শিরোনাম :
জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক পদে পদোন্নতি পেলেন মোজাম্মেল হোসেন বাবু ধামরাইয়ে বিজ্ঞান মেলা নীলফামারী সদরে বিসমিল্লাহ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে সাড়ে ৬২ লাখ টাকার কো*কেন ও হি*রোইন জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৫৬ বিজিবি) নীলফামারী। রাজশাহীতে হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা কোটচাঁদপুরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় জনগণের রোষানলে সাব রেজিস্ট্রার ঝিনাইদহে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের মৃত্যু Daily Detectivenews কেরানিগজ্ঞের বিপুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ গোদাগাড়ীতে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার মিরপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শাহজাদপুরে মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের কাছে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদা দাবির অভিযোগ

তালতলীতে ভূয়া প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীর নামে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন!

সাইফুল্লাহ নাসির,আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১
  • ৬৪২ বার পঠিত

বরগুনার তালতলীতে ভূয়া প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী সাজিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের পিয়নের স্বামী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ছাতনপাড়া হাসপাতাল সড়কের বাসিন্ধা আমির আকনে স্ত্রী ফুলজাহান বেগম তালতলী সমাজসেবা অফিসে পিয়নের চাকুরী করেন। অফিস থেকে বাড়ী কাছাকাছি হওয়ায় ওই অফিসে স্ত্রীর বদলি ডিউটি করেন স্বামী আমির আকন। এ সুযোগে তিনি সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের ভূয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতিবন্ধিদের দেয়া উপবৃত্তির টাকা উঠিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। যে সকল ভূয়া শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ও তাদের স্বাক্ষর দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে সেই সকল শিক্ষার্থীদের হাতে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন।

ছাতনপাড়া হাসপাতাল সড়কের বাসিন্ধা সিদ্দিকুর রহমানের কন্যা স্কুল শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার বলেন, তার নাম নুরুন্নাহার কিন্তু শিপ্রা রানী নামে প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির ২৯০০ টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন। ওই টাকা থেকে তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা আমির আকন রেখে দিয়েছেন।

আমির আকন একই এলাকার জলিলের কন্যা জুই আক্তারের স্বাক্ষরে মারুফা নামে এক প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির ২২৫০ টাকা উত্তোলন করেন। ওই টাকা থেকে তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বাকী টাকা আমির আকন রেখে দিয়েছে।

আমির আকনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন, ওই এলাকার মিজানুর রহমানের কন্যা ঈশা মনি, জিয়া উদ্দিনের পুত্র সাইফুল ইসলাম। তারা জানায়, তালিকার বিভিন্ন প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীর নামের সামনে তাদের স্বাক্ষর রেখে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করা হয়। ওই টাকা থেকে তাদের একেক জনকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে দিয়ে বাকী সমূদয় টাকা আমির আকন আত্মসাৎ করেছেন ।

একাধিক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে এসব অনিয়ম দূর্নীতি করে বেড়াচ্ছে ওই অফিসের পিয়নের স্বামী আমির আকন। এ ছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাভোগীদের ভূয়া নামে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা বলেন, আমির আকন উপজেলার বিভিন্ন স্থানের প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের নামের তালিকায় বরাদ্দকৃত উপবৃত্তির টাকা তার বাড়ীর আশেপাশের শিক্ষার্থীদের এনে উত্তোলণ করে তা আত্মসাৎ করছেন। এছাড়া নামে-বেনামে তালিকা করে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার টাকা ভূয়া ব্যক্তিদের নামে উত্তোলন করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন।

অপর একটি বিশ্বস্থ্য সূত্রে জানা যায়, সরকারি চাকুরির নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই তালতলী সমাজসেবা অফিসে স্ত্রী ফুলজাহান বেগমের চাকরি বদলি হিসেবে স্বামী আমির আকন নিজেই করছেন। তার স্ত্রী অফিস না করে বাড়িতে বসে গৃহিণীর কাজ করেন। এছাড়া ও তার ছোট পুত্র বায়জিদ ওই অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকুরী করতেন। অনিয়মের অভিযোগে তাকে ওই উপজেলা থেকে বেশ কয়েকটি উপজেলায় শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি আমতলী উপজেলা সমাজসেবা অফিসে কর্মরত আছেন। তার বড় পুত্র মিলন ঢাকা সমাজসেবা অফিসের ড্রাইভার পদে কর্মরত আছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সম্প্রতি তার মেয়েরও সমাজসেবা অফিসে চাকুরী হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। মা ও দুই পুত্রসহ একই পরিবারের তিন জন সমাজসেবা অফিসে চাকুরি করার সুবাদে তারা সমাজসেবা কার্যালয়টি অনিয়মের আখড়ায় পরিনত করে লুটেপুটে খাচ্ছে। ভূক্তভোগীরা কোথাও গিয়ে এর কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমির আকন এবং স্ত্রীর সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তারা তাদের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেণ। তবে স্বামী আমির আকন মাঝে মধ্যে তার স্ত্রীর বদলি চাকুরী করেন বলে স্বীকার করে জানায়, অনেক আগের প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা ছিল সেই টাকা আমি শিক্ষার্থীদেরকে উঠিয়ে দিয়েছি।

তালতলী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল আলম এ অভিযোগ সম্পর্কে জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৭১৬১০৫৮৭৭) একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিফ করেনি।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কায়সার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, তদন্ত পূর্বক ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com