিলের মাধ্যমে কূটনৈতিক সমর্থন সংগ্রহ করা।

৬. প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি
সাংবাদিকদের অধিকার, নিরাপত্তা ও আইনগত প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।
আইন পাস হলে তার বাস্তবায়নে ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালানো।

৭. দুর্নীতির নজরদারি ও আইন বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ
আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা অবহেলা হলে তা তুলে ধরা। বিচারবহির্ভূত নির্যাতনের অভিযোগে আইনি সহায়তা ও প্রতিবাদ সংগঠিত করা।

সাংবাদিক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এটি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই তাদের কৌশলগত, তথ্যভিত্তিক ও নিরবচ্ছিন্ন কাজ চালিয়ে যাওয়াই ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নে বেশ কিছু বাধা রয়েছে, যা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামাজিক ও কাঠামোগত বিভিন্ন স্তরে বিস্তৃত। নিচে মূল বাঁধাগুলো তুলে ধরা হলো:

১. রাজনৈতিক অনিচ্ছা ও স্বার্থসংঘাত
অনেক সময় ক্ষমতাসীন মহল সাংবাদিকদের স্বাধীনতা সীমিত করতে চায়, যাতে দুর্নীতি বা অপশাসনের খবর চাপা থাকে। সাংবাদিক সুরক্ষা আইন কার্যকর হলে সরকারের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা বাড়বে—এটি অনেক রাজনীতিবিদের কাছে অস্বস্তিকর।

২. নিরাপত্তা সংস্থার আপত্তি
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি অংশ সাংবাদিকদের “নিরাপত্তার জন্য হুমকি” হিসেবে দেখতে পারে, বিশেষ করে যারা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেন। এই বাহিনীগুলো মনে করে সাংবাদিকদের অতিরিক্ত সুরক্ষা দিলে তথ্য ফাঁস ও গোপনীয়তা রক্ষা কঠিন হবে।

৩. বিদ্যমান আইনের জটিলতা ও দ্বন্দ্ব
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, মানহানির মামলা ইত্যাদির কারণে সাংবাদিকদের ইতিমধ্যে বিভিন্ন আইনি চাপে রাখা হয়েছে। নতুন সুরক্ষা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে—যা সরকার বা আইন প্রণেতারা এড়াতে চান।

৪. সংগঠনের মধ্যে ঐক্যের অভাব
সাংবাদিক সংগঠনগুলো অনেক সময় ভিন্নমত ও বিভক্তিতে জর্জরিত থাকে। সমন্বিত দাবি বা একমত হয়ে চাপ সৃষ্টি না করতে পারলে সরকার সহজেই এই দাবিকে এড়িয়ে যেতে পারে।

৫. জনসচেতনতার ঘাটতি
সাধারণ জনগণের একটি বড় অংশ সাংবাদিক নির্যাতন বা হয়রানির ঘটনা সম্পর্কে সচেতন নয

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com