মেরাজে মহান আল্লাহ তাঁর সবচেয়ে প্রিয় (রাসুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে, নিজ সান্নিধ্যে ডেকে নিয়ে উম্মতে মুহাম্মদিকে পুরস্কারস্বরূপ কয়েকটি বস্তু প্রদান করেন) ১/পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফজিলতের দিক দিয়ে ৫০ ওয়াক্ত নামাজের সমান। ২/সুরা বাকারার শেষের দুটি আয়াত মেরাজেই অবতীর্ণ হয়। এ আয়াতগুলোতে উম্মতে মুহাম্মদির প্রতি আল্লাহর অশেষ রহমত ও অনুগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। ৩/তিন. উম্মতে মুহাম্মদির মধ্যে যারা কখনো শিরক করেনি, তাদের ক্ষমা করার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে মেরাজে। ৪/নামাজে যে ‘আত্তাহিয়্যাতু’ পড়া হয়, সেটিও মেরাজের উপহার।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মেরাজ থেকে ফিরে আসার পর সুরা বনি ইসরাইলের মাধ্যমে ১৪টি দফা মানুষের সামনে পেশ করেন। বর্তমান সময়ে ক্ষয়ে যাওয়া সমাজ সংস্কারে এই ১৪ দফা বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
১/আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা যাবে না।
২/মা-বাবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন মা-বাবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো। তাঁদের একজন বা উভয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় যদি তোমাদের সামনে উপনীত হয়, তাহলে তাঁদের সঙ্গে উহ্ শব্দটি পর্যন্ত করো না। তাঁদের ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না। বরং তাঁদের সঙ্গে মর্যাদাসূচক কথা বলো। তাদের সামনে বিনয়ী থেকো আর দোয়া করতে থাকো—‘হে আমার প্রতিপালক, তাঁদের প্রতি তেমনি দয়া করো, যেমনি তাঁরা শৈশবে আমাদের লালন-পালন করেছেন। (সুরা:- বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৩-২৪)
৩/নিজ কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।
৪/আত্মীয়স্বজনকে তাদের অধিকার দিয়ে দিতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আত্মীয়স্বজনকে তাদের অধিকার দাও। আর মুসাফিরদের হক আদায় করো। (সুরা:- বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৬)
৫/অপব্যয় করা যাবে না।
৬/মানুষের অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হলে বিনয়ের সঙ্গে তা প্রকাশ করতে হবে। ছলচাতুরী ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া যাবে না।
৭/ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেহিসাবি হওয়া যাবে না। আবার কৃপণতাও প্রদর্শন করো না।
৮/সন্তানদের হত্যা করা যাবে না। এটি মহাপাপ।
৯জেনা-ব্যভিচারের কাছেও যাওয়া যাবে না। কেননা এটি নিকৃষ্ট ও গর্হিত কাজ।
১০/কোনো প্রাণী অন্যায়ভাবে হত্যা করা যাবে না। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীকে এই অধিকার দেওয়া হয়েছে যে সে চাইলে রক্তের বিনিময় চাইতে পারে। তবে প্রতিশোধের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা যাবে না।
১১/এতিমের সম্পদের ধারেকাছেও যাবে না।
১২/ওজনে কম দিয়ে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। দাঁড়িপাল্লা সোজা করে ধরতে হবে।
১৩/যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, সে বিষয়ে মতামত দেওয়া অন্যায়। চোখ, কান, অন্তর সব কিছুই কিন্তু একদিন জিজ্ঞাসিত হবে।
১৪/জমিনে দম্ভসহকারে চলা যাবে না। এগুলো সবই মন্দ ও ঘৃণিত কাজ। এই ১৪ দফাই মেরাজের প্রকৃত শিক্ষা।
পরম দয়ালু মেহেরবান মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক আমল করার তাওফিক দান করুন, আমিন।
Leave a Reply