শিরোনাম :
ফরিদগঞ্জে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ ও পথসভা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) একটি কারখানায় দুপুরে লাগা আগুন রাত ১০টার দিকেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ যুবক আটক ফরিদগঞ্জে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী হুমায়ুন কবির বেপারীর পক্ষে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ। ঢাকা-১৫ আসনে শফিকুল ইসলাম মিল্টনের বিশাল শোডাউন “শ্রেষ্ঠ গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলকারী অফিসার এসআই জিয়াউর রহমান…. নীরব নায়ককে সম্মাননা দিলেন পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান পিপিএম” গলাচিপায় শিক্ষার্থীদের পাশে জেলা প্রশাসক ড. শহীদ হোসেন চৌধুরী গলাচিপায় জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা গাজীপুরে ৩৬ বছর বয়সে এইচএসসি পাশ করলেন ইউপি সদস্য হাফেজ শামীম মৃধা। যশোর শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পাসের হার একেবারে নিচের দিকে নেমে এসেছে: পাসের হার ৫০,২০ শতাংশ

তুলে আনছেন দুর্নীতি, নিপীড়ন, অবিচার কিংবা অনিয়মের খবর।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৬০ বার পঠিত

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, সোশ্যাল মিডিয়া এবং স্বাধীন অনলাইন পোর্টালগুলো হয়ে উঠছে বিকল্প কণ্ঠস্বরের মাধ্যম। তবে সেখানেও চোখ রাঙানো সেন্সরশিপ অপেক্ষা করে। বিশেষ করে অনুসন্ধানী ও ডেটা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে চরম ঝুঁকি ও আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় আইন, রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক চাপ এবং প্রভাবশালীদের রোষানল — সব মিলিয়ে সাংবাদিকদের কাজ যেন প্রতিনিয়ত স্রোতের বিপরীতে চলার মতো। বর্তমানে বাংলাদেশে সাংবাদিক ও সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণে কমপক্ষে ২০টির বেশি আইন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: আদালত অবমাননা আইন, ১৯২৬,বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪,প্রেস কাউন্সিল আইন,১৯৭৪,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধনী ২০১৩),
বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি,কপিরাইট আইন, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩,তথ্য অধিকার আইন, ২০১১,নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, শ্রম আইন, ভোক্তা অধিকার আইনসহ আরও অনেক আইন।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এসব আইনের বেশিরভাগই সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় নয়,বরং দমন ও নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর বিপরীতে সাংবাদিকদের সুরক্ষা বিধানের জন্য কার্যকর কোনো আইন নেই। আইনগত কাঠামোতে সবচেয়ে বেশি ভয়ভীতির উৎস
হচ্ছে আদালত অবমাননা আইন ও মানহানি আইন। আদালত অবমাননার কোনো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই; বিচারকের বিবেচনাতেই নির্ধারিত হয় কোন মন্তব্য অবমাননাকর হবে। অন্যদিকে, মানহানি আইন ফৌজদারি ও দেওয়ানি দুইভাবেই প্রযোজ্য। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্বরা সাংবাদিকদের দমনে এই আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবাদ লিপি পাঠানোর আগেই
মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের নজির রয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, বেশিরভাগ আইনই উনিশ শতক কিংবা পাকিস্তান আমলের। এসব আইন আধুনিক সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও
গতিশীলতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তবুও এগুলো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে
প্রয়োগ হচ্ছে। উপরন্তু, সাংবাদিকদের হয়রানি করতে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা
মিথ্যা মামলা — যেমন জুলাই গণহত্যা,চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ
ইত্যাদিতেও জড়িয়ে ফেলছে। যে কারনে সাংবাদিকতা এখন হুমকীতে পড়েছে। এ পেশায় ঢুকে পড়েছে এক শ্রেনীর অশিক্ষিত পেশাদার অপরাধী ও রাজনৈতিক ব্যাক্তি বর্গ। দেশের অধিকাংশ সাংবাদিক সংগঠন গুলির দিকে তাকালে দেখাযাবে,প্রতিটি
সংগঠনের প্রদানরা রয়েছেন কোন না কোন রাজনৈতিক মতআদর্শের। অনেক যায় গায় নিয়ন্ত্রন করছে রাজনৈতি ব্যাক্তি বর্গরা। তাহরে আপনারা বলুন কি ভাবে দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে? আর দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠিত হতে না পারলে কখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা কম নয়, সাংবাদিকের সংখ্যাও বিপুল, সংগঠন ও রয়েছে বহু। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে সাংবাদিক সমাজে বিভক্তি প্রকট, যা আমাদের সবচেয়ে দুর্বল করে তুলেছে। পেশাগত দাবি আদায়, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ কিংবা আইনের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তুলতে না পারার কারণেই সাংবাদিক নিগ্রহের হার বাড়ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে
আশঙ্কা করা যায় — সাংবাদিকদের ওপর চাপ আরও বাড়বে, বাক-স্বাধীনতা আরও সংকুচিত হবে। প্রশাসন, রাজনীতি ও ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে আরও বেশি
সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইনের অপব্যবহার হতে পারে। সকলে জানে সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়, এটি একটি দায়িত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সেবা। তাই সাংবাদিকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার রক্ষায় সাংবাদিক সমাজ, সুশীল সমাজ, এবং সাধারণ নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক হয়রানি, গ্রেপ্তার ও মামলা শুধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, এটি সত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধে যদি আমরা একে অপরকে একা রেখে দিই,
তাহলে একদিন আমরা কেউ-ই সত্য প্রকাশের সাহস করবো না। সাংবাদিকতা যদি হয় গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ, তবে সেই স্তম্ভ আজ দুর্বল, চিড়ধরা, আর কখনো কখনো জব্দ। সত্যকে বন্দি রাখার জন্য যত রকম অস্ত্র ব্যবহৃত হয়—হুমকি, হয়রানি, মামলা, নিয়ন্ত্রণ—তা আজ নিত্য বাস্তবতা। তবু প্রতিদিন কেউ না কেউ সাহস করে প্রশ্ন তোলে। কারণ এখনো কিছু মানুষ আছেন, যারা বিশ্বাস করেন: সত্য বলার চেয়ে বড় দায়িত্ব, আর কোনো পেশায় নেই।
লেখক:
আওরঙ্গজেব কামাল
সভাপতি, ঢাকা প্রেস ক্লাব
লেখক ও গবেষক

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com