শিরোনাম :
মিরপুরে বিএনপি প্রার্থী সানজিদা ইসলাম তুলি’র নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত কাশিমপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নির্বাচনী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। অপ-সাংবাদিকতার দাপটে লাঞ্ছিত হচ্ছে মূলধারার সাংবাদিকতা প্রাথমিক শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি মাদারগঞ্জের ২০১টি বিদ্যালয়ে ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ নওগাঁর ধামইরহাটে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ লালমোহন উপজেলায় দুর্নীতি প্রতিরোধে নতুন কমিটি গঠন। খালেদা জিয়া ক্ষমতার চেয়ে গণতন্ত্রকেই বড় করে দেখেছেন: আমিনুল হক বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আদাবরে যুবদলের মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত দুর্গাপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিদায় সংবর্ধনা দিলো দুর্গাপুর প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমাজ সুনামগঞ্জে নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব নিলেন আবু বসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোড্ডায় মাদকবিরোধী অভিযান: গাঁজাসহ নারী গ্রেফতার আখাউড়া সড়ক বাজারে মান্না মাংসের নতুন দোকানের উদ্বোধন: কমদামে বিক্রি শুরুতেই আলোচনায় ২৪ বছরের তরুণ উদ্যোক্তা দিনাজপুর সদর-৩ আসনে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির দোয়া কামনা করা হয়। ঘোড়াঘাটে বেটারিচালিত ইজি বাইক ও মিসুকি সুমুতির আইজনে এসুমায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করা হয়। ঝিনাইদহে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের কর্মবিরতি রাজশাহী পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে যোগদান, কমিশনারের নজরে শহরের প্রধান সমস্যা গণমাধ্যম কর্মীর সাথে মতবিনিময় সভা কাশিমপুরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত। দক্ষিণ এশিয়ায় গ্লোবাল লিডার ইন এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট অ্যান্ড ব্যাংকিং ম্যানেজমেন্ট” সম্মাননায় ভূষিত হলেন এ এইচ এম মওদুদ এলাহী গোমস্তাপুরে আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। শিবগঞ্জে ৩ টি বিদেশি শুটারগান জব্দ

হাসিনা প্রত্যর্পণে ভারত কি বাধ্য? আইন, ভূ-রাজনীতি ও মানবাধিকার বিশ্লেষণ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৩৫ বার পঠিত

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায় ঘোষণার পর তাঁর প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন এক অনিশ্চয়তার মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক চিঠি, ভারতের সতর্ক প্রতিক্রিয়া এবং দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের মত- সব মিলিয়ে প্রশ্নটি এখন আঞ্চলিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু: ভারত কি আইনি বা নৈতিক দিক থেকে হাসিনাকে প্রত্যর্পণে বাধ্য?

এই প্রশ্নের উত্তর সরল নয়। কারণ এর মধ্যে রয়েছে- দ্বিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, দেশীয় বিচারব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা, এবং আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির কঠিন বাস্তবতা।

🔹 চুক্তি আছে, কিন্তু বাধ্যবাধকতা নেই
২০১৩ সালের ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তি এবং ২০১৬ সালের সংশোধন উভয় দেশকে একে অপরের অপরাধী নাগরিককে ফেরত পাঠানোর সুযোগ দিলেও, চুক্তিটি ভারতকে বাধ্য করে না। কারণ-

১) রাজনৈতিক চরিত্রের অভিযোগ প্রত্যর্পণযোগ্য নয়
চুক্তিতে স্পষ্ট বলা রয়েছে, অভিযোগ যদি রাজনৈতিক চরিত্রের হয়, তাহলে প্রত্যর্পণ করা যাবে না। হাসিনার অভিযোগগুলি- হত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, দমনপীড়ন- আইনগতভাবে “অরাজনৈতিক” ক্যাটাগরিতে ফেললেও, মামলার উদ্দেশ্য যদি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়, ভারত সেই যুক্তিকেই আশ্রয় দিতে পারে।

