শিরোনাম :
অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের এক হাজার শয্যার হাসপাতাল দারোয়ানী টেক্সটাইল মাঠে ২৫ একর জায়গার উপর নির্মিত হচ্ছে এই হাসপাতাল রাঙ্গাবালীতে লাইসেন্সবিহীন ৩৮ টির বেশি করাতকল( স্ব-মিল)বন বিভাগ নিরব ভুমিকায়। ট্রেনের টিকিটসহ ৩ জন কালোবাজারী গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৪/কেজি গাঁজা উদ্ধার। নীলফামারী – ২ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী সাইফুল্লাহ রুবেল ঢাকা-১৪, ১৫ ও ১৬ আসনে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থীদের প্রতি এলাকাবাসীর শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন গলাচিপা-দশমিনায় হাসান মামুন এর নাম প্রার্থী তালিকায় না থাকায় ক্ষোভের ঝড় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁওবাসীর ভালোবাসায় ধানের শীষ প্রতীক পেলেন আজহারুল ইসলাম মান্নান

গ্রেপ্তারের পর আসামির বাড়িতে মানবিক পুলিশের খাদ্য সহায়তা প্রদান

নাসির উদ্দিন, ব্যুরো প্রধান, পিরোজপুরঃ
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১
  • ৩৮১ বার পঠিত

মরিয়ম বেগম। বয়স ৩৮ বছর। একজন অসহায় গৃহবধূর নাম। এতো অসহায় না দেখলে কেউ বুঝতেই পারবেনা। তিনি ৩ সন্তানের জননী। এই দরিদ্র মায়ের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার পশ্চিম সেনের টিকিকাটা গ্রামে। স্বামী জাকির হোসেন ওরফে সুতা জাকিরের কারণে আজ তিনি নিঃস্ব।

ব্যবসার জন্য স্ত্রীকে জামিনদার করে মঠবাড়িয়া ব্রাক ব্যাংক থেকে জাকির হোসেন ২০ লাখ টাকা ঋণ নেয়। একে একে এই উপজেলার বিভিন্ন এনজিও থেকে আরও ৩০ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন সুচতুর জাকির। গোপনে বিক্রি করে দেয় সব জমিজমা।

পরে ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে মঠবাড়িয়া থেকে পালিয়ে যায়। পরে জাকির ও তার প্রথম স্ত্রী মরিয়মের বিরুদ্ধে পিরোজপুর অর্থ ঋণ আদালতে এনজিওর পক্ষ থেকে মামলা রুজু করা হয়। মামলা নং-০৩/১৭।

সেই সময়ে মরিয়ম বেগম মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে সাজানো সংসার ছেড়ে ৩ জন সন্তান নিয়ে নানা বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে থেকে অন্য মানুষের ঘরে ঘরে ঝিয়ের কাজ করে ও কাঁথা সেলাই করে সংসার চালাতে থাকেন। এ কাজে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা মরিয়ম বেগমের।

তিনিসহ বড় মেয়ে শারমিন আক্তার (১৮), ছেলে রুম্মান (১১) ও ছোট মেয়ে জান্নাতি আক্তার সংসারের এ অবস্থায় কোনমতে বেঁচে আছেন। বেশির ভাগ দিনই মা এবং বড় মেয়ে ক্ষুধা নেই বলে ঘরে যে খাবার থাকে তা রুম্মান ও জান্নাতিকে খাইয়ে দিয়ে তারা দু’জন অনাহারে থাকেন।

এদিকে ওই মামলায় আদালত থেকে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয় স্বামী-স্ত্রীর নামে। স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। মরিয়ম বেগম আছেন এলাকাতেই। সোমবার (৩০ আগস্ট) মঠবাড়িয়া থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জেন্নাত আলী, উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও লাবনী আক্তার ওয়ারেন্টের আসামি মরিয়ম বেগমের বাড়িতে যান।

তার বাড়িতে তাকে পেয়ে যান পুলিশের ওই টিম। তবে মরিয়ম বেগমের সংসারের অবস্থা দেখে মনের মানবিকতার ভিতরটায় নাড়া দেয় এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদের। মরিয়ম বেগমকে থানায় নিয়ে যাবার সময় তার সন্তানরা যখন কান্নারত অবস্থায় বলতে ছিলো ‘আমরা এখন থাকবো কিভাবে, খাবো কি, ঘরেতো কিছুই নেই। আমাদের মাকে ছেড়ে দেন। মা কিছু করে নাই।’

এই কথাগুলো তখন এএসআই জাহিদের কানে বিষাদের সুরের মতো বাজতে ছিলো। কি আর করার ওয়ারেন্টের আসামি। আদালতের আদেশ তামিল করতেই হবে।

থানায় মরিয়ম বেগমকে রেখে মঠবাড়িয়া বাজার থেকে ওই পরিবারের জন্য এক মাসের চাল, ডাল, তেল, আলু, লবন, সাবান, পেয়াজ, মরিচ, হলুদ, চিনি, চাসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা নিয়ে হাজির হন এএসআই জাহিদ।

এ বিষয়ে তিনি আলোকিত মঠবাড়িয়াকে জানান, মরিয়ম বেগমের সংসারের যে অবস্থা। তার অবর্তমানে এই সংসারের আহার জোগার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই যতদিন মরিয়ম বেগম জেল হাজতে থাকবেন, ততদিন তার রেশন দিয়ে এই পরিবারকে তিনি সহায়তা করে যাবেন।

উল্লেখ্য, পুলিশের এই অফিসার এর আগে বরিশালের বানারীপাড়া থানায় কর্মরত থাকার সময়ও বিভিন্ন সামাজিক কাজ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ বাহিনীকে সাধারণ মানুষের কাছে সেবার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে রেখেছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com