শিরোনাম :
বহিষ্কৃত এসআই মাহবুব হাসান ২ দিনের রিমান্ডে ঢাকার উত্তরায় খাল পরিষ্কার অভিযান গলাচিপায় রাস্তার অর্ধসমাপ্ত কাজের জটিলতা: ঠিকাদারের উদাসীনতায় জনদুর্ভোগ চরমে দৃষ্টিনন্দন রূপে গড়ে উঠেছে গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চত্বর গলাচিপায় আদালত ভবন থাকলেও দেওয়ানী মামলা চলছে পটুয়াখালীতে 🎉 শুভ জন্মদিন 🎉 গলাচিপায় ইয়াবাসহ পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী আটক ক্রীড়াঙ্গনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আমিনুল হকের বিএনপি সরকার গঠন করলে ক্লাস ফোর থেকে খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করা হবে সংবাদ প্রকাশের জেরে রাজশাহীতে ৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা মাদারীপুরে এনসিপি নেতার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, সোশ্যাল মিডিয়া নিন্দার ঝড়

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আসামির জুতার ভেতরে মিলল ১৮ পিস ইয়াবা।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৮৩১ বার পঠিত

সিলেট জেলা ব্যারো প্রধানঃ- সিলেটের কেন্দ্রীয় কারাগারে মাদক পাচারের নতুন রুট ‘আদালত চত্বরের লকাপ’। সেখান থেকে এক হাজতির জুতা থেকে কারাগারে ইয়াবা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চলছে তোলপাড়। হাজতির কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় এসএমপি’র জালালাবাদ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

কারা সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাব্বির খান (২৯) নামের এক হাজতিকে গত বুধবার মামলার হাজিরার জন্যে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিলেট আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। আদালতে হাজিরা শেষে ওই দিন সন্ধ্যায় হাজতি শাব্বির খানসহ অন্য হাজতিদেরকে কড়া পুলিশ প্রহরায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ ভ্যান থেকে হাজতিদেরকে নামিয়ে জেল গেটে তল্লাশি করে কারা অভ্যন্তরে ঢোকাচ্ছিলেন কারা রক্ষীরা। এসময় তল্লাশিকালে হাজতি শাব্বির খানের জুতার মধ্যে মোজার ভেতর থেকে ১৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে কারারক্ষীরা। কারাগারে যাওয়ার সময় হাজতির কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় কারাগারে শুরু হয় তোলপাড়।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে নগর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হয় বলে কারা সূত্র জানায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিলেট আদালতের সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার নিকট লিখিতভাবে জানান।
এরপর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মো. মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে হাজতি শাব্বির খানকে আসামী করে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এসএমপি’র জালালাবাদ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।জালালাবাদ থানার মামলা নম্বর -২০। আসামি শাব্বির খান সিলেট নগরীর আখালিয়া নতুন বাজারের খলিল খানের পুত্র।
জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক মাহবুব মন্ডলকে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জালালাবাদ থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান এই তথ্য জানিয়ে বলেন, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে হাজতি শাব্বির খানের হাতে ইয়াবা তুলে দেয়া ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। শাব্বির খানের মাধ্যমে চক্রটি কারাগারের অভ্যন্তরে ইয়াবা পৌঁছানোর কাজ করছিল।
সূত্র জানায়, ইয়াবা বহনকারী শাব্বির খানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অপরাধে অন্তত: ৬ টি মামলা রয়েছে। পুলিশের খাতায় সে একজন চিহ্নিত অপরাধী বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, কারাগার থেকে কড়া পুলিশ প্রহরায় তালাবদ্ধ ভ্যানে করে হাজতিদেরকে সিলেট আদালতের নির্ধারিত হাজতখানা বা লকাপে নিয়ে আসা হয়। আসামিদেরকে নিয়ে আসা ও নিয়ে যাওয়ার সময় ভ্যানে সার্বক্ষণিক পুলিশ নিরাপত্তা থাকে । আদালতে নিয়ে আসার পর হাজতখানা বা লকাপে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সামনাসামনি দেখা সাক্ষাৎ ও কথা বলার সুযোগ মিলে।
হাজতখানা বা লকাপের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরকে ‘ম্যানেজ’ করে অনেক হাজতি হাজতখানায় বসেই দিব্যি মোবাইল ফোনেও কথা বলেন। আদালতে হাজিরার পরও কারাগারে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত হাজতিরা নানা অবৈধ কার্যক্রমে লিপ্ত হন। নগদ অর্থের বিনিময়ে হাজতখানা বা লকাপে চলে এমন বেআইনি কার্যক্রম।
হাজতি শাব্বির খানের কাছে হাজতখানার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কিভাবে ইয়াবা এল এমন প্রশ্ন সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। এর সাথে হাজতখানা বা লকাপে দায়িত্বরত কেউ সম্পৃক্ত কি না তা খতিয়ে দেখতেও প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল । সিলেট আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এ.টি.এস.আই গোপী দেবনাথ হাজতির কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা শুনেননি বলে দাবী করেন।
গতরাতে তিনি জানান, এ রকম ঘটনা শুনিনি, কেউ বলেনি। সিলেট নগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) খোকন চন্দ্র সরকার জানান, গত বুধবার আদালত থেকে ৫২ জন আসামিকে কারা কর্তৃপক্ষের নিকট সমঝে আসে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।বুধবার এই বিষয়টি কেউ আমাদেরকে জানায়নি।
বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে সিলেট কারাগার থেকে একটি চিঠি দিয়ে হাজতি শাব্বির খানের কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধারের বিষয়টি আমাদেরকে জানানো হয়েছে। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তদন্তে বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় হাজতিদেরকে তল্লাশি করে কারা অভ্যন্তরে ঢোকানোর সময় হাজতি শাব্বির খানের জুতার ভেতর থেকে ১৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে পত্র দিয়ে জানানো হয়।
হাজতখানা থেকে ইয়াবাসহ আসামিকে পাওয়া নিঃসন্দেহে একটি পরিকল্পিত ঘটনা। কৌশলে জেলের ভেতরে ইয়াবা পৌঁছানোর জন্য এটি করা হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে। এজন্যে কারা কর্তৃপক্ষ তল্লাশী ও নিরাপত্তা আরো জোরদার করেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার নিশারুল আরিফ জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ আসামিকে জেলে নিয়ে গেছে। জেল গেটে তার কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের বিষয়। তদন্ত করে আসামির কাছে কিভাবে, কার মাধ্যমে, কখন ইয়াবা গেল তা বের করা হবে। এর পেছনে কোনো চক্র আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানান নগর পুলিশ কমিশনার।

সুত্র: সিলেটের ডাক

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com