শিরোনাম :
দিনাজপুর জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নবাগত পুলিশ সুপার মহোদয়ের মতবিনিময় সভা। মাধবপুরে পুলিশের অ্যাসল্ট মামলায় গ্রেপ্তার-২১, এলাকায় আতঙ্ক আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ছারছীনা দরবার শরীফের ১৩৫ তম ঈসালে ছওয়াব মাহফিল ও হিযবুল্লাহ সম্মেলন-২০২৫। তারেক রহমানের দেশে না-ফেরা: সংকট, নিয়ন্ত্রণ ও বাংলাদেশের রাজনীতির অদৃশ্য সমীকরণ পদক্ষেপ বাংলাদেশ এর বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত নওগাঁয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সাওতুল কুরআন নূরানী কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসায় অভিভাবক সমাবেশ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (রহ.) স্মরণে বিশাল আয়োজন বক্তব্য রাখলেন চুয়াডাঙ্গা–২ আসনের এমপি প্রার্থী মোঃ রুহুল আমিন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় কাশিমপুর ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। রাজশাহীতে সাংবাদিকদের ওপর এনসিপি নেতাদের চড়াওয়ের ঘটনায় রাজশাহী প্রেসক্লাবের নিন্দা গলাচিপায় আইনশৃঙ্খলা সভায় বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন মায়ের প্রতি ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ এবং অতীতের নির্মম স্মৃতি। —ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার তরুণ ভোটারদের ভোটদানে আহ্বান আমিনুল হক বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির অনুমোদন চাঁপাইনবাবগঞ্জ টোল প্লাজায় পুলিশের চোখ ফাঁকি ব্যর্থ — আমেরিকান পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার নলডাঙ্গায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী দুলুর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিক পরিবারের ওপর হামলা ভাংচুর লুটপাট প্রতিবাদ করলে নারী নির্যাতন মামলার হুমকি গাজীপুর শ্রীপুরে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আদাবরে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত সংবাদ প্রকাশের জেরে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ নেতার নেতৃত্বে মানববন্ধন জামালপুর-মাদারগঞ্জে ২০১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক এক সাথে পরীক্ষা বর্জন ‎রাজশাহী দুর্গাপুরে নবাগত ইউএনও’র যোগদান

কালীগঞ্জে এমইউ কলেজের খেলার মাঠটি যেন মশা-জীবাণুর আবাসস্থল!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৬৬ বার পঠিত

মোঃ শাকিল রেজা সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ

এক সময়কার ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের এম ইউ ডিগ্রী কলেজ ছিল দক্ষিনবঙ্গের হাতে গোনা সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটির মুল ক্যাম্পাস ছিল গাছের ছায়ায় সুশীতল। যেখানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাস জমিয়ে রাখতো। আর বিকাল হলেই বিশাল খেলার মাঠটি খেলাধুলায় মুখরিত থাকতো। অন্যদিকে বৈশাখ আসলেই জাকজমকের সঙ্গে বসতো বৈশাখী মেলাসহ নানা বিনোদনের আসর। প্রতিবছর এ মাঠের ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হতো বিশাল ঈদের জামায়াত। কিন্ত আজকের দিনে এগুলো যেন এক সোনালী অতীত। কেননা দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কলেজটির ক্যাম্পাস ও খেলার মাঠটির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় এ যেন মশা মাছি আর রোগ জীবানুর আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। এক কথায় সকলের সামনেই যেন একটি জীবন্ত মাঠের মৃত্যু ঘটে গেছে। শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর দাবি, ফিরিয়ে দেয়া হোক তাদের সেই কোলাহলপূর্ণ ক্যাম্পাস আর খেলার মাঠ।

সরেজমিনে কলেজটির ক্যাম্পাসে গেলে দেখা যায়, মাঠটির বৃষ্টির পানি নিষ্কাষনের কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে হাঁটু পানি জমে আছে। যেখানে ভরে গেছে উচু ঘাস লতাপাতায়। মাঠের যে কোন প্রান্তে দাঁড়িয়ে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত দেখলে মনে হচ্ছে এ যেন জলাবদ্ধ এক নিম্নভূমি। আর দীর্ঘদিন জমে থাকা বদ্ধ কালো রঙের পানি প্রমান করছে এ যেন জীবানু উৎপাদনের এক মহাউদ্যান। জমে থাকা লতাপাতা বনজঙ্গলে সাপ ব্যাঙ আর মশামাছির স্থায়ী আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। এ দিকে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পুরাতন মুল ভবনের সামনেও দেখা যায় একই অবস্থা। সেখানে পানি জমে থাকা স্যাঁতসেতে কাঁদা পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা ক্যাম্পাসটিতে ছায়া সুশীতল রাখার অনেকগুলো গাছের মধ্যে বেশিরভাগই মারা গেছে। শুকনো গাছগুলো প্রমান করছে জলাবদ্ধতার অভিশাপই এখন কলেজটির এক বিরাট সমস্যা।

জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে যশোর – ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ডের একটু উত্তর পাশে প্রতিষ্ঠা করা হয় মাহতাব উদ্দীন ডির্গ্রী কলেজ। সে সময়ে এ এলাকার মধ্যে এটিই ছিল একমাত্র বিদ্যাপীঠ। কলেজটির পরিবেশ, ফলাফলসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কোন কমতি ছিলনা। যে কারনে ধীরে ধীরে আশপাশের জেলা থেকেও অনেক শিক্ষার্থী এ কলেজটিতে ভর্তি হতে থাকে। সকাল হলেই শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখরিত থাকতো। ফলে প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। কিন্ত বর্তমানে কলেজ ক্যাম্পাসটিতে সব সময় ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এমন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

কলেজের বানিজ্য বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী বৈশাখী দাস জানান, তাদের কলেজের মাঠে সব সময় হাঁটু পানি জমে থাকে। মুল ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে কলেজের ভিতরকার মাঠ পর্যন্ত কোথাও দাঁড়ানোর পরিবেশ নেই। কলেজের ক্লাস শেষ হওয়ার পর তাদেরকে শুধু কলেজের ভিতরকার সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা লাগে। আবার লাগাতর ভারী বর্ষা হলে সেই সড়কের উপরেও পানি জমে যায়। কলেজটির ক্যাম্পাস জুড়েই সারাবছর স্যাঁতসেতে পরিবেশ বিরাজ করে। এই শিক্ষার্থীর ভাষ্য, দেশের আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৪/১৫ বছরের অধিক সময় ধরে এমন পরিবেশ আছে বলে মনে হয় না।

এমরান হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী জানায়, ক্যাম্পাস ও খেলার মাঠে পানি জমে থাকার কারনে তারা সমস্ত অনুষ্ঠান ও খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত। কলেজের মাঠ, ক্যাম্পাসটি এখন মশা মাছি রোগ জীবানু পালনের খামারে পরিণত হয়ে গেছে। এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, কলেজের মুল ক্যাম্পাসটিতে অনেক গাছ লাগানো ছিল। যে গাছগুলো কলেজটির শোভাবর্ধনসহ সুশীতল ছায়া দিত। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সব গাছগুলোয় মারা গেছে। জলাবদ্ধতার কারনেই কলেজটির পরিবেশগত সবদিক নষ্ট হয়ে গেছে অথচ কারও কোন মাথা ব্যথা নেই।

আবু তালেব লস্কর নামের কলেজপাড়ার এক বাসিন্দা জানান, কলেজটির পাশেই তার বাড়ি। ছোটবেলায় তারা এই কলেজ মাঠে খেলা করেছেন। এ মাঠেই এক সময় বৈশাখী মেলা, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত হতো। তখন কলেজটির মাঠে ঢুকলে প্রান জুড়িয়ে যেতো। কিন্ত এখন সে সবের কিছুই নেই। বিশাল মাঠটি জলাবদ্ধতায় স্থায়ী বনজঙ্গলে রুপ নিয়েছে। এ কলেজের মাঠে একটি ঈদগাহ রয়েছে। যেখানে এক সময় ঈদের নামাজের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হতো। কিন্ত বিগত প্রায় দেড় যুগ ধরে মাঠের এমন অবস্থায় এখানে আর ঈদের জামায়াত হয় না।

তিনি আরও বলেন, এই কলেজের পাশ দিয়ে একটি খাল ছিল। যে দিক দিয়ে কলেজের পানি নিষ্কাশন হতো। কিন্ত বিগত সরকারের আমলে এই খালের উপরেই একটি মহল সরকারী জায়গাতে অপরিকল্পিতভাবে একটি মার্কেট তৈরী করে নিজেদের আয়ত্বে নেয়। যে কারনে পানি মাঠের দিকে যেতে বাধা সৃষ্টি হয়। এখন এর পাশ দিয়ে একটি চিকন অগভীর নালা আছে সেটিও পরিষ্কার করে না পৌর কর্তৃপক্ষ ফলে কলেজের পানি কলেজ ক্যাম্পাসটিতেই থেকে যায়।

কলেজটির ক্রিড়া শিক্ষক মোঃ ওয়ালিয়ার রহমান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খেলার মাঠটিতে দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারনে এখানে কোন খেলাধুলা হয় না। এটা নিজের কাছেও খারাপ লাগে।

কলেজটির দাতা সদস্য আলহাজ¦ মাহাবুবার রহমান জানান, স্নাতক পর্যায়ের দিক দিয়ে এ কলেজটি দেশের দক্ষিাণাঞ্চালের মধ্যে অন্যতম। ৬ একর জমির ওপর ১৯৬৬ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি কালীগঞ্জের মানুষের সম্পদ। কিন্ত বিগত সরকারের আমলের দীর্ঘ অবহেলায় কলেজটি সকল দিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে। কলেজটির ভিতরে ঢুকলে মনে হয় এ যেন পরিত্যক্ত এক জঙ্গলখানা।

এ ব্যাপারে সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর চিন্ময় বাড়ৈ জানান, তিনি কিছুদিন আগে কলেজটিতে যোগদান করেছেন। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ত মাঠ ও ক্যাম্পাসে সব সময় পানি জমে থাকে। তিনি বলেন এটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। পানি নিষ্কাশনের জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com