২) বিচার প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকলে প্রত্যর্পণ নয়
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধারা-
যদি বিচার প্রক্রিয়ার নেপথ্যে সৎ উদ্দেশ্য না থাকে, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করতে পারবে। বাংলাদেশে সরকারের পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত- এমন যুক্তি ইতিমধ্যেই শোনা যাচ্ছে।

৩) প্রাণহানির আশঙ্কা থাকলে প্রত্যর্পণ অসম্ভব
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, অভিযুক্তের প্রাণসংকট থাকলে তাকে ফেরত পাঠানো যাবে না। ফাঁসির রায়ের প্রেক্ষিতে এ যুক্তি শক্তিশালী। ভারত সহজেই বলতে পারে- হাসিনাকে ফেরালে তাঁর মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সম্ভাবনা আছে।

🔹 আইন ও আদালতের বাস্তবতা
ভারতের আদালতে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া সাধারণত দীর্ঘ এবং বিচারাধীন ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের যথেষ্ট সুযোগ দেয়। কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীদের মতে-
* হাসিনা সুপ্রিম কোর্টে রায় চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন,
* দেশ ছেড়ে থাকায় সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে তা মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।

এ যুক্তিতেও ভারত প্রত্যর্পণের আগে প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখার সময় চাইতে পারে।

🔹 রাজনীতি ও কূটনীতির অদৃশ্য হিসাব: আইনের বাইরে আছে আরও কঠিন বাস্তবতা ভূ-রাজনীতি।

১) হাসিনা ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র
গত দেড় দশক ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের স্থিতির অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন হাসিনা। সীমান্ত নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, বাণিজ্য- সব ক্ষেত্রে তিনি দিল্লির ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তাকে ফেরত পাঠানো রাজনৈতিক সংকেত হিসেবে ভারতের জন্য অস্বস্তিকরও হতে পারে।

২) অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা প্রশ্নের মুখে
ভারত কূটনৈতিক চিঠির “বৈধতা যাচাই” করছে- যা একধরনের বার্তা: এই সরকারের রাজনৈতিক অবস্থান বা স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন আছে।

৩) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার প্রভাব
বাংলাদেশে যে পরিস্থিতিতে হাসিনার পতন ও বিচার হয়েছে, সেটি ভারতকে আরও সতর্ক করছে। ভারত উদ্বেগ দেখাচ্ছে- প্রত্যর্পণ যেন কোনো পক্ষকেই সুবিধা বা অসুবিধা না দেয়, বরং স্থিতিশীলতার পথে কাজ করে।

🔹 তবে ভারত কি চিরতরে অস্বীকার করবে?
অবশ্যই নয়। ভারত “বিচার বিভাগীয় প্রক্রিয়া” ও “দু’দেশের আলোচনা”র কথা বলছে। অর্থাৎ, দরজা পুরোপুরি বন্ধ নয়। তবে তাৎক্ষণিক প্রত্যর্পণ হওয়ার সম্ভাবনা কম- এটাই বাস্তব।

🔹 সম্ভাব্য তিনটি পথ
১) দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া- বছরের পর বছর টানা শুনানি ও আপিল।
২) কূটনৈতিক আলোচনায় শর্তসাপেক্ষ প্রত্যর্পণ- যেমন মৃত্যু দণ্ড না দেওয়ার গ্যারান্টি।
৩) আশ্রয় বা দীর্ঘমেয়াদি নিরাপদ অবস্থান- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির ভিত্তিতে।

🔹 শেষ কথা: আইন বলছে, ভারত বাধ্য নয়
ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তি যতই কঠোর হোক, তাকে অতিক্রম করে আছে মানবাধিকার আইন, বিচারের উদ্দেশ্যের প্রশ্ন এবং কূটনৈতিক বাস্তবতা। তাই বলা যায়- ভারত এখনই হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে বাধ্য নয়, এবং নিকট ভবিষ্যতে তা করবে- এরও কোনো নিশ্চিত ইঙ্গিত নেই।

এ ঘটনা কেবল একটি ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নয়; দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং আইন–কূটনীতির সূক্ষ্ম ভারসাম্যেরও এক পরীক্ষা।

লায়ন ড. এ জেড এম মাইনুল ইসলাম পলাশ
লেখক সাংবাদিক কলামিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com