পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপির দুই গ্রুপ পৃথকভাবে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। বুধবার ২০ আগস্ট সকাল ১০টায় পৌর শহরে দুটি স্থানে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
একটি পক্ষ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসান মামুনের অনুসারীরা পৌর মঞ্চে অনুষ্ঠান পালন করেন। অপরদিকে বিএনপির পটুয়াখালী জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও গলাচিপা-দশমিনা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আলহাজ্ব মো. শাহজাহান খানের পুত্র মো. শিপলু খান অনুসারীরা উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে পৃথক কর্মসূচি পালন করেন।
পৌর মঞ্চের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমানের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি বিশেষ কারনে উপস্থিত হতে পারননি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার হাওলাদার তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সংগঠনটি সবসময় বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে এবং ভবিষ্যতেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে রাজপথে অটল থাকবে। দলকে শক্তিশালী করতে হলে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. এনায়েত হোসেন মোহন। তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দল তৃণমূল কর্মীদের শক্তির প্রতীক। আগামীতেও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনে যে কোনো আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. রেজাউল করিম এবং মো. আইয়ুব হোসেন শান্ত, গলাচিপা পৌর কমিটির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান সাধারন সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন খান এবং জেলা ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দসহ উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. শাকিল হোসেন।
অপরদিকে শিপলু খান অনুসারীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. সোহরাব মিয়া, বিএনপি নেতা মো. নেসার রাড়ি, আবদুস সোবহান মিয়া, সাবেক কাউন্সিলর মো. রফিকুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন সিকদার এবং উপজেলা ও পৌর বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মী। তারা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় দলের ঐক্য ও তৃণমূল সংগঠনকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
হাসান মামুন অনুসারীদের পক্ষ থেকে জেলা ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, শিপলু খান অনুসারীরা কার অনুমতি নিয়ে পৃথক কর্মসূচি পালন করেছেন তা স্পষ্ট নয়। তারা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন নেতারা।
উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে সকাল থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় এবং অনুষ্ঠানস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। যেকোনো ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বক্ষণ সতর্ক ছিল। ফলে দুটি অনুষ্ঠানই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।
আলোচনা সভা শেষে হাসান মামুন অনুসারীরা পৌর শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে এবং শিপলু খান অনুসারীরাও উপজেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে পৃথক র্যালি বের করেন। উভয় পক্ষই স্বেচ্ছাসেবক দলের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে ঐক্যের আহ্বান জানান।
Leave a Reply